শুধু রণাঙ্গনের যোদ্ধারাই ‘মুক্তিযোদ্ধা’, বাকিরা সহযোগী: উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম
Published: 26th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, ১৯৭১ সালে যারা রণাঙ্গনে সরাসরি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন, শুধু তারাই মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা পাবেন। এ ছাড়া দেশ ও বিদেশে থেকে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন, কূটনৈতিক তৎপরতা ও অন্যান্য সহযোগিতা করেছেন, তারা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুক-ই-আজম বলেন, বর্তমান প্রচলিত আইনে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি, এমন আট ধরনের ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে পরিবর্তন আনার জন্য ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০২২’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া করে এ বিষয়ে অংশীজনদের মতামতও নেওয়া হয়েছে। খসড়াটি মার্চের প্রথম সপ্তাহে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
সনদধারী অমুক্তিযোদ্ধাদের অপসারণের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি রয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনে আমরা কিছু সংশোধন আনতে চাচ্ছি। বড় ধরনের সংশোধন আসবে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে।
নতুন আইনের মূল দিকগুলো হলো-
১.
২. মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী: জনমত গঠন, কূটনৈতিক সহায়তা, বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচার, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী, চিকিৎসা সহায়তাকারী ব্যক্তিদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
৩. বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পর্যালোচনা: অতীতে যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে কেউ যদি নতুন সংজ্ঞার আওতায় না পড়েন, তবে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে।
৪. বয়সসংক্রান্ত নীতি: মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১২ বছর ৬ মাস। এটি নিয়ে মামলা থাকায় আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর নতুন আইন কার্যকর হবে।
৫. ভুল তথ্য প্রদানকারীদের জন্য সুযোগ: যারা ভুল তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা নিয়েছেন, তাদের ২৬ মার্চের মধ্যে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
জানা গেছে, বর্তমান আইনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে ‘শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সব ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।’ তবে নতুন খসড়ায় এই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া নতুন আইনে কেবল রণাঙ্গনে লড়াই করা ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামে পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের জন্য আলাদা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ উপাধি প্রবর্তন করা হচ্ছে।
বিএইচ
উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: ম ক ত য দ ধ র সহয গ উপদ ষ ট র জন য ন আইন
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্বের লড়াই চলমান: বজলুর রশীদ
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্ব সংগঠিত হয়েছে। এখন দ্বিতীয় পর্বের লড়াই চলমান।’
বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি সংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, “পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে যে বৈষম্য ছিল তা নিরসনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। গত ৫৪ বছর ধরে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে গিয়ে দেশ পরিচালনা করার কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
শ্রদ্ধার ফুলে সিক্ত স্মৃতিসৌধের বেদি
ছাত্রদলের অভিযোগ
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকে একক সম্পত্তি বানানোর চেষ্টা চলছে
তিনি আরো বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্যের চেতনা, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। সেই চেতনা বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্ব সংগঠিত হয়েছে ১৯৭১ সালে, দ্বিতীয় পর্বের লড়াই এখন চলমান। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা শোষনমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা যতদিন বাস্তবায়িত না হবে, ততদিন এই লড়াইকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।”
ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ