কুষ্টিয়ার খোকসায় মনিরুজ্জামান কাজল নামে উপজেলা বিএনপির সাবেক নেতার বিরুদ্ধে এক মুক্তিযোদ্ধার নির্মাণাধীন টিনের ঘর ভেঙে দেওয়ার পর অপর দুই নারীর মার্কেট ও বাড়ির দেয়াল ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়ে থানায় গেলেও প্রতিপক্ষের হুমকিতে মামলা না করেই থানা থেকে ফিরে যান ভুক্তভোগীরা।

ঘটনা নিশ্চিত করে খোকসা থানার ওসি শেখ নাইমুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যরা মামলা করতে থানায় এসেছিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে মামলা না করেই ফিরে গেছেন।

মনিরুজ্জামান কাজল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও খোকসা উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আনিসুজ্জামান স্বপনের বড় ভাই।

জানা গেছে, কাজল একটি নতুন রাস্তা তৈরি ও অপর একটি রাস্তা প্রশস্ত করার কথা বলে রেলওয়ে থেকে স্ত্রীর নামে ইজারা নেওয়া রফিকুল আলম তালম নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার জমি দখল নেওয়ার চেষ্টা করে আসছিলেন। সোমবার সকালে কাজলের লোকজন প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে নির্মাণাধীন ঘর ভেঙে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ইজারাকৃত ১০০ ফুট লম্বা জমি দখল করে নেয়। পরে কাজলের লোকজন দিলরুবা রহমান ও তাঁর বোন আঞ্জুদিলারা বেগম নামে দুই নারীর মার্কেটের বারান্দা ও একটি বসতবাড়ির দেয়াল ভেঙে দিয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, সোমবার সকাল থেকে কাজলের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন তরুণ ও যুবক খোকসা রেলস্টেশন এলাকায় তাণ্ডব শুরু করে। এ সময় তারা মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম তালম, মৃত সাইদুল ইসলামের স্ত্রী দিলরুবা রহমান ও তাঁর বোন আঞ্জুদিলারা বেগমের পরিবারকে ঘরবন্দি করে ফেলে। পরে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের তাণ্ডব থামায়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম তালম জানান, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার পর তিনি ও তাঁর অন্য দুই প্রতিবেশী মামলা করতে থানায় গিয়েছিলেন। তারা ওসির সঙ্গে কথা বলে মামলার এজাহার লিখতে একটি কম্পিউটারের দোকানে যান। সেখানে হাজির হন বিএনপি নেতার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে তাঁর এক আত্মীয় ও থানা বিএনপির সাবেক নেতারা দুই দিনের সময় নিয়েছেন। 

অপর ভুক্তভোগী আঞ্জুদিলারা বেগমের ছেলে সাবেক বিজিবি সদস্য দেলোয়ার আজিজ দিলু বলেন, তিনি মামলা করতে থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি নেতারা দুই দিনের সময় নিয়েছেন। 

অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে মনিরুজ্জামান কাজলের ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হয়। তিনি কল রিসিভ করলেও কথা বলেনি। তাঁর ছোট ভাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আনিসুজ্জামানের বলেন, তিনি শুনেছেন এলাকার লোকজন রাস্তার জমি ক্লিয়ার করেছে। ওই মুক্তিযোদ্ধা গ্রাম থেকে উঠে আসা একটি রাস্তার মাথায় ঘর তুলে রাস্তা বন্ধ করেছিলেন। রাস্তাটির প্রয়োজনও ছিল। তাঁর ভাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আশা করি অন্তবর্তী সরকার জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকের এ দিনে আমরা আশা করব, যেই দায়িত্ব নিয়েছেন সেই দায়িত্বে সবাই সফল হবেন এবং বিশেষ করে অন্তবর্তী সরকার জনগণের কাছে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকেও অবশ্যই সেই প্রতিশ্রুতি পালন করব বলে শপথ নিয়েছি।

ঈদের দিন আজ সোমবার সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

ফ্যাসিবাদ সরকারের শাসনামলের থেকে ‘এবার ঈদ আনন্দময় পরিবেশে হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে প্রত্যেকটি বাংলাদেশি মানুষ যেন আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি। দোয়া চেয়েছি আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দ্রুত আমাদের কাছে ফিরে আসেন এবং আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি যেন অতি শিগগিরই আমাদের মাঝে ফিরে আসেন, সেই দোয়া চেয়েছি।

গত ১৫ বছরের ঈদের সঙ্গে এবারকার ঈদের কি পার্থক্যটা কি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক পার্থক্য। এবার আমরা মুক্ত পরিবেশে একটা আনন্দময় পরিবেশে আমরা ঈদ পালন করছি।

আজ সকাল সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান শেরে বাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে এসে তার কবরে ফুল দেন এবং দোয়া করেন। এ সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন- আহমেদ আজম খান, আমান উল্লাহ আমান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কবির রিজভী, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী, রফিক শিকদার, এসএম জাহাঙ্গীর, আমিনুল হকসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়া ও তারেকের ঈদ শুভেচ্ছা

জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পরে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদেন বলেন, আমরা দলের পক্ষ থেকে, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে এবং স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের (গণমাধ্যম) সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি… ঈদ মোবারক… আপনাদের মাধ্যমে আমরা পুরো দেশবাসীর কাছে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি… ঈদ মোবারক।

তিনি বলেন, আজকে আমরা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে এসেছিলাম। আমরা পরম করুণাময় আল্লাহতালার কাছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি। আমরা একইসঙ্গে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ট পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, একইসঙ্গে বিগত গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে যারা প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদেরও আত্মর মাগফেরাত কামনা করেছি। বিশেষ করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা এদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি এবং গণতন্ত্রের জন্য বিগগ ১৫ বছর ও জুলাই-আগস্টে যারা শহীদ হয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি।”

ফখরুল বলেন, আজকের এই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে প্রত্যেকটি বাংলাদেশি মানুষ যেন আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য আল্লাহর কাছে আমরা দোয়া করেছি। দোয়া চেয়েছি আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দ্রুত আমাদের কাছে ফিরে আসেন এবং আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি যেন অতি শিগগিরই আমাদের মাঝে ফিরে আসেন সেই দোয়া চেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা যে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করেছি, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছি, মানুষের ভাতের অধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছি, মানবাধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছে, সেই সংগ্রাম যেন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্য পরম আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ