সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। সেপ্টেম্বর শেষে যা ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গভর্নর ড আহসান এইচ মনসুর।

বিস্তারিত আসছে…………..

.

উৎস: SunBD 24

এছাড়াও পড়ুন:

আবারও ২০০ কোটি টাকার মুনাফার ঘরে আইডিএলসি ফাইন্যান্স

ঋণের ও সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের উচ্চ সুদের কল্যাণে আবারও ২০০ কোটি টাকার মুনাফার ঘরে ফিরেছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স। ২০২১ সালের পর কোম্পানিটির মুনাফা আবারও দ্বিশতকের ঘর ছাড়াল। গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। তাতে মুনাফার এই তথ্য পাওয়া গেছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের মুনাফা ৪৯ কোটি টাকা বা প্রায় সাড়ে ৩২ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি সব ধরনের খরচ বাদ দেওয়ার পর মুনাফা করেছিল ১৫১ কোটি টাকা। ২০২২ সালে যার পরিমাণ ছিল ১৯১ কোটি টাকা। আর ২০২১ সালে আইডিএলসি ২১২ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল।

ভালো মুনাফা করায় ২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালের জন্য শেয়ারধারীদের বেশি লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি। গত বছরের জন্য কোম্পানিটি ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে ১৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এদিকে ২০২৪ সালের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে কোম্পানিটির খরচ হবে ৬২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বেশি। যার মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা পাবেন ৩৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আর ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

আইডিএলসির গত বছরের মুনাফা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়। সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডসহ অন্যান্য খাতের বিনিয়োগ থেকে প্রতিষ্ঠানটি গত বছর আয় করেছে ১৪৩ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে এই খাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় ছিল ২৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে সুদ আয়ের বাইরে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় আগের বছরের চেয়ে ১১৪ কোটি টাকা বা প্রায় ৪০০ শতাংশ বেড়েছে। সাধারণত বিনিয়োগ থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যে আয় করে, তার বিপরীতে খরচ তুলনামূলক কম। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূল ব্যবসা ঋণের সুদ আয়। গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত নিয়ে কিছুটা বাড়তি সুদে তা ঋণ হিসেবে বিতরণ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্য আমানতের সুদ বাবদ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হয়। সেই তুলনায় বিনিয়োগ আয়ের বিপরীতে খরচ অনেক কম।

গত বছর ঋণের সুদ যেমন বাড়তি ছিল, তেমনি সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদও ছিল বেশি। তাতে সুদ ও বিনিয়োগ আয়ে বাড়তি সুদের সুফল পেয়েছে আইডিএলসি। গত বছর কোম্পানিটি ঋণের সুদ বাবদ আয় করেছে ১ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির এই বাবদ আয় ছিল ১ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আইডিএলসির সুদ বাবদ আয় ২২৩ কোটি টাকা বা প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে।

ঋণের সুদ বাবদ আয় যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে আমানতের সুদ বাবদ ব্যয়। গত বছর আমানতের সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৯৯৭ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে এই বাবদ কোম্পানিটির খরচ করেছিল ৭৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমানতের সুদ বাবদ ব্যয় বেড়েছে ২৪১ কোটি টাকা বা প্রায় ৩২ শতাংশ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ গ্রাহকের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকেও বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করে থাকে। এ কারণে ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতের সুদ বাবদ ব্যয় বেশি।

গত বছর দেশে ঋণের চাহিদা কম ছিল। এ কারণে অতিরিক্ত তারল্যের একটি বড় অংশ সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেছি। আবার মন্দ ঋণ বা খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনায়ও আমরা খুব ভালো করেছিসৈয়দ জাভেদ নুর, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক,আইডিএলসি

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর কোম্পানিটির প্রকৃত সুদ আয় আগের বছরের চেয়ে কমেছে। গত বছর প্রকৃত সুদ আয় দাঁড়িয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪৯৯ কোটি টাকা। ঋণের সুদ আয় থেকে আমানতের সুদ বাদ দেওয়ার পর যে আয় হয়, সেটিই প্রকৃত সুদ আয় হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রকৃত সুদ আয় কমলেও কোম্পানিটির পরিচালন আয় আগের বছরের চেয়ে ৯১ কোটি টাকা বা ১৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত বছর আইডিএলসির পরিচালন আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২৬ কোটি টাকায়। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৬৩৫ কোটি টাকা।

গত বছর ভালো মুনাফা করার কয়েকটি কারণের কথা জানালেন আইডিএলসি ফাইন্যান্সের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ জাভেদ নুর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছর দেশে ঋণের চাহিদা কম ছিল। এ কারণে অতিরিক্ত তারল্যের একটি বড় অংশ সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেছি। বিল-বন্ডের সুদ হারও ছিল বেশি, তাই সেখান থেকে আমরা ভালো আয় করেছি। আবার মন্দ ঋণ বা খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনায়ও আমরা খুব ভালো করেছি। গত বছর আমাদের ঋণ খুব বেশি বাড়েনি। কিন্তু খেলাপি ঋণ আমরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমিয়েছি। ফলে নিরাপত্তা সঞ্চিতির পরিমাণও কমেছে। আবার দক্ষতার সঙ্গে আমরা পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা করেছি। সব মিলিয়ে তাই বছর শেষে আমাদের মুনাফা ৩২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।’

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর আইডিএলসি নিরাপত্তা সঞ্চিতি বাবদ সংরক্ষণ করেছে ৭০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৯৮ কোটি টাকার বেশি। সেই হিসাবে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ বাবদ সাশ্রয় হয়েছে ২৮ কোটি টাকা।

আইডিএলসি ১৯৯২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৫ সালে। সেই হিসাবে এটি ৪০ বছরের পুরোনো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৪১৫ কোটি টাকা। শেয়ারবাজারে এটি ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি হিসেবে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে এটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৩০ টাকা ৫০ পয়সা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ