নাহিদ ইসলামের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি
Published: 26th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের পদত্যাগ পত্র গৃহীত হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গতকাল মঙ্গলবারই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের পদত্যাগ পত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন মো.
ব্রিফিংয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আজ বেলা একটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। বৈঠকে তিনি তাঁর একটি ব্যক্তিগত বিষয় আলোচনা করেছেন এবং আলোচনা সাপেক্ষে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। এ ছাড়া জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনসহ সরকারের যেসব কমিটিতে তিনি ছিলেন, সেসব কমিটি থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন।
আরও পড়ুননাহিদ ইসলাম যা লিখলেন তাঁর পদত্যাগপত্রে১৮ ঘণ্টা আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হবে। এই দলের নেতৃত্ব দেবেন নাহিদ ইসলাম। সে কারণে তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল।
আগামী শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনপদত্যাগ করলেন নাহিদ ইসলাম ২০ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনগণ-অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংহত করতে রাজপথে আমার ভূমিকা বেশি হবে: নাহিদ ইসলাম১৯ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদত য গপত র ন হ দ ইসল ম র পদত য গ উপদ ষ ট মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
হালাল-হারাম বুঝেশুনে ইবাদত করতে হবে
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ভালোবেসে কুল মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। জিন ও ইনসান বানিয়েছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। (সুরা-৫১ জারিয়াত, আয়াত: ৫৬) মানুষকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন খেলাফতের দায়িত্ব দিয়ে। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ৩০) যাঁরা সে দায়িত্ব সঠিকভাবে প্রতিপালন করবেন, তাঁদের সম্মানিত করা হবে বেলায়াত বা বন্ধুত্বের মর্যাদায়। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৫৭)
এ কারণে সব কাজে আল্লাহর নির্দেশ তথা মাকাসিদুশ শরিয়াহ ও নবীজি (সা.)-এর সুন্নাহ তথা আদর্শ বা দর্শন অনুসরণ করতে হবে। তাই আমরা সব কাজের শুরুতে বলি, ‘পরম করুণাময় অতীব দয়ালু আল্লাহর নামে।’ (সুরা-২৭ নমল, আয়াত: ৩০)
আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দেন, প্রতিটি আহ্বানে সাড়া দেন, সব আবেদন মঞ্জুর করেন, সব দোয়া কবুল করেন। (মিশকাত শরিফ)
আমরা সুরা ফাতিহায় যখন বলি, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’ (সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের রব আল্লাহর জন্য)। তখন আল্লাহ তাআলা জবাব দেন, ‘হামিদানি আবদি’ (আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল)। আমরা যখন বলি, ‘আর রাহমানির রাহিম’ (তিনি পরম করুণাময় অসীম দয়ালু), তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আছনা আলাইয়া আবদি’ (আমার বান্দা আমার বিশেষ প্রশংসা করল)। আমরা যখন বলি, ‘মালিকি ইয়াওমিদ্দিন’ (তিনি বিচারদিনের মালিক)। তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মাজ্জাদানি আবদি’ (আমার বান্দা আমাকে সম্মানিত করল)। যখন আমরা বলি, ‘ইয়াকা নাবুদু ওয়া ইয়াকা নাস্তাইন’ (শুধু আপনারই ইবাদত করি আর শুধু আপনার কাছেই সাহায্য চাই)। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হাজা বাইনি ওয়া বাইনা আবদি’ (এই সিদ্ধান্তই ফয়সালা হলো আমার ও আমার বান্দার মাঝে—বান্দা আমার ইবাদত ও আনুগত্য করবে, আমি তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করব)। আমরা যখন বলি, ‘ইহদিনাস সিরাতল মুস্তাকিম, সিরাতাল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম, গয়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়া লাদ-দললিন!’ (আমাদের সঠিক পথ দেখান, তাদের পথ, যাদের আপনি নিয়ামত দিয়েছেন, তাদের পথ নয়, যারা অভিশপ্ত [ইহুদি]; আর যারা পথভ্রষ্ট [খ্রিষ্টান])। তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘লিআবদি মা ছাআল’ (আমার বান্দা যা চায়, তার জন্য তা-ই)। (মুসলিম শরিফ: ৭৬৪ [আ. ন. ৩৯৫])
আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার জন্য ইবাদত ও সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। কোরআন মজিদের ঘোষণা, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যদি আল্লাহকে সাহায্য করো, আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করবেন এবং তোমাদের অবস্থান দৃঢ় করবেন।’ (সুরা-৪৭ মুহাম্মদ, আয়াত: ৭)
‘যদি কোনো সম্প্রদায় নিজের অবস্থার পরিবর্তন না করে, তবে আল্লাহ এমন নন যে তিনি তাদের পরিবর্তন করবেন; এবং নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা-৮ আনফাল, আয়াত: ৫৩) ‘এবং আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে।’ (সুরা-১৩ রাআদ, আয়াত: ১১)
‘হালাল’ অর্থ বৈধ, ‘হারাম’ অর্থ অবৈধ। যা নিষিদ্ধ, তা হারাম, যা নিষিদ্ধ নয়, তা হালাল। সুতরাং কোনো কিছু হালাল বা বৈধ হওয়ার জন্য সুস্পষ্ট বর্ণনা প্রয়োজন নেই; কিন্তু হারাম বা অবৈধ হওয়ার জন্য সুস্পষ্ট বিবরণ থাকতে হবে।
কোরআন কারিমে আদেশ ও নিষেধসংক্রান্ত পাঁচ শ আয়াত রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হালাল সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট।’ (বুখারি: ১৪৭) তবে উপকারী, কল্যাণমূলক ও ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টিকারী কাজ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যারা ইসলামে কোনো উত্তম প্রথার প্রচলন বা প্রবর্তন করল, তাদের জন্য তার সওয়াব রয়েছে এবং যারা পরবর্তীকালে এর ওপর আমল করবে তার সওয়াবও পাবে; কিন্তু আমলকারীর সওয়াব কমানো হবে না। আর যারা ইসলামে কোনো মন্দ বিষয় প্রচলন বা প্রবর্তন করবে, তারা তার বিনিময় পাবে পরবর্তীকালে যারা এই পথে চলবে, তার বিনিময়ও পাবে; কিন্তু আমলকারীর প্রতিদান কমানো হবে না।’ (সহিহ্ মুসলিম)
● মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]