রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের আয়োজনে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজবাড়ী অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে ‘বই পড়া প্রতিযোগিতা’ অনুষ্ঠিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সুভা’ গল্প নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। 

প্রতিযোগিতার আলোচনা পর্বের সভাপতিত্ব করেন রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের সভাপতি কমল কান্তি সরকার। বক্তব্য দেন সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের উপদেষ্টা মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম সারওয়ার, আব্দুর রউফ হিটু, দেলোয়ার হোসেন, সমকালের রাজবাড়ী প্রতিনিধি সৌমিত্র শীল চন্দন প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের সাধারণ সম্পাদক রবিউল রবি। 

সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মানুষের জীবনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ বা বই পড়ে জ্ঞানের চর্চা করা এটা অন্যতম একটি কাজ। যদি মানুষকে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হয় তাহলে তাকে বই পড়তে হবে। বেলুনে যত ফুঁ দেবে ততই প্রসারিত হবে। বই পড়াটাও সে রকম। আমরা যত জ্ঞানের চর্চা করব ততই আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। 

তিনি সুহৃদদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘গ্রামের নাম চণ্ডীপুর। নদীটি বাংলাদেশের একটি ছোট নদী, গৃহস্থঘরের মেয়েটির মতো; বহুদূর পর্যন্ত তাহার প্রসার নহে; নিরলসা তন্বী নদীটি আপন কূলরক্ষা করিয়া কাজ করিয়া যায়; দুই ধারের গ্রামের সকলেরই সঙ্গে তাহার যেন একটা-না-একটা সম্পর্ক আছে। দুই ধারে লোকালয় এবং তরুচ্ছায়াঘন উচ্চতট; নিম্নতল দিয়া গ্রামলক্ষ্ণী স্রোতস্বিনী আত্মবিস্মৃত দ্রুত পদক্ষেপে প্রফুল্ল হৃদয়ে আপনার অসংখ্য কল্যাণকার্যে চলিয়াছে।’ রবীন্দ্রনাথের গল্পের কথামালার মতো সুহৃদরা সবার জন্য কল্যাণকর কাজ করে যাচ্ছে।’ 

মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের যে কোনো সম্পদ অন্যকে দিয়ে দিলে কমে যায়। কিন্তু জ্ঞান এমন একটি সম্পদ, যা অন্যের মধ্যে বিলিয়ে দিলেও কমে না; বরং আরও বাড়ে। আর জ্ঞানের চর্চা করতে হলে বই পড়তেই হবে। নিয়মিত পড়তে হবে, মানসম্মত বই পড়তে হবে।’

গোলাম সারওয়ার এমন অসাধারণ আয়োজনের জন্য সমকাল সুহৃদ সমাবেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন এমন আয়োজন আমরা পাইনি। কিন্তু আমরা বেশির ভাগ সময় লাইব্রেরিতে ব্যয় করেছি। সুহৃদ সমাবেশের এ উদ্যোগ চমৎকার। তোমরা যারা অংশগ্রহণ করেছ, তারা সবাই একজন বীরযোদ্ধা। তোমাদের কলমের যুদ্ধে এগিয়ে যাবে দেশ।

আব্দুর রউফ হিটু বলেন, বই পড়তে হবে। নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে বই পড়ার বিকল্প নেই। যত বই পড়বে ততই জানবে। এমন আয়োজন অব্যাহত থাকুক। এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা আরও বেশি আগ্রহী হবে বলে মনে করি। 

দেলোয়ার হোসেন বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি একটা ভালো কিছু বেছে নিতে হবে। সেটা বই পড়াও হতে পারে। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে বই পড়তে হবে। 
সভাপতির বক্তৃতায় সমকাল সুহৃদ সমাবেশের সভাপতি কমল কান্তি সরকার বলেন, সুহৃদ সমাবেশ সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে থাকে। ভালো কাজের উদ্যোগ নেয়। তিনি অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজকে ধন্যবাদ জানান বই পড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। 

সুহৃদ সমাবেশের কার্যক্রম ও বই পড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন সমকালের রাজবাড়ী প্রতিনিধি সৌমিত্র শীল চন্দন। 
সুহৃদদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন, সোহাগ হোসেন, রবিউল ইসলাম রবি প্রমুখ। 

প্রতিযোগিতায় সেরা আটজনকে পুরস্কার হিসেবে বই এবং সব অংশগ্রহণকারীকে উপকরণ উপহার দেওয়া হয়। 
 


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বই পড়ত র জন য সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

২২ বছর পর তালেবানের ওপর থেকে সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহার রাশিয়ার

রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট গতকাল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের শাসকদল তালেবানের ওপর থেকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ তকমা প্রত্যাহার করেছে। ফলে এখন থেকে রাশিয়ায় তালেবান বৈধভাবে কার্যক্রম চালাতে পারবে।

চার বছর আগে দ্বিতীয়বার আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণকারী তালেবানকে ২০০৩ সাল থেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রাশিয়া। তাই এত দিন পর্যন্ত গোষ্ঠীটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা রাশিয়ার আইন অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধ ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর বাহিনী প্রায় দুই দশক অবস্থানের পর ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে তালেবান। এরপর থেকে তালেবানের সঙ্গে রাশিয়ার কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত মধ্য এশিয়ার দেশটিকে স্থিতিশীল করতে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলারও আহ্বান জানাতে থাকেন রাশিয়ার কর্মকর্তারা।

 ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত চার বছরে তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা একাধিকবার রাশিয়া সফর করেছেন। গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, আফগানিস্তানের ‘বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা প্রয়োজনীয়’। কারণ আফগানিস্তানে বর্তমানে তাঁরাই ক্ষমতায়।

২০২৪ সালের মে মাসে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিচার মন্ত্রণালয় তালেবানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়। চলতি মাসের শুরুতে প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় সুপ্রিম কোর্টে প্রস্তাব জমা দেয়। গতকাল প্রস্তাবটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানান সুপ্রিম কোর্ট। 

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত প্রায় এক দশক আফগানিস্তানে তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার সেনা মোতায়েন ছিল। তখন তাঁরা দেশটিতে চলমান গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। অর্থাৎ তালেবানের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাতময় অতীত রয়েছে। তবে মস্কোর সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহার তালেবানকে আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্য করতে সহায়তা করবে।

গত কয়েক বছরে এশিয়ার অন্যান্য দেশও তালেবানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে শুরু করেছে। ২০২৩ সালে কাজাখস্তান তালেবানের ওপর থেকে সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহার করে। পরের বছর একই পথে হাঁটে কিরগিজস্তান। 

তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোনো দেশ তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। নারীদের প্রতি তালেবানের মনোভাব আন্তর্জাতিক মহলে চরমভাবে সমালোচিত হয়ে আসছে।

স্বীকৃতি না দিলেও কাবুলে বর্তমানে চীন, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং ইরানের দূতাবাস রয়েছে। তালেবানের অধীনে ২০২৩ সালে আফগানিস্তানে প্রথম রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে চীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ