যুক্তরাজ্যের ভিসা আবেদনকারীদের দ্রুত সেবা দিতে বাংলাদেশসহ ১৪১টি দেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চ্যাটবট চালু করেছে ‘ভিএফএস গ্লোবাল’। ভিসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, যুক্তরাজ্যের ভিসা–সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন ভয়েস কমান্ড ও বার্তার মাধ্যমে ইনপুট করলেই এআই চ্যাটবটটি প্রয়োজনীয় তথ্য ভয়েস বার্তার মাধ্যমে জানাতে পারে। এর ফলে সহজেই ভিসাসম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা পাওয়া যাবে। আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ভিএফএস গ্লোবাল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারীদের সেবা উন্নত করতে সম্প্রতি জেনারেটিভ এআইচালিত চ্যাটবট চালু করা হয়েছে। এআই চ্যাটবটটি উন্নত জেনারেটিভ এআইপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের মতো কথোপকথনের আদলে তাৎক্ষণিকভাবে নির্ভুল ও প্রয়োজনীয় তথ্য জানাতে পারে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে অবস্থিত ভিএফএস গ্লোবালের এআই টিম চ্যাটবটটি তৈরি করেছে।

ভিএফএস গ্লোবালের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবিন কারকারিয়া বলেন, ‘প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন সব সময়ই ভিএফএস গ্লোবালের কার্যক্রমের মূল ভিত্তি। আমরা এই এআইনির্ভর সমাধান চালু করতে পেরে আনন্দিত, যা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারীদের ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত করবে। আমরা আমাদের ক্লায়েন্ট সরকার ও গ্রাহকদের জন্য ভিসা ও কনস্যুলার পরিষেবায় পরবর্তী উন্নতিসাধনের লক্ষ্যে বিভিন্ন এআই ও ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য তৈরি করছি।’

ভিএফএস গ্লোবালের তথ্যমতে, এআই চ্যাটবটটি মূলত নিজ নিজ ভিএফএস গ্লোবাল কান্ট্রি-টু-ইউকে ওয়েবসাইটগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। ভিএফএস গ্লোবালের সুরক্ষিত নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সেবাগ্রহীতাদের তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চ্যাটবটটি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রমজানে শেষ নয় রোজা

রাসুল (সা.) রমজান চলে যাওয়ার পরও সাহাবিদের রোজা পালন অব্যাহত রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন। অর্থাৎ, রোজা শুধু রমজানের ইবাদত নয়। রমজানের রোজা তো ফরজ, বাকি সারা বছর আরও রোজা আছে সেগুলো সুন্নত।

বছরের অন্যান্য সময়ের রোজা

রাসুল (সা.) অধিক পরিমাণে নফল রোজা পালন করতেন। রোজার জন্য নিষিদ্ধ পাঁচ দিন ছাড়া বছরের যেকোনো সময় নফল রোজা রাখা যায়। তবে নির্দিষ্ট কিছু কিছু সময়ের রোজা সাধারণ নফল রোজার থেকে বেশি ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) গুরুত্বসহকারে সেই রোজাগুলো পালন করতেন। তিনি আরও যেসব নফল রোজা পালন করতেন তা হলো :

১. শাওয়াল মাসের রোজা : নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে অত:পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে সে যেন গোটা বছর রোজা রাখে। ইবনে মাজাহ, হাদিস ২৪৩৩

২. আরাফা দিবসের রোজা : জিলহজ মাসের নয় তারিখে—যাকে আরাফা দিবস বলা হয়—রোজা রাখা সম্পর্কে নবীজিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন : আরাফা দিবসের রোজা সম্পর্কে আল্লাহর কাছে আশা করি যে, তা বিগত এক বছর ও আগত এক বছরের পাপের কাফফারা হবে। (মুসলিম, হাদিস: ২,৮০৩)

তবে যারা হজ পালন করছেন, তারা এ দিন রোজা রাখবে না।

আরও পড়ুনউয়ায়েস করনির কাহিনি০৮ মার্চ ২০২৫

৩. মহররম মাসের রোজা : রাসুল (সা.) বলেন, রমজান মাসের পর সর্বোত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাস মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম নামাজ হল রাতের নামাজ। (মুসলিম, হাদিস: ২,৮১২)

৪. আশুরার রোজা : আশুরা অর্থাৎ, মহররমের ১০ তারিখ উপলক্ষে রোজা সম্পর্কে নবীজিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, তা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা। (মুসলিম, হাদিস: ২,৮০৪; তিরমিজি, হাদিস: ২,৮০৯)

তবে রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা আশুরা দিবসে রোজা পালন কর এবং তাতে ইহুদিদের বিরোধিতা কর। তোমরা আশুরার একদিন পূর্বে অথবা একদিন পরে (যুক্ত করে) রোজা পালন করবে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২,১৫৪)

৫. শাবান মাসের রোজা : আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে শাবান মাস ব্যতীত অন্য মাসে অধিক পরিমাণে নফল রোজা রাখতে দেখি নি। (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬৯)

৬. প্রতি মাসে ৩ দিন রোজা রাখা : প্রতি চান্দ্র মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে রোজা রাখা নবীজির (সা.) আমল ছিল। এই তিন দিনকে হাদিসের পরিভাষায় ‘আইয়ামুল বিয’ বলা হয়। আইয়ামে বিযের রোজা সম্পর্কে ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) সফরে ও শহরে কোনও অবস্থাতেই এ-রোজা ত্যাগ করতেন না।’ (নাসায়ি, হাদিস: ২,৩৪৫)

আরও পড়ুনযে সাহাবির মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল ০৮ মার্চ ২০২৫

রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মাসে তিনটি রোজা ও এক রমজানের পর পরবর্তী রমজানে রোজা পালন পূর্ণ বছর রোজা পালনের সমান।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৮০৪)

৭. সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা : সপ্তাহের এই দু’দিন—সোমবার ও বৃহস্পতিবার—রোজা পালন করা সুন্নত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর সমীপে উপস্থাপন করা হয়। কাজেই আমি পছন্দ করি যখন আমার আমলের উপস্থাপন হবে তখন আমি রোজা অবস্থায় থাকব।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৭২৫)

৮. একদিন পর পর রোজা পালন : ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে (নফল রোজার মধ্যে) সবচে’ প্রিয় রোজা হলো দাউদ (আ.)-এর রোজা। তিনি একদিন রোজা রাখতেন এবং একদিন ভাঙতেন। (মুসলিম, হাদিস: ১,১৫৯)

রমজানের পরে রোজা আদায়কারীর কাছে প্রত্যাশা থাকে, রমজানের শিক্ষা থেকে সে আরও বেশি করে রোজার ইবাদত পালনের মধ্য দিয়ে আল্লাহর আনুগত্য প্রদর্শন করবে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) এমনভাবে নফল রোজা পালন করতেন যে আমরা ধরে নিতাম তিনি আর বিরতি দেবেন না। আবার এমনভাবে রোজা পরিত্যাগ করতেন যে আমরা মনে করতাম তিনি আর রোজা পালন করবেন না। (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬৯)

আরও পড়ুনশয়তানের ধোঁকার কাহিনি০৭ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ