জয়পুরহাটে ইন্টারনেট সেবার ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে হামলা-মারধর, আহত ১৫
Published: 26th, February 2025 GMT
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ইন্টারনেট সেবার ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে হামলা ও মারধরে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের পাকুরদাড়িয়া গ্রামের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সাতজনকে গতকাল রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হায়দার জানান, আহত ব্যক্তিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিলকপুর বাজারে তিলকপুর নেটওর্য়াক নামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট থেকে লাইন নিয়ে পাকুরদাড়িয়া গ্রামে গ্রাহকদের সংযোগ দিয়েছিলেন ওই গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। সম্প্রতি তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক বেলাল হোসেন ও সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধে। এ ঘটনার পর সাদ্দাম হোসেন রাজশাহীর একটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের লাইনের সংযোগ নেন। আক্কেলপুর উপজেলায় ওই ব্রডব্যান্ডের সংযোগের অনুমতি ছিল না। তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি সাদ্দাম হোসেনকে বাদ দিয়ে নিজের লোকজন দিয়ে পাকুরদাড়িয়া গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার জন্য তার টানছিলেন। গতকাল দুপুরে তার টানার সময় বেলাল হোসেনের লোকজনকে বাধা দেন সাদ্দাম হোসেন।
ওই ঘটনার পর গতকাল বিকেলে বেলাল হোসেন চন্দরদীঘি বাজারে এসে সাদ্দামের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে বেলাল হোসেনের ওপর চড়াও হন সাদ্দাম। খবর পেয়ে বেলালের লোকজন ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেল নিয়ে সন্ধ্যায় চন্দনদীঘি বাজারে আসেন। তাঁরা সাদ্দাম হোসেন ও তাঁর সহযোগীদের খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তাঁদের না পেয়ে পাকুরদাড়িয়া গ্রামের তিন মাথা মোড়ে যান তাঁরা। সেখানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা, মারধর ও দোকান ভাঙচুর করেন। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আনা হয়।
ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন রায়কালী ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা রাজু আহাম্মেদ। তিনি বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পাকুরদাড়িয়া মোড়ে কাজ করছিলাম। আমার সামনে মোড়ের একটি দোকানে কয়েকজন ক্যারম খেলছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে তিলকপুর বাজারের ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তি এসে হামলা চালিয়ে দোকান ভাঙচুর করেন। আমরা এগিয়ে গেলে তাঁরা আমাদের মারধর করেন।’
তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক বেলালের চাচাতো ভাই সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমরা চন্দনদীঘি বাজারে বৈঠক শেষ করার পর সাদ্দাম হোসেন আমার চাচাতো ভাই বেলাল হোসেনকে মারতে উদ্যত হন। এ ঘটনার পর আমরা সন্ধ্যায় চন্দনদীঘি বাজারে এসেছিলাম। সেখান থেকে তিলকপুর ফেরার পথে পাকুরদাড়িয়া গ্রামের মোড়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়। এতে তিলকপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি বিশাল, তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক বেলাল হোসেনসহ পাঁচজন আহত হন।’
আক্কেলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন কুমার বলেন, ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ বন দ ব র ল কজন ম রধর ব যবস উপজ ল গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
পাইপলাইনে রান্নার গ্যাস আসছে কলকাতায়
কলকাতায় রান্নার এত দিন ধরে রান্নার কাজে সিলিন্ডারের গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৪ দশমিক ২ কেজি ওজনের প্রতিটি গ্যাস বোঝাই সিলিন্ডারের দাম ৮৩০ রুপি। তবে কলকাতাবাসী এখন পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস পাবেন। বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের জন্য পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে আগামী মার্চে। অক্টোবরের মধ্যে সরবরাহ শুরু হতে পারে।
ভারতের ইন্ডিয়ান অয়েল ও হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম—এ দুটি কোম্পানি রান্নার গ্যাস সরবরাহ করে আসছে কলকাতাসহ রাজ্যজুড়ে। ঢাকার মতো এই রাজ্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল না। রাজ্যবাসীও বারবার দাবি তুলেছেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়িতে বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের। তাতে গ্যাসের দাম কম পড়বে এবং বাড়িতে বাড়িতে সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের ঝক্কি থাকবে না।
সেই লক্ষ্য নিয়ে এই রাজ্যে বাড়িতে বাড়িতে রান্নার গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেয় বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি। কিন্তু বাড়িতে এই গ্যাস সরবরাহের জন্য মাটি খুঁড়ে গ্যাসলাইন বসানোতে কলকাতা পৌর করপোরেশন যে খরচ দেওয়ার কথা বলে, তাতে সায় দিচ্ছিল না গ্যাস কোম্পানি। তারা দাবি করেছিল, বাড়িতে গ্যাসলাইন বসানোর খরচ আরেকটু বাড়াতে হবে।
এ নিয়ে দেনদরবারের কারণে বছরখানেক আটকে থাকে কলকাতায় বাড়িতে বাড়িতে রান্নার গ্যাস সরবরাহের প্রকল্পটি।
অবশেষে সম্প্রতি সেই জট কেটে গেছে। ঠিক হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে কলকাতা শহরে এই রান্নার গ্যাসের পাইপলাইন বসানো হবে ইএম বাইপাসের কালিকাপুর কানেকটর থেকে যাদবপুর থানা পর্যন্ত। চার কিলোমিটার পথে পাইপ বসানোর কাজ চলবে। যদিও প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতে কলকাতা পৌর করপোরেশনের সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার পথে পাইপলাইন বসানো হবে। সংস্থার সিইও অনুপম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পূজার আগেই প্রথম পর্যায়ের চার হাজার কিলোমিটার পাইপলাইন বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
প্রস্তাবিত এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এখানে পাইপলাইন বসাতে সময় লাগতে পারে। প্রতি মিটার মাটি কাটতে খরচ ৮৪৫ রুপি করে।
সংস্থার কর্মকর্তা অনুপম মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, হুগলির দু–তিনটি পৌর এলাকাসহ উত্তর চব্বিশ পরগনার একাধিক পৌর এলাকায় পূজার পর পাইপলাইনে রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা শুরু হয়ে যাবে।’ তিনি এ কথাও বলেছেন, সারা রাজ্যে গ্যাসলাইন বসাতে যে খরচ শুধু কলকাতার বাইরে সেই খরচ ৫ গুণ বেশি হবে কলকাতায়। তাই বেশি খরচেই কালিকাপুর থেকে যাদবপুর থানা পর্যন্ত পাইপলাইন বসাবে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি।