নবীনগরে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সূর্যমুখীর হাসি
Published: 26th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
রবি মৌসুমে চারদিকে নানান ফসলের সৌরভ এবং সৌন্দর্য উপভোগের জন্য মানুষ কৃষি জমিতে ভীড় করে। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরিষা এবং সূর্যমুখী। সূর্যমুখী যেমন সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে পুলকিত করে, ঠিক তেমনি ফুলের বীজ থেকে উৎপাদিত হয় উৎকৃষ্ট মানের তেল। খাবার তেলের চাহিদা মেটাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এই মৌসুমে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে প্রায় ৩০ বিঘা। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৬ টন সূর্যমুখীর বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। সূর্যমুখীর বীজ পশুখাদ্যে ব্যবহৃত হয়, তাছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে সরিষার ঘানিতে সূর্যমুখীর বীজ থেকে তেল উৎপাদন করা যায়। সূর্যমুখীর বীজ চাহিদার তুলনায় বাজারে যোগান অপ্রতুল। আগামীতে সূর্যমুখীর চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছে কৃষক।
নবীনগর উপজেলার শিবপুর, লাউরফতেহপুর, শ্রীরামপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে আরডিএস ২৭৫ জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্বাবধানে সরকারের ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিসট্যান্স প্রজেক্টের (ফ্রীপ) অর্থায়নে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করতে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে সার, বীজ ও নগদ অর্থ। এক বিঘা জমি থেকে ছয় থেকে সাত মন সূর্যমুখীর বীজ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে চাষীরা। উৎপাদিত বীজ দিয়ে তেল ছাড়াও পাওয়া যাবে খৈল। অবশিষ্ট গাছ ব্যবহার করা যাবে জ্বালানীর কাজে। ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যেই কৃষকরা সূর্যমুখী ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারবেন। ভিটামিন সমৃদ্ধ সূর্যমুখীর তেলে কোলেস্টোরেলের পরিমান খুবই কম।
লাউর ফতেহপুর গ্রামের কৃষক ঝর্ণা বেগম বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহে সূর্যমুখী চাষ করেছেন তিনি। সরকারিভাবে ফ্রীপ প্রকল্পের আওতায় বীজ, সার, বালাইনাশক, নগদ আর্থিক সহায়তা পেয়েছি।আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী বীজের কাঙ্ক্ষিত দাম পেলে ধান চাষের তুলনায় অন্তত তিন গুণ লাভ হবে।
ঝর্ণা বেগমের মতো লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় সূর্যমুখী চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকেরা। তাঁদের অনেকেই সরিষা চাষের পরিবর্তে সূর্যমুখী চাষ করছেন। অনেকে চাষাবাদ করছেন পরিত্যক্ত জমিতে।
শ্রীরামপুর ইউনিয়নের কৃষক জামির জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের পরামর্শে ফ্রীপ প্রকল্পের আওতায় এই বছর দুই বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। ইতিমধ্যে ফুল এসেছে, সম্পূর্ণ বীজ তেল হিসেবে বাজারজাত করা হবে। ফলন ভালো হলে আগামী বছরে ১০ বিঘা জমিতে আবাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
উপসহকারী কৃষি অফিসার ইকরামুল হক জানান, কৃষকদের নতুন ফসলে আগ্রহ বাড়ছে। পোকামাকড় এবং রোগ বালাইয়ের আক্রমণ হলে সাথে সাথে পরামর্শ প্রদান করছি, আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নবীনগর উপজেলায় ৫০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। বীজের সংকট না হলে ১০০ বিঘা আবাদ করার সুযোগ ছিলো।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, সূর্যমুখীর বীজে ৪০-৪৫% লিনোলিক এসিড রয়েছে, তাছাড়া এতে ক্ষতিকারক ইরোসিক এসিড নেই। হৃদরোগীদের জন্য সূর্যমুখীর তেল খুবই উপকারী।সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতেই জন্মে। তবে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে বেশী উপযোগী। ৯০-১১০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়।
এম জি
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
নবীনগরে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সূর্যমুখীর হাসি
রবি মৌসুমে চারদিকে নানান ফসলের সৌরভ এবং সৌন্দর্য উপভোগের জন্য মানুষ কৃষি জমিতে ভীড় করে। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরিষা এবং সূর্যমুখী। সূর্যমুখী যেমন সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে পুলকিত করে, ঠিক তেমনি ফুলের বীজ থেকে উৎপাদিত হয় উৎকৃষ্ট মানের তেল। খাবার তেলের চাহিদা মেটাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এই মৌসুমে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে প্রায় ৩০ বিঘা। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৬ টন সূর্যমুখীর বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। সূর্যমুখীর বীজ পশুখাদ্যে ব্যবহৃত হয়, তাছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে সরিষার ঘানিতে সূর্যমুখীর বীজ থেকে তেল উৎপাদন করা যায়। সূর্যমুখীর বীজ চাহিদার তুলনায় বাজারে যোগান অপ্রতুল। আগামীতে সূর্যমুখীর চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছে কৃষক।
নবীনগর উপজেলার শিবপুর, লাউরফতেহপুর, শ্রীরামপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে আরডিএস ২৭৫ জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্বাবধানে সরকারের ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিসট্যান্স প্রজেক্টের (ফ্রীপ) অর্থায়নে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করতে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে সার, বীজ ও নগদ অর্থ। এক বিঘা জমি থেকে ছয় থেকে সাত মন সূর্যমুখীর বীজ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে চাষীরা। উৎপাদিত বীজ দিয়ে তেল ছাড়াও পাওয়া যাবে খৈল। অবশিষ্ট গাছ ব্যবহার করা যাবে জ্বালানীর কাজে। ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যেই কৃষকরা সূর্যমুখী ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারবেন। ভিটামিন সমৃদ্ধ সূর্যমুখীর তেলে কোলেস্টোরেলের পরিমান খুবই কম।
লাউর ফতেহপুর গ্রামের কৃষক ঝর্ণা বেগম বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহে সূর্যমুখী চাষ করেছেন তিনি। সরকারিভাবে ফ্রীপ প্রকল্পের আওতায় বীজ, সার, বালাইনাশক, নগদ আর্থিক সহায়তা পেয়েছি।আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী বীজের কাঙ্ক্ষিত দাম পেলে ধান চাষের তুলনায় অন্তত তিন গুণ লাভ হবে।
ঝর্ণা বেগমের মতো লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় সূর্যমুখী চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকেরা। তাঁদের অনেকেই সরিষা চাষের পরিবর্তে সূর্যমুখী চাষ করছেন। অনেকে চাষাবাদ করছেন পরিত্যক্ত জমিতে।
শ্রীরামপুর ইউনিয়নের কৃষক জামির জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের পরামর্শে ফ্রীপ প্রকল্পের আওতায় এই বছর দুই বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। ইতিমধ্যে ফুল এসেছে, সম্পূর্ণ বীজ তেল হিসেবে বাজারজাত করা হবে। ফলন ভালো হলে আগামী বছরে ১০ বিঘা জমিতে আবাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
উপসহকারী কৃষি অফিসার ইকরামুল হক জানান, কৃষকদের নতুন ফসলে আগ্রহ বাড়ছে। পোকামাকড় এবং রোগ বালাইয়ের আক্রমণ হলে সাথে সাথে পরামর্শ প্রদান করছি, আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নবীনগর উপজেলায় ৫০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। বীজের সংকট না হলে ১০০ বিঘা আবাদ করার সুযোগ ছিলো।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, সূর্যমুখীর বীজে ৪০-৪৫% লিনোলিক এসিড রয়েছে, তাছাড়া এতে ক্ষতিকারক ইরোসিক এসিড নেই। হৃদরোগীদের জন্য সূর্যমুখীর তেল খুবই উপকারী।সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতেই জন্মে। তবে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে বেশী উপযোগী। ৯০-১১০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়।
এম জি