শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত এবং পাঠদানকে আনন্দময় ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রাথমিক স্তর থেকেই মাল্টিমিডিয়াভিত্তিক পাঠদান নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। বিশ্বায়নের যুগে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায়ও প্রযুক্তিভিত্তিক উপকরণ ব্যবহার শুরু হয়েছে। শিক্ষা খাতে ডিজিটাল ডিসপ্লে প্রযুক্তির প্রসারে এগিয়ে এসেছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান এলজি গ্লোবাল। এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সরকারি ও বেসরকারি অংশীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে দেশের শিক্ষা খাতে কীভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব, তা তুলে ধরেন এলজি ইলেকট্রনিকস বাংলাদেশের হেড অব ইনফরমেশন ডিসপ্লে সলিউশন মোহাম্মদ রবিউল আওয়াল। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের শিক্ষা খাতে প্রায় দুই হাজার ইউনিট ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড সরবরাহ করার লক্ষ্যে কাজ করছে এলজি। নানা রকম সুবিধা–সংবলিত এসব ডিজিটাল বোর্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রচলিত বোর্ডের তুলনায় আধুনিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব।

আরও পড়ুনসুইডেনের ফুল-ফান্ডেড ৭৫০ স্কলারশিপ, জীবনযাপন খরচ, ভ্রমণ ব্যয়ের সঙ্গে নানা সুযোগ১০ ঘণ্টা আগে

শিক্ষা খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন এলজি ইলেকট্রনিকস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেরাল্ড সাংহো চুন। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন।

অতিথিরা বলেন, ডিভিটাল ডিসপ্লের মতো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই উদ্যোগ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তির ব্যবহারের নতুন সম্ভাবনা এনে দেবে। প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির চেষ্টায় অবদান রাখায় অনুষ্ঠানে কয়েকজনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

আরও পড়ুনচীনের এআইআইবি গ্লোবাল ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম, দিনে ৯০ ডলারের সঙ্গে নানা সুযোগ২ ঘণ্টা আগে

আরও উপস্থিত ছিলেন এলজি ইলেকট্রনিকস বাংলাদেশের হেড অব মিডিয়া সলিউশন আশিকুল ইসলাম, এলজি ইলেকট্রনিকস সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের সেলস ডিরেক্টর টনি অ্যাং এবং প্রোডাক্ট ডিরেক্টর জ্যাকি জিয়ং। তাঁরা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন খাতে প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রবণতা এবং বাংলাদেশের জন্য তাঁদের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ন এলজ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পানি ব্যবস্থাপনার জন্য বেইজিংয়ের কাছ থেকে ৫০ বছরের মহাপরিকল্পনা চেয়েছে ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল শুক্রবার নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী ও পানি ব্যবস্থাপনার জন্য চীনের কাছ থেকে ৫০ বছরের মহাপরিকল্পনা চেয়েছেন।

চীন সফরের তৃতীয় দিনে চীনের পানিসম্পদমন্ত্রী লি গোওয়িংয়ের সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই অনুরোধ জানান মুহাম্মদ ইউনূস। বেইজিংয়ের একটি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ খবর জানানো হয়।

অধ্যাপক ইউনূস চীনের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে বলেন, ‘কিছু জটিল পানি সমস্যা মোকাবিলায় চীন আশ্চর্যজনক সাফল্য পেয়েছে। আমাদের সমস্যা আপনাদের মতোই। তাই আপনার অভিজ্ঞতা জানালে আমরা খুশি হব।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ, আমাদের দেশে শত শত নদী রয়েছে। পানি আমাদের জীবন-জীবিকার মূল, কিন্তু কখনো কখনো এটি শত্রুতে পরিণত হয়। এখন যেহেতু জনসংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই এটি বাস্তুতন্ত্রের জন্য কী ধরনের ক্ষতি করতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

চীনকে পানি ব্যবস্থাপনায় দক্ষ কারিগর হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু শেখার আছে।’ তিনি পানি ব্যবস্থাপনায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ভিশন বাংলাদেশের সঙ্গে শেয়ার করার আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এখানে আপনার কাছ থেকে শিখতে এসেছি, কীভাবে আমরা পানিসম্পদকে মানুষের জন্য উপযোগী করে তুলতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং উন্নয়নের চাহিদার কারণে নদীর ধারে জমি দখল বাড়ছে। উজানের দেশ ভারতও একই ধরনের উন্নয়ন সমস্যায় পড়ছে। পলি জমে নদীর মাঝখানে চর জেগে উঠছে, যা কখনো কখনো নদীগুলোকে সংকুচিত করছে।’

চীনের পানিসম্পদমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একমত হয়ে বলেন, ‘চীন ও বাংলাদেশের পানি ব্যবস্থাপনা একই রকমের চ্যালেঞ্জ।’ বাংলাদেশের ৮৫ শতাংশ নদী সমতল ভূমিতে, যা দেশের জন্য পানি ব্যবস্থাপনাকে জটিল করে তুলেছে জানিয়ে তিনি বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট সি চীনের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা দিয়েছেন, যার মাধ্যমে চীন পানি ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পারছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা তৈরিতে আপনার সাহায্যের প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সমস্যা কেবল একটি নদী নিয়ে নয়, বরং সামগ্রিক নদী ব্যবস্থাপনায়।’

তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা এবং ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর দূষিত পানি পরিষ্কারকরণের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করে সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা।

আরও পড়ুনপিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান ৫০ মিনিট আগে

চার দিনের সফরে বর্তমানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সফরে তিনি চীনের নেতা এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে বেইজিংয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে পরের ধাপে নিতে কাজ করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে দুই নেতার মধ্যে ঘণ্টাখানেক দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস আজ শনিবার দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী বেইজিং৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ