সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কথিত হেলমেট বাহিনীর প্রধান কামরুল ইসলাম ওরফে কামুকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে পৌর সদরের হায়বাদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় কামু পুলিশের সঙ্গে হম্বিতম্বি ও ধস্তাধস্তি করেন। 

কামরুল হায়বাদপুর গ্রামের শোকর আলীর ছেলে। এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন তিনি। বর্তমানে উপজেলা সৈনিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক পদে আছেন। হেলমেট বাহিনীর প্রধান হিসেবে এলাকায় পরিচিত রয়েছে তার।

স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ হোসেনের ভাষ্য, কামরুলের বাবা শোকর আলী নকিপুর বাজারে কুলির কাজ করতেন। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতা হয়ে ওঠেন কামরুল। বাহিনী নিয়ে চাঁদাবাজি ও দখলবাজির মাধ্যমে সম্পদশালী হয়ে ওঠেন। উপজেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান সাঈদ-উজ জামানের সহকারীর দায়িত্বেও ছিলেন কামরুল। এই সুযোগে সরকারিভাবে বিতরণের জন্য বরাদ্দ পানির ড্রাম নিয়ে বাণিজ্য করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয় করেন। ৫ আগস্ট শ্যামনগর থানায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেখান থেকে সোলার প্যানেলের বড় ব্যাটারিসহ অন্যান্য মালপত্র লুটের অভিযোগ রয়েছে কামরুলের পরিবারের বিরুদ্ধে।

প্রতিবেশী এছোম গাজীসহ কয়েকজন বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা গা-ঢাকা দেন। কিন্তু বিএনপির স্থানীয় কতিপয় নেতার আশ্রয়ে এলাকায়ই ছিলেন কামরুল। এমনকি হেলমেট পরে নকিপুর গরুর হাট, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর দপ্তরে আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। 

আটকের পর তিনি অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া শ্যামনগর থানার এসআই মো.

মতিন বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় কামরুলকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তিনি কিছুটা উচ্চবাচ্য ও জোরজবরদস্তি করেন। 

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর মোল্যা বলেন, একটি মামলায় কামরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। তার বিরুদ্ধে আরও কোনো অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য মনগর

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে ঢুকে জেলেদের হামলা করার অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে

বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে ঢুকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা জেলেদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, বিএসএফ জেলেদের মারধর করে তিনটি নৌকা নিয়ে গেছে। 

বিজিবি বলছে, তারা জানতে পেরেছে, বাংলাদেশি জেলেরা ভারতের সীমান্তে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। বিএসএফ তাদের তিনটি নৌকা আটকে দিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সীমান্ত নদী কালিন্দির বয়ারসিং সংলগ্ন উলোখালীর চর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।  

আরো পড়ুন:

বগুড়ায় হামলায় ২ পুলিশ আহত

চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর, আটক ৬

হামলার শিকার জেলেরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের রমজান আলী, শাহাজান আলী, শাহাদাৎ হোসেন, মো. শাহাজান, আতাউর রহমান, মো. আব্দুল, মানিকপুর গ্রামের কেরামত ও কৈখালীর নুর মোহাম্মদ।

হামলার শিকার শাহাদাৎ হোসেন জানান, পশ্চিম সুন্দরবনের কৈখালী স্টেশন থেকে পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে চারদিন আগে তারা সুন্দরবনে যান। তিনটি নৌকার ১২ জন জেলে দুইদিন ধরে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত উলোখালীর চরে পাটা জাল পেতে মাছ ধরছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুইটি স্পিডবোট নিয়ে বিএসএফ সদস্যরা সেখানে যান ও তাদের মারধর শুরু করেন।

তিনি আরো জানান, তারা নদীতে পেতে রাখা জাল ও সেখানে থাকা নৌকা ফেলে বনের মধ্যে ঢুকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। নৌকা নিয়ে পরে বিএসএফ সদস্যরা চলে যায়।

শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ লাল্টু জানান, বিএসএফের মারধরের শিকার আট জেলের মধ্যে ছয়জন তার এলাকার। বিএসএফ নৌকা নিয়ে উলোখালীর চর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় তারা পায়ে হেঁটে বনের মধ্য দিয়ে লোকালয়ে ফিরছেন। সেখানে পেতে রাখা জাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মশিউর রহমান বলেন, “বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশী সীমানায় ঢুকে তিনটি নৌকা নিয়ে গেছে বলে শুনেছি।” 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সাতক্ষীরা ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহরিয়ার রাজিব বলেন, “আমরা যতদূর খবর পেয়েছি, মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশি জেলেরা ভারতের সীমানায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। তখন বিএসএফ তাদের তিনটি নৌকা আটকে দিয়েছে। হামলা বা গুলির কোন ঘটনা সেখানে ঘটেনি।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে ঢুকে জেলেদের হামলা করার অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে