সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, ১৯৭১ সালে যারা রণাঙ্গনে সরাসরি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন, শুধু তারাই মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা পাবেন। এ ছাড়া দেশ ও বিদেশে থেকে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন, কূটনৈতিক তৎপরতা ও অন্যান্য সহযোগিতা করেছেন, তারা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।

সম্প্রতি বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

ফারুক-ই-আজম বলেন, বর্তমান প্রচলিত আইনে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি, এমন আট ধরনের ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে পরিবর্তন আনার জন্য ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০২২’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া করে এ বিষয়ে অংশীজনদের মতামতও নেওয়া হয়েছে। খসড়াটি মার্চের প্রথম সপ্তাহে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।

সনদধারী অমুক্তিযোদ্ধাদের অপসারণের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি রয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনে আমরা কিছু সংশোধন আনতে চাচ্ছি। বড় ধরনের সংশোধন আসবে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে।

নতুন আইনের মূল দিকগুলো হলো-

১.

রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা: যারা ১৯৭১ সালে সরাসরি অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তারাই কেবল ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।

২. মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী: জনমত গঠন, কূটনৈতিক সহায়তা, বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচার, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী, চিকিৎসা সহায়তাকারী ব্যক্তিদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

৩. বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পর্যালোচনা: অতীতে যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে কেউ যদি নতুন সংজ্ঞার আওতায় না পড়েন, তবে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে।

৪. বয়সসংক্রান্ত নীতি: মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১২ বছর ৬ মাস। এটি নিয়ে মামলা থাকায় আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর নতুন আইন কার্যকর হবে।

৫. ভুল তথ্য প্রদানকারীদের জন্য সুযোগ: যারা ভুল তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা নিয়েছেন, তাদের ২৬ মার্চের মধ্যে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।

জানা গেছে, বর্তমান আইনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে ‘শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সব ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।’  তবে নতুন খসড়ায় এই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া নতুন আইনে কেবল রণাঙ্গনে লড়াই করা ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামে পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের জন্য আলাদা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ উপাধি প্রবর্তন করা হচ্ছে।

বিএইচ

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: ম ক ত য দ ধ র সহয গ উপদ ষ ট র জন য ন আইন

এছাড়াও পড়ুন:

আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

আজ ১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে।

শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়। প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয় এম এ জি ওসমানীকে।

সেই সরকারের শপথ গ্রহণের স্থান বৈদ্যনাথতলাকে মুজিবনগর নামকরণ করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন ১২ জন আনসার সদস্য।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়। মুজিবনগর সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

কর্মসূচি

দিবসটি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (বীর প্রতীক) আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৪৩ মিনিটে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে গার্ড অব অনারের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন উপদেষ্টা।

ফারুক-ই-আজমের সঙ্গে থাকবেন তাঁর একান্ত সচিব লে. কর্নেল (অব.) মো. আবদুল গাফফার, তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন এবং সহকারী একান্ত সচিব আমিরুল ইসলাম।

দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আলোচনা সভা এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৫ আগস্ট শতাধিক তরুণ-যুবক মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে ঢুকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেন। ‘১৭ এপ্রিলের গার্ড অব অনার’ নামে ভাস্কর্যটিসহ অন্য ভাস্কর্যগুলোতেও ভাঙচুর চালানো হয়।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, এবার বড় পরিসরে মুজিবনগর দিবস পালন করা হচ্ছে না। মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের ভাস্কর্যগুলো আবার নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব
  • আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস
  • বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠক আজ