ম্যাক কম্পিউটারে আক্রমণ করতে সক্ষম ম্যালওয়্যারের সন্ধান পেয়েছে মাইক্রোসফট
Published: 26th, February 2025 GMT
অ্যাপলের ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমে চলা ম্যাক কম্পিউটারে আক্রমণ করতে সক্ষম বিপজ্জনক এক ম্যালওয়্যারের সন্ধান পেয়েছে মাইক্রোসফট। ‘এক্সসিএসএসইটি’ নামের ম্যালওয়্যারটি থেকে নিরাপদ থাকতে ম্যাক কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সতর্কও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মাইক্রোসফটের থ্রেট ইন্টেলিজেন্স দলের তথ্যমতে, এক্সসিএসএসইটি নামের ম্যালওয়্যারটি নতুন নয়। তবে আগের তুলনায় বেশ উন্নত হয়েছে ম্যালওয়্যারটি। অ্যাপ্লিকেশনে নিজের উপস্থিতি লুকিয়ে রাখতে সক্ষম এই ম্যালওয়্যার ২০২০ সালে প্রথম শনাক্ত করা হয়। এখন এটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ফলে এটি শনাক্ত করা কঠিন এবং ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য ঝুঁকিও বেড়েছে।
মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, এক্সসিএসএসইটি ম্যালওয়্যারের সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো হ্যাকাররা এর মাধ্যমে অন্যান্য ক্ষতিকারক অ্যাপ তৈরি করতে পারে এবং সেগুলোকে ম্যাক অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে ব্যবহারকারীদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। একবার যদি কোনো কম্পিউটারে এই ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে, তাহলে হ্যাকাররা সেটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে এবং ব্যবহারকারীর ডেটা, যেমন পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে। এমনকি এটি ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।
সূত্র: নিউজ ১৮
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম য লওয
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা বর্বর হামলা অব্যাহত
ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। গত ২৪ ঘণ্টায় নারী-শিশুসহ ৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে পশ্চিম তীরেই প্রাণ গেছে ২২ জনের। বরাবরের মতোই দখলদার বাহিনী বেসামরিক লোকজনকে টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতি সম্প্রদায়ের যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে দখলদাররা উপেক্ষা করেছে।
একজন হামাস নেতাকে হত্যা করতে প্রয়োজনে তারা ১০০ সাধারণ মানুষকে হত্যা করবে বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহুর সংসদ বিচারক নিয়োগের ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে আইনও পাস করেছে। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে ইসরায়েলের নাগরিকরা।
ইসরায়েলি হামলায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ২০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে অন্তত ১ লাখ ১৩ হাজার ৯১০ জন। ইসরায়েলের বর্বর আচরণ বন্ধ করে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
আলজাজিরা জানায়, গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি ব্যস্ত বাজারে ইসরায়েলি হামলায় সাত ফিলিস্তিনি নিহত হন। এতে করে গত এক দিনে এই যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় নিহতের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে বলেছে, গাজায় হাজার হাজার মানুষ তীব্র ক্ষুধা ও অপুষ্টির মুখোমুখি। টানা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কোনো মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে পারেনি। মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য খাদ্য মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে সংস্থাটি।
এদিকে মিসরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ অবরুদ্ধ গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। আকস্মিক এই হামলায় নিহত হয় সাত শতাধিক মানুষ।
একদিকে হামলা অন্যদিকে জোর করে বসতি স্থাপন চালিয়ে যাচ্ছে দখলদাররা। পবিত্র রমজানে বহু ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে। প্রায়ই তারা দখলদার ইসরায়েলিদের হামলার শিকার হয়েছে। বাড়িঘর থেকে উৎখাত করা হয়েছে। এমনকি ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর জোর করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
গাজায় দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে সতর্কতা দিয়েছে জাতিসংঘের সহায়তা সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। তারা বলছে, সহায়তা তহবিল কমানো হলে গাজায় মানুষের জীবন খাদ্যাভাবে বিপন্ন হবে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, গত বছরের তুলনায় এবার সহায়তা তহবিল ৪০ শতাংশ কমে যেতে পারে।
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের মোহাম্মদ এলমাসরি বলেন, বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করা ইসরায়েলের সামরিক মতবাদের অংশ। হামলার ভয়ে সাহায্য সংস্থা ও কর্মীরা ফিলিস্তিনি ছিটমহল ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
এদিকে লেবানন থেকে গতকাল শুক্রবার সকালে ইসরায়েলে আঘাত হানে দুটি রকেট। এতে ইসরায়েল তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বৈরুতে বিমান হামলার হুমকি দেন এবং একটু পরই বিমান হামলা করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েল লেবাননে জোর করে যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে। গত নভেম্বরে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো হামলা করা হলো।
ইয়েমেনে হুতিদের ৪০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সানাসহ ইয়েমেনজুড়ে হুতিদের এসব ঘাঁটি বিদ্যমান। হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, বৈরুতে ইসরায়েলি হামলা অগ্রহণযোগ্য। এটা যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন। লেবাননের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন বলেছেন, বৈরুতে হামলার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখল ইসরায়েল।