গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকালে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল। এ সময় কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) কার্যালয়ের সাম্প্রতিক তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “.

..রোম সংবিধির ৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সমর্থকরা যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।” 

এতে আরো বলা হয়, কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার উদ্দেশ্যেই খুব কাছে থেকে তাদের গুলি করে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ওএইচসিএইচআরের জেনেভা কার্যালয় থেকে ‘২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের বিক্ষোভের সাথে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন’ শীর্ষক তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে যে, অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনী সামরিক রাইফেল ও স্বয়ংক্রিয় পিস্তল থেকে জনতার ওপর প্রাণঘাতী গুলি চালিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মাথা ও শরীর লক্ষ্য করে গুলি করা হয়।

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের শরীরের এসব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে শটগানের গুলি ছোড়ে। সাধারণত একাধিক বন্দুকধারী কয়েক রাউন্ড করে গুলি ছোড়ে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, “যারা হামলা চালাতেন, তারা ও  তাদের কমান্ডাররা লক্ষ্যবস্তুতে থাকা জনতার কিছু সংখ্যক যেন মারা যায়, সে ব্যাপারে বিশেষ লক্ষ্য রাখতেন।”

আরো বলা হয়, “বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আত্মরক্ষা বা অন্যদের প্রতিরক্ষা হিসেবে দেখানোর কোনো যুক্তি নেই। কারণ, হতাহতরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। তারা সম্পত্তি ভাঙচুর করছিলেন না বা দাঙ্গাকারীও ছিলেন না। তারা কোনো হুমকিও ছিলেন না।”

ওএইচসিএইচআর জানায়, জুলাই মাসের বিক্ষোভের সময় বাংলাদেশে বিক্ষোভকারী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক ও পদ্ধতিগত আক্রমণের অংশ হিসেবে হত্যা, নির্যাতন, কারারুদ্ধতা ও অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার মতো যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধির অনুচ্ছেদ ৭ (১) অনুযায়ী, একটি বেসামরিক জনসংখ্যার বিরুদ্ধে পরিচালিত ব্যাপক বা পদ্ধতিগত আক্রমণই মানবতাবিরোধী অপরাধ। 

ওএইচসিএইচআর জানায়, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনের সময় নির্দিষ্ট কিছু বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যা, নির্যাতন, কারাদণ্ড ও অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছিল, যা রোম সংবিধির ধারা ৭ এর আওতায় পড়ে। 

এতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকালে নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যরা তাদের হেফাজতে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যক্তিদের ওপরও নির্যাতন চালিয়েছে।

ওএইচসিএইচআর দাবি করেছে, বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ও পদ্ধতিগত আক্রমণ একটি সরকারি নীতি অনুসরণ করে পরিচালিত হয়েছিল বলে তাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে।

রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বিক্ষোভকে সহিংস ও বেআইনিভাবে দমন এবং ক্ষমতায় থাকার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেন ও নির্দেশনা দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা পরিষেবা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বও সেই নীতি অনুসরণে সংঘটিত অপরাধ গোপন করার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা চালায়, ইচ্ছাকৃতভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়, অন্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে এবং মিডিয়া, ভুক্তভোগী, ভুক্তভোগীর পরিবার ও আইনজীবীদের ভয় দেখায়।”

ঢাকা/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ওএইচস এইচআর ব হ ন র সদস য ম নবত ব র ধ অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

বেসরকারি সংস্থায় চাকরি, দুদিন ছুটি, আছে সার্বক্ষণিক গাড়ি

বেসরকারি সংস্থা ইউসেপ বাংলাদেশ জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সংস্থায় ঢাকায় হেড অফিসে ডিরেক্টর, পিপল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পদে কর্মী নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।

পদের নাম: ডিরেক্টর, পিপল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন

পদসংখ্যা: ১

যোগ্যতা: হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট/আইন/পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন/বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এ ধরনের বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে অন্তত ২০ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এর মধ্যে নেতৃত্বের পর্যায়ে (ডিরেক্টর/হেড অব ডিপার্টমেন্ট) অন্তত পাঁচ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সামাজিক উন্নয়নকাজের আগ্রহ থাকতে হবে। এইচআর মেট্রিকস, আইডেন্টিফাই ট্রেন্ডস ও ডেটা ড্রাইভেন সলিউশনে দক্ষতা থাকতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগে সাবলীল হতে হবে। এমএস অফিস প্যাকেজসহ এইচআর সফটওয়্যারের (ইআরপি, এইচআরএমএস) কাজ জানতে হবে। ভ্রমণের মানসিকতা থাকতে হবে।

বয়স: সর্বোচ্চ ৫২ বছর। অত্যধিক অভিজ্ঞ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য।

চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক

কর্মস্থল: ইউসেপ হেড অফিস, মিরপুর-২, ঢাকা

বেতন: প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী

আরও পড়ুনডাক বিভাগে আবারও বড় নিয়োগ, পদ ৫০৪২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সুযোগ-সুবিধা: প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, উৎসব বোনাস, মুঠোফোন ও ইন্টারনেট বিল, গোষ্ঠী বিমা, সপ্তাহে দুই দিন ছুটিসহ সার্বক্ষণিক গাড়ির সুযোগ আছে।

আবেদন যেভাবে

আগ্রহী প্রার্থীদের ইউসেপ বাংলাদেশের চাকরিসংক্রান্ত ওয়েবসাইটের এই লিংক থেকে নিয়োগসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জেনে Apply বাটনে ক্লিক করে আবেদন করতে হবে।

আবেদনের শেষ সময়: ১২ মার্চ ২০২৫।

আরও পড়ুনআন্তর্জাতিক সংস্থায় ঢাকায় চাকরি, বেতন ৯৩ হাজার, দুদিন ছুটি২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনরোটারি ইন্টারন্যাশনালের ১৩০ ফেলোশিপ, অস্ট্রেলিয়া–যুক্তরাজ্য–যুক্তরাষ্ট্র–জাপান–তুরস্ক ও উগান্ডায় পড়াশোনা৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেসরকারি সংস্থায় চাকরি, দুদিন ছুটি, আছে সার্বক্ষণিক গাড়ি