সকালেও বাড়ির উঠানজুড়ে দস্যিপনা করে ছুটেছে দুই বছরের শিশুটি। তাকে সেখানে খেলতে দিয়ে রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন মা। কিছুক্ষণ পরই পানিভর্তি একটি বালতি থেকে শিশুটির নিথর দেহ উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা।

আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ধুরপাড়া ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আছিয়া (২) নামের শিশুটি ওই এলাকার কৃষক ইসমাইল হোসেনের মেয়ে।

পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সবার অগোচরে শিশুটি খেলতে খেলতে বাড়ির আঙিনার কোনায় থাকা টিউবওয়েলের পাড়ে চলে যায়। সেখানে একটি বালতিতে পানি ভরা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, পানি নিয়ে খেলার একপর্যায়ে বালতিতে পড়ে ডুবে যায় শিশুটি। শিশুটিকে আঙিনায় আর দেখতে না পেয়ে তার মা টিউবওয়েলের পাড়ে ছুটে যান। এ সময় শিশুটিকে বালতির পানি থেকে ডুবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনেরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, ‘বালতির পানিতে ডুবে ওই শিশুর মৃত্যুর খবর শুনেছি। এই বয়সের শিশুরা যখন নতুন হাঁটতে শেখে, তখন তাদের চোখের আড়াল করা ঠিক নয়। পরিবারের সদস্যেরা একটু সচেতন হলেই এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

তাইওয়ান ঘিরে চীনের সামরিক মহড়া

তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব উপকূলে গতকাল মঙ্গলবার বড় ধরনের সামরিক মহড়া করেছে চীন। বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কীকরণ হিসেবে এ মহড়া চালানো হয়। একই সময় তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং তেকে ‘পরজীবী’ বলে অভিহিত করা হয়। চীনের এ মহড়ার জবাব দিতে তাইওয়ানের পক্ষ থেকে পাল্টা যুদ্ধজাহাজ পাঠানো হয়।

গত বছরেও তাইওয়ান ঘিরে বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালিয়েছিল চীন; কিন্তু

এবার গত বছরের মতো আনুষ্ঠানিক নাম দিয়ে মহড়া করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের এশিয়া সফরের আগে ও লাইয়ের কথার জবাব দিতে এ মহড়া করেছে চীন। উল্লেখ্য, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চীনের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে চীন যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি, বিমানবাহিনী ও স্থলবাহিনীর সমন্বয়ে মহড়া করে। এ মহড়ায় তাইওয়ানকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলার বিষয়টি যুক্ত ছিল। এ ছাড়া ভূমি ও সাগর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার বিষয়টি যুক্ত করে বেইজিং। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চীনের শানডং এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার গ্রুপ সোমবার তাদের নজরদারি এলাকায় প্রবেশ করে। তাইওয়ানও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সামরিক বিমান ও জাহাজ মোতায়েন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে।

তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করে চীন। সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে চীনকে বিদেশি শত্রু শক্তি বলে আখ্যায়িত করেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয় চীন।

সামরিক মহড়ার ঘোষণার সঙ্গে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টকে কার্টুন আকৃতির একটি পোকামাকড় হিসেবে দেখানো হয়েছে, যাকে চপস্টিক দিয়ে ধরে রাখা হয়েছে এবং নিচে জ্বলন্ত তাইওয়ান।

ভিডিওতে লেখা ছিল, তাইওয়ানকে বিষাক্ত করছে এই পরজীবী। পরজীবী দ্বীপটিকে ফাঁপা করে দিচ্ছে। পরজীবী নিজ ধ্বংসের পথ তৈরি করছে।

তাইওয়ান সরকার এই মহড়ার নিন্দা জানিয়েছে। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলেছে, চীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সমস্যা সৃষ্টিকারী। তাইওয়ান নিজেদের প্রতিরক্ষার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তাইওয়ান সরকার বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে,

কেবল দ্বীপের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি তাইওয়ান ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। তাইওয়ানের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ১০টির বেশি চীনা সামরিক জাহাজ তাইওয়ানের ২৪ নটিক্যাল মাইল (৪৪ কিলোমিটার)–সংলগ্ন অঞ্চলের কাছাকাছি চলে এসেছিল এবং তাইওয়ান প্রতিক্রিয়া জানাতে নিজস্ব যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা চীনা সামরিক বাহিনীর দ্বারা কোনো সরাসরি গুলিবর্ষণের ঘটনা শনাক্ত করতে পারেনি। তবে কমপক্ষে ৭১টি চীনা সামরিক বিমান এবং ১৩টি নৌবাহিনীর জাহাজ মহড়া করছে। মহড়া কখন শেষ হবে তা তারা জানে না।

তাইওয়ানের মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সান লি-ফ্যাং বলেছেন, তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনী তাদের প্রস্তুতির স্তর বাড়িয়েছে যাতে চীন যুদ্ধের জন্য মহড়া এবং আমাদের ওপর হঠাৎ আক্রমণ চালাতে না পারে।

শীর্ষস্থানীয় তাইওয়ানের নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ অনুযায়ী, চীন ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনো ‘পরিলক্ষিত সংঘর্ষ’ এড়াতে চায়। কারণ, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন বাণিজ্য আলোচনার আগে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চায় না।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই মহড়া জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জাতীয় ঐক্য রক্ষার জন্য বৈধ এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ