দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের
Published: 26th, February 2025 GMT
২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম। এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফা অনেকটা বেড়েছে।
অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা শূন্য ৯ পয়সা; আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯ টাকা শূন্য ৬ পয়সা। অর্থাৎ এই সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি আয়(ইপিএস) হয়েছে ২৭ টাকা ৮২ পয়সা; আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৭ টাকা ৪৮ পয়সা। অর্থাৎ এই সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ।
একই সঙ্গে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহেও উন্নতি হয়েছে কোম্পানিটির। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে কোম্পানিটির এনওসিএফপিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৮ দশমিক ৭৮ টাকা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ঋণাত্মক ৬০ টাকা ২৭ পয়সা। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যাচ্ছে, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের পরিচালন দক্ষতা বেড়েছে।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৪ টাকা ৯৪ পয়সা; ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে যা ছিল ২৩৪ টাকা ১২ পয়সা। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, কোম্পানির সম্পদের ভিত্তি আরও শক্তিশালী হয়েছে।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১২ টাকা ৭৩ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ইপিএস আয় হয়েছিল ৮ টাকা ৪২ পয়সা।
২০২৪ সালে কোম্পানিটি ১৭০ শতাংশ, ২০২৩ সালে ১৬০ শতাংশ, ২০২২ সালে ১৫০ শতাংশ, ২০২১ সালে ১৫০ শতাংশ ও ২০২০ সালে ১৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২৪ দিনে এল ২৭০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রথম ঈদ সমাগত। এ উপলক্ষে বিদেশ থেকে প্রবাসীরা বৈধ পথে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন। ব্যাংকাররা বলছেন, মূলত অর্থ পাচার কমে আসায় প্রবাসীরা তাঁদের আয় পাঠাতে বৈধ পথকে বেছে নিয়েছেন। এর ফলে রমজান মাসে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এ মাসের প্রথম ২৪ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫২ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রবাসী আয়ের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ব্যাংকাররা আশা করছেন। প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের যে সংকট চলছিল তা অনেকটা কেটে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানান। তাঁরা বলেন, ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল সেটিও কমে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসী আয় আসে ১৬৬ কোটি ডলার। চার দিন পরে অর্থাৎ ১৯ মার্চে ব্যাংকিং চ্যানেল তথা বৈধ পথে আসা প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ২২৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে শুধু ১৯ মার্চ এক দিনেই এসেছে ১৩ কোটি ডলার। আবার ১ থেকে ২২ মার্চ তথা মাসের প্রথম ২২ দিনে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪৩ কোটি ডলার, যা ২৪ মার্চে বেড়ে ২৭০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়।
সাধারণত দুই ঈদের আগে প্রবাসী আয় বছরের অন্য যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি আসে। গত বছর পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে পাঁচ দিনেই ৪৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। অর্থাৎ দিনে গড়ে ৯ কোটি ডলার করে এসেছিল। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গড়ে ১১ কোটি ও দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ে ১২ কোটি ডলার করে এসেছে। পরের চার দিনে প্রবাসীরা অর্থ পাঠানো আরও বাড়িয়ে দেন। এ সময় দৈনিক গড়ে প্রায় ১৫ কোটি ডলার করে পাঠিয়েছেন তাঁরা।
দেশে গত বছরের আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। এ বছরের জানুয়ারিতে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় ৩ শতাংশ বেশি আসে।
সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাস জুলাই–মার্চে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার।
জানা গেছে ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা করে প্রবাসী আয়ের ডলার কেনা এখন অনেকটা কমে এসেছে। এর ফলে ডলারের দাম ১২৩ টাকার মধ্যেই রয়েছে। এতে পণ্য আমদানিতেও ডলারের দাম কম পড়ছে। আগে একসময় প্রতি ডলারের দাম ১২৮ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
প্রবাসী আয় হলো দেশে ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না, অথবা কোনো দায়ও পরিশোধ করার দরকার পড়ে না। অন্যদিকে রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। আবার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের রিজার্ভ বা মজুত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।