মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কোডিং সম্পর্কে ধারণা দিতে চায় সরকার। এ জন্য ‘আওয়ার অব কোড ক্যাম্পেইন’ শুরু করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর মাউশি। এআই কোডিং সমস্যা সমাধান ও অ্যাডভান্স প্রযুক্তিতে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করতেই এবারের এ আয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইসিটি ল্যাব ব্যবহার করে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষকেরা আওয়ার অব কোড ক্যাম্পেইন পরিচালনা করবেন। ক্যাম্পেইনটি চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

গত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এ–সংক্রান্ত এক চিঠি সব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, এর আগে এ ক্যাম্পেইন ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা ছিল।

এর আগে শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এ ক্যাম্পেইন পরিচালনার গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে আঞ্চলিক উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা ক্যাম্পেইন সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করতে পারেন বলে জানানো হয়েছে।

মাউশির চিঠিতে বলা হয়েছে, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে এআই কোডিং সমস্যা সমাধানের মতো অ্যাডভান্স প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘আওয়ার অব কোড’ ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হচ্ছে। এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চিন্তা, সমস্যা সমাধান দক্ষতা, বিশ্লেষণী চিন্তার বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে যেকোনো শিক্ষার্থী ‘আওয়ার অব কোড’–এ তাঁদের যোগ্যতা অনুযায়ী কোডিং শেখার মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারবেন। ইতিমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনার আলোকে মাত্র ‘আওয়ার অব কোড’ ক্যাম্পেইনটি সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং উল্লেখযোগ্য সাড়া ফেলেছে। এতে সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে কার্যক্রমটি ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী পরিচালনা করা যেতে পারে।

আরও পড়ুনচীনের এআইআইবি গ্লোবাল ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম, দিনে ৯০ ডলারের সঙ্গে নানা সুযোগ৩ ঘণ্টা আগে

এমন পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর জন্য আওয়ার অব কোড ক্যাম্পেইন ২৮ ফেব্রুয়ারি চলমান রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।

আরও পড়ুনসুইডেনের ফুল-ফান্ডেড ৭৫০ স্কলারশিপ, জীবনযাপন খরচ, ভ্রমণ ব্যয়ের সঙ্গে নানা সুযোগ১১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক য ম প ইন কর মকর ত পর চ ল র অব ক র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

তোফাজ্জল হত্যা মামলা ফের তদন্তের নির্দেশ

চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা মামলা পুনরায় তদন্ত করে ৪ মে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান। চার্জশিটে প্রতিষ্ঠানের ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়। 

২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশের দেওয়া চার্জশিটে নারাজি দাখিল করেন অ্যাডভোকেট সেলিম জাবেদ। মামলার তদন্ত সুষ্ঠু হয়নি বলে তিনি এ নারাজি দাখিল করেন। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। তবে ওইদিন তা পিছিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়। পরে আদালত আজ এ আদেশ দেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, ভূগোল বিভাগের আল হোসেন সাজ্জাদ, ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ, ওয়াজিবুল আলম, ফিরোজ কবির, আব্দুস সামাদ, শাকিব রায়হান, ইয়াসিন আলী, ইয়ামুজ্জামান ইয়াম, ফজলে রাব্বি, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান, রাতুল হাসান, সুলতান মিয়া, নাসির উদ্দিন, মোবাশ্বের বিল্লাহ, শিশির আহমেদ, মহসিন উদ্দিন ও আব্দুল্লাহহিল ক্বাফি। তাদের মধ্যে প্রথম ৬ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার এজাহারে মোহাম্মদ আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাঁকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগ করে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তাঁর নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তিনি মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাঁকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ান। এরপর তাঁকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কয়েক ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। 

এর কয়েক দিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর ফজলুল হক মুসলিম হলে প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের ফুফাতো বোন মোসা. আসমা আক্তার। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের আদালতে মামলার আবেদন করেন তিনি। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যায় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার সঙ্গে এ মামলা একইসঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেন।

এ মামলায় শাহ মুহাম্মদ মাসুম বাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, মোত্তাকিন সাকিন শাহ, আল হোসাইন সাজ্জাদ, ওয়াজিবুল আলম, আহসান উল্লাহ, ফজলে রাব্বি, ইয়ামুস জামান, রাশেদ কামাল অনিক, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান ও মো. সুলতানকে আসামি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ