বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এই দেশে কোনো মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না, আমরা সবাই মিলে ইউনিটি। আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। কিসের সংখ্যালঘু আর কিসের সংখ্যাগুরু। এই দেশে যে-ই জন্ম নিয়েছে, সে-ই এ দেশের গর্বিত নাগরিক।’

আজ বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জেলা জামায়াতের এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, ‘আমরা নাগরিকদের কোনো ভাগ-বাঁটোয়ারা, ধর্ম কিংবা দলের দিক থেকে গড়ার পক্ষে নই। এই বোর (বিরক্তিকর) খাসলত ছিল অতীতের পতিত স্বৈরাচারের। তারা এই জাতিকে ভেঙে টুকরা টুকরা করে মুখোমুখি লাগিয়ে দিয়েছিল।’

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও অত্যাচারের অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘যাঁরা এই দেশে মেজরিটি (সংখ্যাগরিষ্ঠ) আর মাইনরিটির (সংখ্যালঘু) জিকির তুলে রেখেছিলেন, আমি আল্লাহর ওপর ভরসা করে বুকে হাত দিয়ে বলছি, তাঁরা যাঁদের মাইনরিটি বলতেন, এই ভাইদের সম্পদ, ইজ্জত এবং তাঁদের জীবনের ওপর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সাধন করেছেন তাঁরাই। আমি দাবি জানাব, বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘের যৌথ উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত এই দেশে এ রকম যত ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর অনুসন্ধান করে তার শ্বেতপত্র জনগণের সামনে প্রকাশ করা।’

ভারতকে উদ্দেশ্য করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। প্রতিবেশীকে অহেতুক উষ্টা দিতে চাই না। তবে প্রতিবেশীও যেন আমাদের ওপর অসম্মানজনক ও অপমানজনক কোনো কিছু চাপিয়ে না দেয়। যদি তাঁরা এমন কিছু করেন, তাহলে দেশের স্বার্থে আমরা ভূমিকা পালন করতে কারও চোখের দিকে তাকাব না। আমরা বিবেকের দিকে তাকিয়ে বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হব।’

মানবিক দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে আর গডফাদারদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, গডফাদারদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, মাফিয়াতন্ত্রের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না।’

নারীদের উদ্দেশ্যে শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘মা-বোনেরা সমাজের উন্নয়নে সব জায়গায় ইনশা আল্লাহ গর্বের সঙ্গে আপনারাও ভূমিকার রাখবেন। যে দুইটা জিনিস এখন পান না, সেই দুইটা জিনিসও আপনারা পাবেন। একটি হচ্ছে মর্যাদা আর অন্যটি নিরাপত্তা। এই মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে আপনারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবেন।’

জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের মধ্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমানসহ জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন ও জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আবুল বাশার বসুনিয়ার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি তাসমিয়া প্রধান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি মীর মোর্শেদ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই দ শ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির জনসভাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে ফিরেছে প্রাণ-চাঞ্চল্য : মামুন মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। তিনি বলেন, “এ জনসভাকে সাধারণ জনসভা হিসেবে মানুষ দেখছে না। গত ১৫ বছর নারায়ণগঞ্জে আমরা সমাবেশগুলো করেছি কিন্তু ভয়ে ভয়ে, সীমিত সময়ের জন্য।

সমাবেশে নেতা-কর্মীদের আসতে বাধা দেয়া হতো। পুলিশ এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বাধাগ্রস্ত করতো। সমাবেশ হবে সম্পূর্ণ ভয়মুক্ত, স্বাধীন দেশে।”

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের মিশনপাড়া এলাকায় সমাবেশস্থল পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে এ সমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশ উপলক্ষে শহরের নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের উপর অস্থায়ী মঞ্চ করা হয়েছে।

মামুন মাহমুদ বলেন, “জনসভাকে কেন্দ্র করে আমরা দেখছি, নারায়ণগঞ্জে প্রাণ-চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। এই জনসভাকে ঘিরে সকলে উৎসুক। আমাদের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এ সমাবেশে অংশগ্রহণ করবে। মানুষ জানাতে চায় আগামী দিনে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে কীভাবে দেশ পরিচালনা করবে। সেই বার্তা এখান থেকে তারা নিতে আসবে।”

জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বক্তব্য রাখবেন জানিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, “ইনশাল্লাহ আগামীকালের জনসভা হবে নারায়ণগঞ্জে সর্বকালের বৃহৎ জনসভা।

এর মধ্যে আমরা কোনো বড় জনসভা করি নাই। কারণ ৬ মাস হয়েছে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে। আগামীকাল যে জনসভা করবো সেটি হবে বৃহৎ জনসভা। জনসভাকে ঘীরে বিএনপি নেতাকর্মীরা উৎসুক হয়ে আছে।”

তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘদিন পর নারায়ণগঞ্জে আমরা এমন একটি জনসভা করছিল। মনে হচ্ছে, প্রাণ খুলে নিশ্বাস নিতে পারছি। কারণ গত ১৫ বছর আমরা নিশ্বাস নিতে পারি নাই। এখানে মুক্ত বাতাস গ্রহণ করবো। নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে এ ম্যাসেজ যাবে।

অন্যান্য জেলার মানুষ জানতো, নারায়ণগঞ্জ একটি সন্ত্রাসের জনপদ, গডফাদারের জনপদ। আগামীকালের জনসভা থেকে আমরা ম্যাসেজ দিতে চাই সারাদেশে, নারায়ণগঞ্জ একটি শান্তির জনপদ। এ জনপদে আর কোনো গডফাদারের জন্ম হবে না। নেতাকর্মী ও আমাদের প্রমাণ করবো বিএনপির হাতে নারায়ণগঞ্জ সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়।”

মামুন মাহমুদ বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক জনসভায় রূপ নিবে। লক্ষাধিক মানুষ এখানে আসবে আমরা ধারণা করছি। এখানে শুধু আমাদের নেতা-কর্মীরাই আসবে না সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ দেখছি। প্রচারণা মাইক যে এলাকায় গিয়েছে মানুষ এসেছে, জানতে চেয়েছে কে আসবে। তাদের মধ্যে যে আগ্রহ দেখা গেছে, তাতে মনে হয়েছে, সাধারণ মানুষও আসবে।”

জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, যুগ্ম আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমরা কোন মেজরিটি-মাইনরিটি মানিনা: জামায়াত আমির
  • বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব হত্যাকাণ্ডের বদলা নেওয়া হবে: নিতাই রায়
  • বিএনপির জনসভায় জাহিদ-সুমন-নাজমুলের শোডাউন
  • ছিনতাইকারীর আস্তানায় অভিযানে গিয়ে ছুরিকাহত দুই এসআই
  • ঝিনাইদহে তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আটক দুই
  • ‘নির্বাচন দিতে দেরি হলে কঠোর আন্দোলনে যাবে বিএনপি’
  • বিএনপির জনসভাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে প্রাণ-চাঞ্চল্য ফিরেছে : মামুন মাহমুদ
  • বিএনপির জনসভাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে ফিরেছে প্রাণ-চাঞ্চল্য : মামুন মাহমুদ
  • সরকারের ওপর জঙ্গি-ভূত ভর করেছে: সোহেল