এমেরাল্ড অয়েলের সম্পত্তি নিলামের উদ্যোগ–সম্পর্কিত এক সংবাদ প্রতিবেদনের জেরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রশ্নের জবাবে কোম্পানিটি বলেছে, এ বিষয়ে তারা কিছু জানে না। ১৫ ফেব্রুয়ারি এক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এই সংবাদের শিরোনাম ছিল, ‘বেসিক ব্যাংক আবার এমারেল্ড অয়েলের সম্পদ নিলামের উদ্যোগ নিয়েছে’।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসইর ব্যাখ্যার প্রশ্নের জবাবে এমেরাল্ড অয়েলে উল্লিখিত জবাব দিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ২০০৩ সালের অর্থ ঋণ আদালত আইনের ধারা ৩৩ (৫) অনুযায়ী গত ৩০ জুলাই বেসিক ব্যাংক এমারেল্ড অয়েলের সম্পত্তি জব্দ ও বিক্রি করার অনুমোদন পেয়েছে, যদি না ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়। এ ছাড়া সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়, আদালত ব্যাংকের ঋণের বিপরীতে বন্ধকি সম্পত্তি নিলাম করার অনুমোদন দিয়েছে।

তবে ডিএসইকে দেওয়া জবাবে এমারেল্ড অয়েল জানিয়েছে, বেসিক ব্যাংক থেকে কোনো চিঠি বা আদালতের কোনো আদেশ/নোটিশ তারা পায়নি। কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি দুঃখজনক, কোম্পানি বেসিক ব্যাংক থেকে এমন কোনো চিঠি বা আদালতের আদেশ/নোটিশ এখনো পায়নি। বর্তমানে কোনো ধরনের তথ্য ছাড়া তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছে না।

এ পরিস্থিতিতে এমারেল্ড অয়েল স্বচ্ছতা বজায় রাখার সঙ্গে নিয়মকানুন মেনে চলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, ভবিষ্যতে যদি বেসিক ব্যাংক বা আদালত থেকে কোনো ধরনের চিঠি বা আদেশ পাওয়া যায়, তবে নিয়মিত তথ্য প্রকাশের অংশ হিসেবে যথাসময়ে সবাইকে জানানো হবে।

এমারেল্ড অয়েল দীর্ঘদিন বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানি ছিল। কোম্পানিটির মূল উদ্যোক্তারা ঋণখেলাপি ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন। ২০২১ সালে বন্ধ কোম্পানিটির পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে এটি মালিকানায় নতুন গোষ্ঠীকে যুক্ত করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তৎকালীন কমিশন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

তোফাজ্জল হত্যা মামলা পুনরায় তদন্তের নির্দেশ

চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা মামলা পুনরায় তদন্ত করে আগামী ৪ মে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান। চার্জশিটে প্রতিষ্ঠানের ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়। 

গত ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশের দেওয়া চার্জশিটে নারাজি দাখিল করেন অ্যাডভোকেট সেলিম জাবেদ। মামলার তদন্ত সুষ্ঠু হয়নি মর্মে তিনি এ নারাজি দাখিল করেন। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। তবে ওইদিন তা পিছিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়। পরে আদালত আজ এ আদেশ দেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, ভূগোল বিভাগের আল হোসেন সাজ্জাদ, ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ, ওয়াজিবুল আলম, ফিরোজ কবির, আব্দুস সামাদ, শাকিব রায়হান, ইয়াসিন আলী, ইয়ামুজ্জামান ইয়াম, ফজলে রাব্বি, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান, রাতুল হাসান, সুলতান মিয়া, নাসির উদ্দিন, মোবাশ্বের বিল্লাহ, শিশির আহমেদ, মহসিন উদ্দিন ও আব্দুল্লাহহিল ক্বাফি। এদের মধ্যে প্রথম ৬ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার এজাহারে মোহাম্মদ আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগ করে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তিনি মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ান। এরপর তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। 

এর কয়েকদিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর ফজলুল হক মুসলিম হলে প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিহতের ফুফাতো বোন মোসা. আসমা আক্তার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যায় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার সঙ্গে এ মামলা একইসঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেন।

এ মামলায় শাহ মুহাম্মদ মাসুম বাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, মোত্তাকিন সাকিন শাহ, আল হোসাইন সাজ্জাদ, ওয়াজিবুল আলম, আহসান উল্লাহ, ফজলে রাব্বি, ইয়ামুস জামান, রাশেদ কামাল অনিক, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান ও মো. সুলতানকে আসামি করা হয়।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ