বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) ৬ষ্ঠ সমাবর্তন সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার শের-ই-বাংলা নগরের বিসিএফসিসিতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে সভাপতিত্ব এবং গ্র্যাজুয়েটদের ডিগ্রি প্রদান করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.

এস এম এ ফায়েজ। 

সমাবর্তনে বিইউবিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম শওকত আলী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজ আপনারা যে সফলতা অর্জন করেছেন, এতে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং অভিভাবকদের অবদানও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। স্মরণ রাখবেন, সাফল্য একদিনে আসে না, এটি অনেক বছরের পরিশ্রম এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করার মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়। আমি বিশ্বাস করি, যেখানেই যান, নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলা, সততা এবং মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখবেন।’ 

অতিথিদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিইউবিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. শামসুল হুদা। তিনি গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা দেশের ভবিষ্যৎ। আমি দৃঢ়বিশ্বাসী, আজ যারা ডিগ্রি পাচ্ছেন, তাঁরা সমাজের জন্য ভালো কিছু করবেন। মনে রাখবেন, আপনাদের পথচলা শুধু বিইউবিটি’র নয়, বরং সমগ্র জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য।’ 

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা জীবনের এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত কল্যাণেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং এটি পুরো সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে। জীবনে সফলতা পেতে হলে শিক্ষা, কঠোর পরিশ্রম এবং মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন।’

সমাবর্তনে স্নাতকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি প্রদান এবং কৃতী শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এবারের সমাবর্তনে চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেল অর্জন করেন এমবিএ’র ৪৮তম ইনটেকের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান। চেয়ারম্যান, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গোল্ড মেডেল লাভ করেন এমএসসি ইন ইকোনমিকসের ৩৮তম ইনটেকের শিক্ষার্থী লাবিবা ফেরদৌস এবং উপাচার্য গোল্ড মেডেল লাভ করেন বিবিএ’র ৪৫তম ইনটেকের শিক্ষার্থী রাবেয়া আফরিন মীম। 

স্বর্ণপদক ও ক্রেস্ট প্রদান শেষে সমাবর্তনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আজকের এই দিনটি আপনাদের সবার জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। আপনাদের এই অর্জন শুধুমাত্র একাডেমিক সাফল্য নয়, এটি আপনার নিষ্ঠা, পরিশ্রম এবং মানবিক গুণাবলীর ফল। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে আপনি যেখানে থাকবেন, সেখানে আপনি শুধু নিজের উন্নতির দিকে মনোযোগ দেবেন না, বরং আপনার অর্জিত জ্ঞান এবং দক্ষতা ব্যবহার করে সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে অবদান রাখবেন। আপনাদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি দেখিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি, আপনারা দেশের অগ্রগতি ও সাফল্যের জন্য ভবিষ্যতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।’ 

এছাড়া বিইউবিটি ট্রাস্ট বোর্ডের সম্মানিত সদস্য, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ফ্যাকাল্টি মেম্বার, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আপন দ র অন ষ ঠ র জন য আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

মুড়ি ভর্তা বিক্রি করে আয় অর্ধ লাখ টাকা

ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে মাদারীপুরে দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বিভিন্ন মসজিদে ইমামতি করেছেন ক্বারী মুহাম্মদ সুলতান। বিয়ে করার পরে সন্তানের জন্ম এবং এরপর সংসারে নেমে আসে অভাব। পরে গুরুজনের পরামর্শে কুমিল্লা শহরের কোটের মোড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকানে পুরী, সিঙ্গারা, আলুর চপ, বেগুনি, পিঁয়াজু, ছোলা দিয়ে মুড়ি ভর্তা বিক্রি করে চলছে তার সংসার। এতে প্রতিদিন তার বিক্রি হয় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। খরচ বাদে প্রতিমাসে আয় করেন অর্ধ লাখ টাকা।

মাদারীপুর পৌর শহরের পুরাতন কোটের মোড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান করেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা এলাকায় হাফেজ ক্বারী মুহাম্মদ সুলতান। স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার সংসার। লেখাপড়া শেষে ১৯৯০ সালে জীবনের তাগিদে চলে আসেন মাদারীপুরে। সন্তাননেরা বড় হওয়ায় মসজিদ থেকে যতটুকু সম্মানী পেতেন তাতে সংসার চলা বড়ই দুষ্কর। পরে ২০১২ সালে ৩ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ভ্রাম্যমাণ মুড়ির দোকান দেন। পরে সেখানে ভালো বিক্রি হওয়ায় সিঙ্গারা, পিয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি ও মুড়ি ভর্তা বিক্রি শুরু করেন। পর থেকে তার আর তাকে পিছনে তাকাতে হয়নি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে যেখানে প্রত্যেকটা পণ্যের দাম বাড়লেও এখনো তিনি ৫ টাকা হারে এ সকল খাবার বিক্রি করে যাচ্ছেন। এ সকল খাবার বিক্রি করে যে টাকা লাভ হয়, তা দিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। জমানো টাকা দিয়ে হজ্ব করেছেন তিনি ও তার স্ত্রী।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুপুর ৩টা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত তার এই খাবার বিক্রি চলে। এই খাবারের জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ প্রতিনিয়তই ভিড় করে। কেউ রিকশায় বসে, কেউ পাশে দাঁড়িয়ে খান। কেউ আবার বাড়ির জন্য নিয়ে যান প্যাকেটে করে।

স্থানীয়রা জানান, এখানকার যুগে ভেজাল খাদ্যের অভাব নেই। কিন্তু এই হুজুর যা বিক্রি করেন এগুলো ভালো মানের খাবার। তার খাবারে ভেজাল নেই। প্রতিদিনের খাবার প্রতিদিনই শেষ হয়ে যায়। অনেক সুস্বাদু খাবার হয়।

মুড়ি ভর্তা খেতে আসা শরীয়তপুরের রুবেল আহমেদ জানান, তিনি কাজ শেষে মাঝে মাঝেই এই হুজুরের দোকানে মুড়ি ভর্তা খেতে আসেন। তার এই মুড়ি ভর্তা অনেক সুস্বাদু হয়। এ রকম ভালো করে কেউ বানাতে পারে না।

মুড়ি খেতে আসা আসাদ ও সাব্বির জানান, এই হুজুর অনেক সুন্দর মুড়ি বানান। তার পিঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, পুরি সুস্বাদু হয়। 

বিক্রেতা ক্বারী মুহাম্মদ সুলতান জানান, ইমামতি করে যা পেতেন, এতে সংসার চলা দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। কোটের মোড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে পুরি, সিঙ্গারা বিক্রি করে ভালো লাভ হচ্ছে। এ টাকা দিয়ে মেয়েদের হাফেজ এবং ক্বারী বানিয়েছেন। ছেলেদের মাওলানা বানাতে পারেছেন। মহান আল্লাহতালার কাছে শুকরিয়া আদায় করেন তিনি। 

তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ তাআলার রহমতে এ ব্যবসায় আমার সফলতা এসেছে। আমার এই সফলতা দেখে অনেকে কিছু করার জন্য আগ্রহী হচ্ছেন।’’

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তওবার অশ্রু সবচেয়ে পবিত্র অশ্রু
  • ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত
  • সোনালী ব্যাংকের নতুন ডিএমডি হলেন নূরুন নবী
  • মুড়ি ভর্তা বিক্রি করে আয় অর্ধ লাখ টাকা