ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের এক শিক্ষার্থীর আসন বাতিল ও হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বুধবার মাদার বখ্‌ত হলের প্রাধ্যক্ষ শাহ হোসাইন আহমদ মেহ্‌দী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘...ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট শেয়ার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে তাঁর সিট বাতিল করা হলো এবং তাঁকে হল থেকে বহিষ্কার করা হলো।’

হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার ওই শিক্ষার্থী তাঁর ফেসবুক আইডিতে ব্লগার আসাদ নূরের একটি ভিডিও পোস্ট শেয়ার করেন। ওই ভিডিওতে হজরত মুহাম্মদকে (সা.

) নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ উঠেছিল। মাদার বখ্শ হলের একজন শিক্ষার্থী ওই পোস্টের স্ক্রিনশট অন্য শিক্ষার্থীদের মেসেঞ্জার গ্রুপে দেন। পরে কয়েকজন শিক্ষার্থী গিয়ে ওই ছাত্রের কক্ষে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। খবর পেয়ে হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিক্ষার্থীর হলের আসন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে নগরের মতিহার থানার পুলিশের কাছে ওই শিক্ষার্থীকে সোপর্দ করা হয়।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) আবদুল মালেক আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক শিক্ষার্থীকে ধর্ম অবমাননা করার অভিযোগে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাঁকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে  মামলা করার কথা রয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ঘটনার বিষয়ে পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত করে দেখবে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের ছাত্রত্ব বাতিল, শাস্তির আওতায় ৪৮ জন

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) শাখার সভাপতি-সম্পাদকসহ চার শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া দুইজন শিক্ষার্থীকে চার সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কারসহ মোট ৪৮ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ও ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম সরকার বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন। 

এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন রুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক। 

আজীবন বহিষ্কৃতরা হলেন—নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রুয়েট শাখার সভাপতি ও পুরকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ফাহমিদ লতিফ লিয়ন, শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সৌমিক সাহা, যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী শাশ্বত সাহা সাগর ও পুরকৌশল বিভাগ ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মৃন্ময় কান্তি। জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়। 

এছাড়া পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় দুই শিক্ষার্থীকে ৪ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। অপরদিকে, ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট রুয়েটের হলে অভিযানের প্রেক্ষিতে প্রাপ্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আবাসিক হলের বিভিন্ন কক্ষে অস্ত্র, মাদকসহ নিষিদ্ধ দ্রব্যাদি রাখার দায়ে ৪২ জনের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ও ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রুয়েট প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। এসব অভিযোগ যাচাই করে দেখা যায়, অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত যে অর্ডিন্যান্স রয়েছে সেটির ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এজন্য ৪ শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও ২ জনকে ৪ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে‌। এছাড়া, ৪২ জনকে আবাসিক হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ