প্রীতি জিনতার অভিনয় ক্যরিয়ার নিয়ে এখন আর তেমন কোনো আলোচনা শোনা যায় না। বছরের যেটুকু সময় তাঁকে ঘিরে আলোচনা চলে, তার পুরোটাই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট দল পাঞ্জাব কিংসকে নিয়ে। কারণ, এ দলের মালিক পক্ষে অন্যতম একজন প্রীতি। এবার অভিনয় ও ক্রিকেট কোনোটাই নয়, প্রীতিকে ঘিরে জোর আলোচনা ব্যাংক ঋণ নিয়ে।

ক’দিন ধরে শোনা যাচ্ছে, নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রীতি জিনতার ১৮ কোটি টাকার ঋণ মওকুফ করেছেন এবং এর নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি। ‘কংগ্রেস কেরালা’ নামে এক এক্স হ্যান্ডেল অ্যাকাউন্ট থেকে এমন বিস্ফোরক দাবি করা হয়েছে। 

বলিউড এই তারকার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাতা নিয়ন্ত্রণ করার ভার বিজেপির হাতে তুলে দিয়েছেন, আর তার জন্যই নাকি এই বিপুল পরিমাণ টাকা পেয়েছেন।

এ খবরের পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছে, কংগ্রেস কেরালা সোমবার এক্স-এ লিখেছে, ‘প্রীতি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো বিজেপিকে হস্তান্তরিত করেছেন। পরিবর্তে বিজেপি প্রীতির ১৮ কোটির ঋণ মওকুফ করে দিয়েছে। আর গত সপ্তাহে সেই ব্যাংকটিই দেউলিয়া হয়ে গেছে। আমানতকারীরা তাদের টাকা ফিরে পেতে রাস্তায় নেমেছেন।’ 

এমনই খবর যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে, তখন বাধ্য হয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন অভিনেত্রী। এ খবরকে সম্পূর্ণ ভুয়ো বলে দাবি করেছেন তিনি। শুরুতেই প্রীতি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সমস্ত অ্যাকাউন্ট সামলান।

পাশাপাশি চাছাছোলা ভাষায় আরও লেখেন ‘এই ভুয়া খবর রটানোর জন্য লজ্জা হওয়া উচিত। আমি হতবাক যে, একটা রাজনৈতিক দল বা তাদের প্রতিনিধি এ ধরনের ভুয়া খবর প্রচার করছে। আর আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে জঘন্য গসিপ এবং ক্লিকবেটের খেলা চলছে। এবার সবাইকে জানাই যে, একটা ঋণ আমি নিয়েছিলাম, সেটা শোধও আমি করেছি, সেটাও ১০ বছর আগের ঘটনা। আশা করি, এবার বিষয়টা পরিষ্কার হবে এবং ভবিষ্যতে যেন আর কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয়।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প র ত জ নত

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীপুর বেড়িবাঁধে আশ্রিতরা উচ্ছেদ আতঙ্কে, পুনর্বাসনের দাবি

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে বুড়ির ঘাট পর্যন্ত যে বেড়িবাঁধটি রয়েছে, তার দুইপাশে অন্তত ৫ শতাধিক বসতঘর রয়েছে। বসবাসকৃত বাসিন্দাদের সংখ্যা কয়েক হাজার। নদীর ভাঙার কবলে পড়ে ভোলার জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ভূমিহীন লোকজন এখানে এসে বসতি গড়েছেন। বাসিন্দাদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের। নদীতে মাছ শিকার এবং অন্যের জমিতে কৃষিকাজ কিংবা দিনমজুরি দিয়ে চলে তাদের সংসার। ফলে নিজস্ব জমি কেনার মতো সাধ্য নেই এসব পরিবারের।
 
বাঁধের সংস্কার কাজ চলায় এসব আশ্রিত পরিবার এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে ভূগছে। পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসরত এই ভূমিহীন বাসিন্দারা। 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে তারা। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়। 

বেড়িবাঁধের মজুচৌধুরীর হাটের উত্তর অংশে কাজ চলমান রয়েছে, কিন্তু দক্ষিণ অংশের বাসিন্দারা উচ্ছেদ আতঙ্কে বাঁধের সংস্কার কাজে আপত্তি জানিয়েছেন। সংস্কারের আগে তারা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছেন।

মানববন্ধনকারীরা জানান, তাদের নিজস্ব কোন জায়গা নেই। কবরের জায়গা পর্যন্ত নেই। বেড়িবাঁধের পাশে ঘর করে তারা বসবাস করছেন। নদীতে মাছ শিকার আর অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

তাদের দাবি, বাঁধ সংস্কারের কারণে তাদের উচ্ছেদ করে দিলে তাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই পুনর্বাসনের আগে তারা বাঁধের কাজ শুরু করতে দেবে না। 

মানববন্ধনে আসা ভূমিহীন বৃদ্ধ এবং বিধবা আফিয়া খাতুন জানান, মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে নিমতলা নামক এলাকায় দুটি বসতঘর রয়েছে। ৮ সদস্য নিয়ে তারা ওই দুইঘরে বসবাস করেন। বাঁধ সংস্কারের কারণে তাদের দুটি বসতঘরও উচ্ছেদের মধ্যে পড়বে। কিন্তু কোথায় যাবেন তিনি, সে দুঃচিন্তা ভর করছে তার উপর। 

আফিয়া খাতুন আরও জানান, তাদের আদি নিবাস ভোলা জেলাতে। অর্ধশত বছর আগে মেঘনা নদীর ভাঙনের পর পরিবারের সাথে চলে আসেন লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট এলাকায়। প্রায় ৩০ বছর আগে মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে বেড়িবাঁধে ঢালে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। পূর্বে তার বাবা-মার সাথে ছিলেন, এখানেই তার বিয়ে হয়েছে। স্বামী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। স্বামী মারা গেছে, এখন সন্তান এবং নাতি-নাতনীদের নিয়ে বসবাস করছেন। নিম্ন আয়ের পরিবার হওয়ায় এতো বছরেরও নিজস্ব জমি কেনার সাধ্য হয়নি। 

মানববন্ধনে আসা রহিমা বেগম বলেন, “আমার বসবাস ওই বেড়িবাঁধের পাশেই। ভোলাতে আমাদের বসতি ছিল, সাতবার ভাঙার কবলে পড়ে। জন্মের পর থেকে এখানেই আছি। আমাদের পরিবারের মোট পাঁচটি ঘর। বাঁধ সংস্কার হলে তাদের ঘরগুলো সরিয়ে নিতে হবে।” 

৬০ বছরের বৃদ্ধ তৈয়বা বেগম জানান, তার পরিবারের ৫ সদস্য। ঘরে বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে রয়েছে। তাকে নিয়ে রয়েছেন বেকাদায়। এরই মধ্যে ঘর ভেঙে চলে যেতে হবে। তিনিও এখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে ভূমিহীনদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/লিটন/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ