কিশোরগঞ্জে সড়কের পাশে থামিয়ে রাখা একটি ট্রাকে আগুন লেগে পুড়ে প্রাণ গেছে ঘুমন্ত এক কিশোরের। মঙ্গলবার গভীর রাতে সদর উপজেলার সতাল এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। 

বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাঈম মিয়া (১৩) নামের ওই কিশোর মারা যায়। নিহত নাঈম শহরতলির সতাল এলাকার লোকমান মিয়ার ছেলে। 

তাদের প্রতিবেশী ব্যবসায়ী মাসুদ রানা জুয়েলের ভাষ্য, ট্রাকটি নাঈমের মামা হারিছ মিয়ার। মঙ্গলবার রাতে কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ সড়কে জেলা পরিষদের সামনে ট্রাকটি থামিয়ে রাখা হয়। সেখানে চালকের আসনে ঘুমায় ওই কিশোর। গভীর রাতে আগুন ধরে গেলে সে গুরুতর দগ্ধ হয়। 

জেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারি বলেন, গভীর রাতে সংবাদ পেয়ে তাদের সদস্যরা গিয়ে দেখেন এলাকাবাসী আগুন নিভিয়েছে। ট্রাকের সামনের অংশ থেকে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় নাঈমকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বুধবার দুপুরে সেখানে নাঈম মারা গেছে বলে জানতে পেরেছেন। এ কর্মকর্তার ধারণা, কয়েল অথবা সিগারেটের আগুন থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজতন্ত্রের দাবিতে নেপালে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, নিহত ২

নেপালে বিলুপ্ত রাজতন্ত্র পুনরায় চালুর দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গতকাল শুক্রবার এক সাংবাদিকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী এবং পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ ঘটনায় মোট ৪৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

নেপাল পুলিশের মুখপাত্র দীনেশ কুমার আচার্য ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নিহত দুজনের মধ্যে একজন বিক্ষোভকারী এবং অপরজন সাংবাদিক ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন আহত বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। স্থানীয় একটি টিভি স্টেশন জানিয়েছে, একটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলে তাদের একজন কর্মী নিহত হন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের হাজার হাজার সমর্থক কাঠমান্ডুর পূর্ব প্রান্তে জড়ো হয়েছিল। একসময় কিছু বিক্ষোভকারী নিষিদ্ধ এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ে এবং জনতাকে জলকামান ছিটিয়ে পিছে হটানোর চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতে কারফিউ জারি করা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, এদিন রাজধানীর অপর প্রান্তে, বর্তমান প্রজাতন্ত্রী সরকার ব্যবস্থার সমর্থক হাজার হাজার মানুষ একটি পাল্টা সমাবেশে জড়ো হয়েছিল, তবে তা শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে নেপালের রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ ব্যাপক রাজপথ বিক্ষোভের মুখে তার কর্তৃত্ববাদী শাসন ত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং দুই বছর পর ২০০৮ সালে সংসদ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করার পক্ষে ভোট দেয়। নির্বাচনের মাধ্যমে ২৩৯ বছরের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে নেপাল হিন্দু রাজ্য থেকে ধর্মনিরপেক্ষ ফেডারেল প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়।

তখন থেকে নেপালের শেষ রাজা ৭৭ বছর বয়সী জ্ঞানেন্দ্র কাঠমান্ডুর বাড়িতে সাধারণ নাগরিক হিসেবে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন। রাজতন্ত্র বিলুপ্তির পর থেকে গত ১৬ বছরে নেপালে ১৪টি সরকার গঠন হয়েছে। তবে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার বিরাজ করছে ফলে প্রভাব পড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর। 

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শাহকে রাজা হিসেবে পুনর্বহাল এবং হিন্দুধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ফিরিয়ে আনার দাবি ক্রমবর্ধমান হচ্ছে। রাজতন্ত্রবাদী গোষ্ঠীগুলো দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে দুর্নীতি এবং ব্যর্থ শাসনব্যবস্থার জন্য অভিযুক্ত করেছে। মানুষ রাজনীতিবিদদের প্রতি হতাশ বলে তারা দাবি করেছে।

জ্ঞানেন্দ্র, যিনি সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপনের জন্য রাজপ্রাসাদ ছেড়েছিলেন, তিনি রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহ্বান সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। ক্রমবর্ধমান সমর্থন সত্ত্বেও সাবেক রাজার অবিলম্বে ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কম।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ