এপিলেপসি বা মৃগীরোগ কি ভালো হয়
Published: 26th, February 2025 GMT
খিঁচুনি হওয়া মানেই কিন্তু মৃগীরোগ নয়। কারণ, নানা কারণে খিঁচুনি হতে পারে, যেমন প্রচণ্ড জ্বর, রক্তে লবণের পরিমাণ কমে যাওয়া, মস্তিষ্কে প্রদাহ অথবা স্ট্রোক। কিন্তু তেমন কোনো অন্তর্নিহিত কারণ ছাড়া যদি বারবার খিঁচুনি হয়, তবে তাকে মৃগীরোগ বা এপিলেপসি বলে।
আমাদের সমাজে মৃগীরোগীরা বেশ অবহেলিত। অনেকের ধারণা, মৃগীরোগীরা অভিশপ্ত; এ রোগ কখনো ভালো হয় না। এখনো গ্রামগঞ্জে এটিকে ভূত বা জিনে ধরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও ৯০ শতাংশ মৃগীরোগী ওষুধ সেবনে ভালো থাকেন এবং ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী দুই থেকে পাঁচ বছর ওষুধ খেয়ে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যান।
কেন হয়মৃগীরোগের বেশির ভাগ কারণ বংশগত বা জেনেটিক।
জন্মের সময় শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়া।
মস্তিষ্কে প্রদাহ বা এনকেফালাইটিস।
মস্তিষ্কের টিউমার।
স্ট্রোক।
মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর।
লক্ষণমৃগীরোগের প্রধান লক্ষণ হলো খিঁচুনি। অনেক সময় এর সঙ্গে মেধা বা বুদ্ধি কমে যাওয়া ও আচরণগত সমস্যাও থাকতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষামস্তিষ্কের এমআরআই এ রোগের কারণ নির্ণয়ে সহায়তা করে। ইলেকট্রোএঙ্কেফালোগ্রাম (ইইজি) পরীক্ষা মৃগীরোগের কারণ, ধরন ও চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেবে।
আরও পড়ুনঅতিরিক্ত চিন্তা করা কি কোনো রোগ২৫ জানুয়ারি ২০২৫চিকিৎসামৃগীরোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হঠাৎ করে ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। খিঁচুনি রোধে যেসব ওষুধ দেওয়া হয়, সেসবের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। সব সময় নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।
কিছু ভুল তথ্যমৃগী একটি ছোঁয়াচে রোগ।
খিঁচুনি হলে মুখে জুতা শুকাতে হয়।
খিঁচুনি হলে মুখে চামচ দিতে হয় (মনে রাখবেন, এটি করলে রোগীর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি)।
মৃগীরোগীর কার্যক্ষমতা নেই, এরা লেখাপড়ায় ভালো করবে না।
মৃগীরোগীর সন্তান হয় না বা তারা সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম।
আরও পড়ুনমুখের অস্বস্তিকর রোগ মিউকোসিল কেন হয়, চিকিৎসা ও প্রতিকার কী২৯ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এক্সপ্রেসওয়েতে ছাদ উড়ে যাওয়া বাস থেকে ‘বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সমষপুর এলাকায় প্রথমে মাইক্রোবাস তারপর কাভার্ড ভ্যান ও একটি কন্টেইনারের সঙ্গে সংঘর্ষে বরিশালগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের ছাদ ভেঙে উড়ে পড়ে এক্সপ্রেসওয়েতে।
পরপর তিন দফা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত হয় বাসে থাকা অন্তত ২০ যাত্রী। চালক বাস না থামিয়ে আহত যাত্রীদের নিয়ে ছাদবিহীন বাস চালিয়ে চলে যান ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বের লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় অভ্যন্তরীণ সড়কে। এসময় আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’ শুনে ছাদবিহীন বাসটি আটক করে জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুর্ঘটনার দেড় ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আহত বাস যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের যাত্রীবাহী বাসটি চালক বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের কামারখোলা এলাকায় পৌছলে একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাসটির। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় চালক বাসটি না থামিয়ে আরও বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকে। সমষপুর এলাকায় পৌছে অপর একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে বাসটির ছাদ বডি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। যাত্রীরা চালককে থামাতে অনুরোধ করলেও সে তা উপেক্ষা করে।
আহত যাত্রীরা জানান, চালক দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে ছাদবিহীন বাস চালিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরের পদ্মা সেতু উত্তর থানার লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় চলে আসেন। এ সময় আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’ শুনে ছাদবিহীন বাসটি আটক করে জনতা।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাকির হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় থানা, হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত শাহিন নামের এক যাত্রীকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
ওসি জানান, চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বাসটি রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”
ঢাকা/রতন/টিপু