কোচের ঘাড় চেপে ধরে লঘু শাস্তি মেসির
Published: 26th, February 2025 GMT
লিওনেল মেসিকে ইদানীং মাঠে প্রায়ই মাথা গরম করতে দেখা যাচ্ছে। গত রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) নিউইয়র্ক সিটি এফসির বিপক্ষে ম্যাচটিতে মেজাজ হারিয়ে প্রতিপক্ষ কোচের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে যান এই আর্জেন্টাইন তারকা। এই ঘটনার আগে রেফারির সঙ্গেও একবার কথা কাটাকাটি করেন তিনি। অবশ্য এসবের পরও ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ড’ হয়েছে মেসির। জরিমানা গুণেই এবারের মতো ছাড় পাচ্ছেন এই আর্জেন্টাইন।
রবিবার সিটি-মায়ামির ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে রেফারি অ্যালেক্সিস ডি সিলভার সঙ্গে তর্ক করায় মেসিকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। শেষ বাঁশি বাজার পর তিনি মাঠ ছেড়ে যাচ্ছিলেন। এসময় নিউইয়র্ক সিটির সহকারী কোচ মেহদি বালুচির সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি শুরু হয়। মেসি এক পর্যায়ে চলে গিয়েও ফিরে আসেন এবং বালুচির ঘাড়ে ধরে চাপ দেন।
এই ঘটনায় বালুচি বাকরুদ্ধ হয়ে যান। মারমুখী হয়ে দুইবার বালুচির ঘাড়ে হাত রাখেন মেসি। এই ঘটনায় মেসির শাস্তি হয়েছে। এমএলএস কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “প্রতিপক্ষে মুখ, মাথা কিংবা ঘাড়ে হাত রাখায় টুর্নামেন্টের নীতির লংঘন হয়েছে।” একই ম্যাচে পৃথক ঘটনায় প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার বার্ক রিসার ঘাড়ে হাত রাখায় মেসির সতীর্থ লুইস সুয়ারেসকেও জরিমানা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
অতিরিক্ত ১১ মিনিট পেয়ে মেসির মিয়ামির গোল, দেখলেন রোনালদোর সিউ!
গোলে ও অ্যাসিস্টে আলো ছড়ালেন মেসি
এদিকে শাস্তি পাওয়া মেসি ও সুয়ারেজ আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সকালে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে গোল করে দলকে জিতিয়েছেন। ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে কানসাস সিটির বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগে ৩-১ গোলে জিতেছে মেসির মায়ামি। দুই লেগ মিলিয়ে মিলিয়ে ৪-১ গোলের জয় নিয়ে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের শেষ ষোলোতে পৌঁছে গেছে মায়ামি।
ম্যাচের ম্যাচের ১৯ মিনিটে মিয়ামিকে এগিয়ে দেন মেসি। মিয়ামির বাকি গোল দুটোও আসে বিরতির আগে। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে তাদেও আলেন্দে এবং তৃতীয় মিনিটে লুইস সুয়ারেজ গোল করে প্রতিপক্ষকে একধরনের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন। মেমো রদ্রিগেজ ৬৩ মিনিটে একটি গোল শোধ করেন।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি ৫.৪%
বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রত্যাশাতীত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময় দেশটিতে মানুষের ভোগ যেমন বেড়েছে, তেমনি শিল্পোৎপাদনও বেড়েছে। যদিও দেশটির নীতিনির্ধারকেরা ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে চিন্তিত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই শুল্ক গত কয়েক বছরে চীনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল তা স্থগিত করেন। কিন্তু চীনের শুল্ক স্থগিত করেননি তিনি। শুধু তাই নয়, চীনের পণ্যে শুল্ক আরও বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করেছেন। চীনও মার্কিন পণ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে ১২৫ শতাংশ।
চীনের সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বছরের প্রথম অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যদিও রয়টার্সের জরিপে বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার ছিল যে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। গত বছরের শেষ প্রান্তিকেও চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
তবে চীনের প্রবৃদ্ধি এই গতি থাকবে না বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা। ওয়াশিংটনের উচ্চ শুল্কের কারণে চীনের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি অর্থাৎ রপ্তানি মার খাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে চীনের নেতারা বড় ধরনের চাপে পড়বেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। রপ্তানি মার খেলে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং অনেক মানুষের চাকরি যাবে, এই পরিস্থিতি সামলানো নেতাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যাবে।
সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রকৃতি কিছুটা অসম। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বেড়েছে এবং কারখানার কার্যক্রমেও এসেছে গতি; কিন্তু বেকারত্বের উচ্চহার ও মূল্যহ্রাসের কারণে চাহিদা নিয়ে শঙ্কা আছে।
মার্চে চীনের রপ্তানি বৃদ্ধির পেছনে কিছু কাঠামোগত কারণ আছে। বিষয়টি হলো, ট্রাম্পের শুল্কের হাত থেকে বাঁচতে চীনের রপ্তানিকারকেরা মার্চে দ্রুততার সঙ্গে অনেক পণ্য জাহাজিকরণ করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুল্ক–ঝড়ের প্রভাব অনুভূত হওয়ার আগে চীনের জিডিপির পালে কিছুটা হাওয়া লেগেছে। মূলত অভ্যন্তরীণ চাহিদার বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েক বছর ধরেই চীনের প্রবৃদ্ধির গতি কম। অর্থনীতি চাঙা করতে চীনের সরকার বেশ কয়েকবার প্রণোদনা দিয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সেই প্রণোদনা অনেকটা কাজে আসছে। কিন্তু যেভাবে ট্রাম্প চীনের পণ্যে শুল্ক আরোপ করে যাচ্ছেন, তাতে আরও প্রণোদনা প্রয়োজন হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।
আগের প্রান্তিকের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, আগের প্রান্তিকের তুলনায় বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ; অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে যা ছিল ১ দশমিক ৬ শতাংশ। মার্চে দেশটির খুচরা বিক্রয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ; জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে যা ছিল ৪ শতাংশ।
এদিকে রয়টার্সের জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে চীনের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২৪ সালে যেখানে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ শতাংশ। চলতি বছর চীনের সরকারি পূর্বাভাস ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির। অর্থাৎ দেশটি সেই লক্ষ্যমাত্রা এবার অর্জন করতে পারবে না বলেই ধরে নেওয়া যায়।
এদিকে বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএস ২০২৫ সালে চীনের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যদিও আগের তাদের পূর্বাভাস ছিল ৪ শতাংশ। মূলত শুল্ক–যুদ্ধের প্রভাব বিবেচনা করে তারা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করেছে।