বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমাদের ছোট্ট একটি দেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ। সব মানুষ আমরা মিলেমিশে থাকতে চাই। এর মাঝেই আমাদের গর্ব, সৌন্দর্য, শান্তি নিহিত। আমরা এই বার্তা দেশবাসীকে দিয়ে চলছি। আমাদের সাফ কথা- আমরা এই দেশে কোন মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না।”

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু বলে মানুষের মধ্যে পার্থক্য করা যাবে না। এ দেশে যেই জন্ম নিয়েছে, সেই এ দেশের গর্বিত নাগরিক। আমরা নাগরিকদেরকে ভাগবাটোয়ারা, ধর্ম কিংবা দলে বিভক্ত করার পক্ষে নই। এটা করত অতিতের পতিত স্বৈরাচার। তারা জাতিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে মুখোমুখি লাগিয়ে রেখেছিল।” 

ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, “যে দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে না, সে দেশের মানুষ মাথা সোজা করে সম্মানের সাথে বিশ্ব দরবারে দাঁড়াতে পারে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর গেলো, আর কত বছর আমাদের টুকরো টুকরো করে রাখা হবে? আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা- আমরা কোন মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না। আমরা সবাই মিলে ইউনিটি।” 

তিনি বলেন, “একটাই জাতি আমরা, আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। তবে হ্যা অবশ্যই আমাদের জাতিগত পরিচয় থাকবে এইভাবে- আমি মুসলমান, তিনি হিন্দু অথবা খ্রিস্টান কিংবা বৌদ্ধ। আমরা সবাইকে নিয়ে চলার পক্ষে। কিন্তু এটাও সত্য- কেউ যেন কারো ধর্ম নিয়ে খোঁচাখুঁচি না করে। এটা আমরা একেবারেই ঘৃণা করি, অপছন্দ করি। যারা মেজরিটি-মাইনরিটির জিকির তুলেছিলেন। তারা যাদেরকে মাইনরিটি বলতেন, তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি তারাই করেছিলেন।” 

তিনি আরো বলেন, “ভারতসহ দুনিয়ার সকল দেশ আমরা একই বিশ্বসভার সদস্য। ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি। আমরা আমাদের প্রতিবেশিকে অহেতুক কষ্ট দিতে চাই না। আমাদের প্রতিবেশিও যেন আমাদের উপর এমন কিছু চাপিয়ে না দেন যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য অপমানজনক। যদি এরকম কিছু তারা করে, তাহলে দেশের স্বার্থে সেদিন আমরা ভূমিকা পালন করতে কারো চোখের দিকে তাকাব না। আমরা বিবেকের দিকে তাকিয়ে, বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হব।”

বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি দেশ গড়ার কাজে সকলকে পাশে থাকার আহ্বান জানান। পরে ডা. শফিকুর রহমান পঞ্চগড় সার্কিট হাউজে স্থানীয় স্থানীয় জামাতের নারী সদস্য এবং বিশিষ্টজনদের সাথে পৃথক মতবিনিময়ের পর তিনি নীলফামারীর ডোমারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।।

পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জাগপা সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দীন প্রধান; 

ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুল হাকিম, নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার মাহমুদ আল মামুন হিমু, তোফায়েল প্রধান, পঞ্চগড় জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, পঞ্চগড় জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মীর মোর্শেদ তুহিন, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট পার্টির সভাপতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ।

ঢাকা/নাঈম/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন র আম র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির জনসভাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে ফিরেছে প্রাণ-চাঞ্চল্য : মামুন মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। তিনি বলেন, “এ জনসভাকে সাধারণ জনসভা হিসেবে মানুষ দেখছে না। গত ১৫ বছর নারায়ণগঞ্জে আমরা সমাবেশগুলো করেছি কিন্তু ভয়ে ভয়ে, সীমিত সময়ের জন্য।

সমাবেশে নেতা-কর্মীদের আসতে বাধা দেয়া হতো। পুলিশ এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বাধাগ্রস্ত করতো। সমাবেশ হবে সম্পূর্ণ ভয়মুক্ত, স্বাধীন দেশে।”

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের মিশনপাড়া এলাকায় সমাবেশস্থল পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে এ সমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশ উপলক্ষে শহরের নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের উপর অস্থায়ী মঞ্চ করা হয়েছে।

মামুন মাহমুদ বলেন, “জনসভাকে কেন্দ্র করে আমরা দেখছি, নারায়ণগঞ্জে প্রাণ-চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। এই জনসভাকে ঘিরে সকলে উৎসুক। আমাদের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এ সমাবেশে অংশগ্রহণ করবে। মানুষ জানাতে চায় আগামী দিনে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে কীভাবে দেশ পরিচালনা করবে। সেই বার্তা এখান থেকে তারা নিতে আসবে।”

জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বক্তব্য রাখবেন জানিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, “ইনশাল্লাহ আগামীকালের জনসভা হবে নারায়ণগঞ্জে সর্বকালের বৃহৎ জনসভা।

এর মধ্যে আমরা কোনো বড় জনসভা করি নাই। কারণ ৬ মাস হয়েছে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে। আগামীকাল যে জনসভা করবো সেটি হবে বৃহৎ জনসভা। জনসভাকে ঘীরে বিএনপি নেতাকর্মীরা উৎসুক হয়ে আছে।”

তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘদিন পর নারায়ণগঞ্জে আমরা এমন একটি জনসভা করছিল। মনে হচ্ছে, প্রাণ খুলে নিশ্বাস নিতে পারছি। কারণ গত ১৫ বছর আমরা নিশ্বাস নিতে পারি নাই। এখানে মুক্ত বাতাস গ্রহণ করবো। নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে এ ম্যাসেজ যাবে।

অন্যান্য জেলার মানুষ জানতো, নারায়ণগঞ্জ একটি সন্ত্রাসের জনপদ, গডফাদারের জনপদ। আগামীকালের জনসভা থেকে আমরা ম্যাসেজ দিতে চাই সারাদেশে, নারায়ণগঞ্জ একটি শান্তির জনপদ। এ জনপদে আর কোনো গডফাদারের জন্ম হবে না। নেতাকর্মী ও আমাদের প্রমাণ করবো বিএনপির হাতে নারায়ণগঞ্জ সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়।”

মামুন মাহমুদ বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক জনসভায় রূপ নিবে। লক্ষাধিক মানুষ এখানে আসবে আমরা ধারণা করছি। এখানে শুধু আমাদের নেতা-কর্মীরাই আসবে না সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ দেখছি। প্রচারণা মাইক যে এলাকায় গিয়েছে মানুষ এসেছে, জানতে চেয়েছে কে আসবে। তাদের মধ্যে যে আগ্রহ দেখা গেছে, তাতে মনে হয়েছে, সাধারণ মানুষও আসবে।”

জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, যুগ্ম আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এই দেশে কোনো মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না, সবাই মিলে ইউনিটি: জামায়াত আমির
  • বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব হত্যাকাণ্ডের বদলা নেওয়া হবে: নিতাই রায়
  • বিএনপির জনসভায় জাহিদ-সুমন-নাজমুলের শোডাউন
  • ‘নির্বাচন দিতে দেরি হলে কঠোর আন্দোলনে যাবে বিএনপি’
  • বিএনপির জনসভাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে প্রাণ-চাঞ্চল্য ফিরেছে : মামুন মাহমুদ
  • বিএনপির জনসভাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে ফিরেছে প্রাণ-চাঞ্চল্য : মামুন মাহমুদ
  • সরকারের ওপর জঙ্গি-ভূত ভর করেছে: সোহেল