অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের বানানো ড্রোন উড্ডয়ন দেখলেন বিমানবাহিনীর প্রধান
Published: 26th, February 2025 GMT
লালমনিরহাটে বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের বানানো ড্রোন উড্ডয়ন দেখলেন বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এই ড্রোন উড্ডয়ন করা হয়।
এর আগে ড্রোন নির্মাণ কার্যক্রম বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য–উপাত্ত উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যারোস্পেস বিভাগের চেয়ারম্যান গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুর রহমান বকাউল।
এ সময় সাইফুর রহমান বকাউল বলেন, আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস (এআইএএ) ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিবছর ডিজাইন অ্যান্ড ফ্লাইয়ের (ডিবিএফ) ওপর বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। সূচনালগ্ন থেকে এই প্রতিযোগিতা বিশ্বব্যাপী অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এ বছরের ৬ এপ্রিল এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উদ্ভাবনী বিমানের নকশা, নির্মাণ ও উড্ডয়নের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে প্রথমবারের মতো অংশ নিতে যাচ্ছেন। এই প্রতিযোগিতার জন্য একটি ড্রোনের নকশা করা হয়েছে, যা পে-লোডের সঙ্গে অন্য একটি গ্লাইডারকে বহন করবে। গ্লাইডারটির কোনো নিজস্ব ইঞ্জিন ছাড়াই তার অ্যারোডাইনামিকস বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে পরিচালিত হবে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ড্রোনটি স্বয়ংক্রিয় নজরদারি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও অন্যান্য খাতে ব্যবহৃত হতে পারে। অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা ও নতুন নতুন উদ্ভাবনের কার্যক্রম চলমান। এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে দুটি প্রোটোটাইপ ড্রোন আবিষ্কার করা হয়েছে, যার ট্যাক্সি টেস্ট ও ফ্লাইট টেস্ট শেষ হয়েছে।
২০১৯ সালে বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। এর স্থায়ী ক্যাম্পাস লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্র নগর ইউনিয়নের হাড়িভাঙ্গা বিমানবন্দর এলাকায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের আদালতে ঝুলে রয়েছে ৫ কোটি মামলা
অভূতপূর্ব সংকটের মুখোমুখি ভারতের বিচারব্যবস্থা। বিভিন্ন আদালতে জমে থাকা মামলার সংখ্যা গত বছর ৫ কোটি ছাড়িয়েছে। ‘ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট, ২০২৫’ এই হিসাব দিয়েছে। রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত উচ্চ ও নিম্ন আদালতে মুলতবি মামলার সংখ্যা ৫ কোটিরও বেশি। গত চার বছরে এই হার বৃদ্ধি হয়েছে ৩০ শতাংশ। রিপোর্টের মতে, যা গভীর উদ্বেগের। দেশের বিচারব্যবস্থা এই গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ।
রিপোর্টের পর্যবেক্ষণ, ই-ফাইলিং ও ডিজিটাইজেশনের মতো প্রযুক্তির সাহায্য উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হলেও সমস্যা দূর হচ্ছে না কাঠামোগত সমস্যার সমাধান না হওয়ায়। কাঠামোগত সংস্কারের অভাবের দরুন প্রযুক্তির ব্যবহারও মামলার জোয়ার ঠেকাতে পারছে না। ফলে জনমনে হতাশা বাড়ছে। নড়ে যাচ্ছে বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের ভরসা। কারাগারগুলোয় উপচে পড়ছে ভিড়। এ কারণে সৃষ্টি হচ্ছে নানা ধরনের সংকট।
ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট জানাচ্ছে, দেশের উচ্চ আদালতগুলোয় মোট মুলতবি মামলার ৫১ শতাংশ ঝুলে রয়েছে পাঁচ বছর ধরে। উচ্চ আদালতগুলোর মধ্যে পাঞ্জাব-হরিয়ানা ও এলাহাবাদ হাইকোর্টে মুলতবি থাকা মামলার হার সবচেয়ে বেশি। ৬০ শতাংশ। উচ্চ আদালতের তুলনায় নিম্ন আদালতগুলোর হাল কিছুটা ভালো। ২২ রাজ্যের নিম্ন আদালতে দায়ের হওয়া মামলার ২৫ শতাংশ ঝুলে রয়েছে তিন বছর ধরে। এই রাজ্যগুলোর মধ্যে বিহারের হাল সবচেয়ে খারাপ। সেখানে নিম্ন আদালতে তিন বছরের বেশি ঝুলে আছে ৭১ শতাংশ মামলা। পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা ও উত্তর প্রদেশে এই হার ৪৫ শতাংশ। দেশের ১০ রাজ্যের নিম্ন আদালতের ২৫ শতাংশ মামলা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে মুলতবি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিচারের আশায় মামলাকারীদের কাটাতে হচ্ছে দশ–দশটা বছর।
ইন্ডিয়া জাস্টিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সংকটের প্রধান কারণ, বিচারকদের দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি। ২০২২ সালে রেকর্ডসংখ্যক বিচারক নিয়োগ সত্ত্বেও দেশের নিম্ন আদালতগুলোয় গড়ে ২১ শতাংশ ও উচ্চ আদালতে গড়ে ৩৩ শতাংশ পদ এখনো খালি। উচ্চ আদালতে প্রতি তিনজনে একটি ও নিম্ন আদালতে প্রতি পাঁচজনে একটি পদ শূন্য। ফলে বিচারপতিদের ওপর সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় চাপ। বিচারব্যবস্থা ভুগছে গতিমন্থরতায়।