হেলমেট বাহিনীর প্রধান কামু গ্রেপ্তার
Published: 26th, February 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কথিত হেলমেট বাহিনীর প্রধান কামরুল ইসলাম ওরফে কামুকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে পৌর সদরের হায়বাদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় কামু পুলিশের সঙ্গে হম্বিতম্বি ও ধস্তাধস্তি করেন।
কামরুল হায়বাদপুর গ্রামের শোকর আলীর ছেলে। এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন তিনি। বর্তমানে উপজেলা সৈনিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক পদে আছেন। হেলমেট বাহিনীর প্রধান হিসেবে এলাকায় পরিচিত রয়েছে তার।
স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ হোসেনের ভাষ্য, কামরুলের বাবা শোকর আলী নকিপুর বাজারে কুলির কাজ করতেন। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতা হয়ে ওঠেন কামরুল। বাহিনী নিয়ে চাঁদাবাজি ও দখলবাজির মাধ্যমে সম্পদশালী হয়ে ওঠেন। উপজেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান সাঈদ-উজ জামানের সহকারীর দায়িত্বেও ছিলেন কামরুল। এই সুযোগে সরকারিভাবে বিতরণের জন্য বরাদ্দ পানির ড্রাম নিয়ে বাণিজ্য করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয় করেন। ৫ আগস্ট শ্যামনগর থানায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেখান থেকে সোলার প্যানেলের বড় ব্যাটারিসহ অন্যান্য মালপত্র লুটের অভিযোগ রয়েছে কামরুলের পরিবারের বিরুদ্ধে।
প্রতিবেশী এছোম গাজীসহ কয়েকজন বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা গা-ঢাকা দেন। কিন্তু বিএনপির স্থানীয় কতিপয় নেতার আশ্রয়ে এলাকায়ই ছিলেন কামরুল। এমনকি হেলমেট পরে নকিপুর গরুর হাট, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর দপ্তরে আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
আটকের পর তিনি অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া শ্যামনগর থানার এসআই মো.
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর মোল্যা বলেন, একটি মামলায় কামরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। তার বিরুদ্ধে আরও কোনো অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য মনগর
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে সাতক্ষীরায় এনে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩
ভারতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ময়মনসিংহ থেকে এক তরুণীকে সাতক্ষীরায় এনে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত জেলার কালীগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মেহেদি হাসান ওরফে সবুজ (২৪), তাঁর ভাই সাকিব হোসেন (২০) ও মো. গোলাম রসুল ওরফে রাকিব (২১)। তাঁদের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার কাঠুনিয়া গ্রামে।
সাতক্ষীরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী তরুণী জানান, তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায়। পেশায় তিনি একজন মডেল ও পারলারের রূপবিশেষজ্ঞ। কয়েক দিন আগে ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কাঠুনিয়া গ্রামের গোলাম রসুলের পরিচয় হয়। কয়েক মাস কোনো কাজ না থাকায় তিনি বাড়িতে বেকার বসে ছিলেন। গোলাম রসুলের সঙ্গে পরিচয়ের একপর্যায়ে তিনি ভারতে কাজের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানান। পরে তাঁর কথায় ২২ মার্চ তিনি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে আসেন। ওই দিন সন্ধ্যায় কালীগঞ্জ বাস টার্মিনাল থেকে মেহেদি হাসান ও গোলাম রসুল তাঁকে নিয়ে মেহেদির বাড়িতে নিয়ে রাখেন।
ভুক্তভোগী তরুণী অভিযোগ করেন, রোববার গ্রেপ্তার মেহেদির বাড়ি থেকে তাঁকে কদমতলা গ্রামের আমিনুল ইসলাম নামের একজনের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে অচেতন করার পর একে একে কয়েকজন তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরদিন সোমবার তাঁকে শ্যামনগর উপজেলার কুলতলী গ্রামে একজনের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। মঙ্গলবার আবার তাঁকে কয়েকজন ধর্ষণ করেন। এরপর তাঁকে আবার মেহেদির বাড়িতে আনা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর কাছে থাকা মুঠোফোন দিয়ে ৯৯৯ নম্বর কল করলে দুপুরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
সাতক্ষীরার ওই হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সোমা রানী দাস বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি অসুস্থ থাকায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল রশিদ মোল্যা বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে থানায় মামলা করেছেন। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। ওই তরুণী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।