ইউক্রেনের রাজধানী ও জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা
Published: 26th, February 2025 GMT
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও দেশটির জ্বালানি স্থাপনাগুলো কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে বড় আকারের ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের দাবি, গতকাল মঙ্গলবার রাতভর ১৭৭টি ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছে রুশ বাহিনী।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া সাম্প্রতিক সময়ে প্রতি রাতেই ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। গত রবিবার রাতে ইউক্রেনে ২৬৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে আক্রমণ শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক শক্তিশালী রাখা দরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘে রাশিয়ার পক্ষ নিল যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে রাশিয়ার ছোড়া ১৭৭টি ড্রোনের মধ্যে ১১০টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৬৬টি ড্রোনের পথ বদলে দেওয়ায় সেগুলো হারিয়ে গেছে।
রাশিয়া কিয়েভ, খারকিভ, কিরোভোরাদ এবং সুমি অঞ্চলগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছিল বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী।
ইউক্রেনের বৃহত্তম বেসরকারি জ্বালানি কোম্পানি ডিটেক জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে তাদের জ্বালানি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেনি।
রাশিয়া গত বছর ইউক্রেনের বিদ্যুৎ খাতে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের গ্যাস স্টোরেজ সুবিধা এবং উৎপাদন খাতে হামলা তীব্রভাবে বাড়িয়েছে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের গভর্নর মাইকোলা কালাশনিক জানিয়েছেন, কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় একজন নিহত, কমপক্ষে দুজন আহত এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লেগেছে।
টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে একটি পোস্টে কালাশনিক লিখেছেন, হামলার ফলে আগুন লেগে যাওয়া একটি বাড়িতে একজন বেসামরিক ব্যক্তির মরদেহ পাওয়া গেছে।
এদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দ্য মস্কো টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে রাশিয়া এবং অধিকৃত ক্রিমিয়ায় ১২৮টি ড্রোন ছুড়েছে ইউক্রেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, এটি সবচেয়ে বড় ইউক্রেনীয় আক্রমণ।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ইউক্রেনের ছোড়া ১২৮টি ড্রোন-ই ধ্বংস করেছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কিয়েভ তার শহর এবং জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার বোমাবর্ষণের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ান ভূখণ্ডে জ্বালানি ও সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলা জোরদার করেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, ড্রোনগুলো ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী ব্রায়ানস্ক এবং কুরস্ক অঞ্চলের পাশাপাশি দক্ষিণ ক্রাসনোদার অঞ্চলকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের মাধ্যমে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার কথা উভয় পক্ষই অস্বীকার করে আসছে। তবে সংঘাতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই ইউক্রেনীয়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র ব
এছাড়াও পড়ুন:
ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ, রায় যেকোনো দিন
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এখন মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার শুনানি গ্রহণ শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। যেকোনো দিন রায় ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়, যেটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
ফৌজদারি কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যেটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও এসব আপিলের ওপর একসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়ে থাকে।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেল আপিল ও আপিল করেন। পৃথক জেল আপিল গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ওঠে। সেদিন আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিয়মিত আপিল করেন কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা। আসামিদের এই ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি হয়।
গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে। আজ শুনানি গ্রহণ শেষ হলো।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, খন্দকার বাহার রুমি, নূর মুহাম্মদ আজমী ও রাসেল আহম্মেদ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল জব্বার জুয়েল, লাবনী আক্তার, তানভীর প্রধান ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ শুনানিতে ছিলেন। আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু, মাসুদ হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ শিশির মনির প্রমুখ শুনানিতে অংশ নেন।
শুনানি শেষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে মধ্যে এক দিন ছাড়া প্রতি কার্যদিবসে শুনানি গ্রহণ করেন আদালত। মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য কার্যতালিকায় আসবে। যেদিন কার্যতালিকায় আসবে, সেদিন রায় ঘোষণা করা হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন রায় ঘোষণা হতে পারে।