বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী আজ
Published: 26th, February 2025 GMT
দেশের সাত বীরশ্রেষ্ঠ’র একজন ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ। মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গণের এই সাহসী সন্তানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি)।
১৯৩৬ সালের আজকের এই দিনে নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নূর মোহাম্মদ শেখ। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মা জেন্নাতুন্নেছা (মতান্তরে জেন্নাতা খানম)। শৈশবেই বাবা ও মাকে হারান এই বীরশ্রেষ্ঠ। তিনি পড়ালেখা করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত।
নূর মোহাম্মদ শেখ পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগ দেন ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরে ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন যশোরের কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আইনের আওতায় আনা হবে: উপদেষ্টা
মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে আগুন: পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে
এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এসএ মঞ্জুর। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাক বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন নূর মোহাম্মদ শেখ। যশোরের কাশিপুর গ্রামেই তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নূর মোহাম্মদ নগরে আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি) পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শাহবাগে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘প্রতীকী বধ্যভূমি ১৯৭১’ প্রদর্শন
১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী ‘লাইভ পারফর্ম: প্রতীকী বধ্যভূমি ১৯৭১’ প্রদর্শিত হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাপরিসর নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
প্রদর্শনীতে মুখ বাঁধা, শরীরে ক্ষত ও রক্তের চিহ্ন নিয়ে একদল নাট্যকর্মী অংশ নেন। তাতে প্রতীকী এক বধ্যভূমি তৈরি করা হয়। যেখানে পড়ে ছিল নারী-শিশুসহ অনেক মানুষের লাশের স্তূপ। প্রদর্শনীর সময় আবহ সংগীত ‘আমি দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা’; ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’; ‘রাজাকার আলবদর কিছুই রবে না রে’ গানগুলো বাজানো হয়।
প্রদর্শনীতে প্রতীকী ওই বধ্যভূমির দুই পাশের দুটি সাইনবোর্ডে একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের নাম লেখা ছিল। তাতে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে রাও ফরমান আলী, দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী হিসেবে আলবদর, তৎকালীন ছাত্রসংঘ (বর্তমান ইসলামী ছাত্রশিবির) পরিচালিত পাকিস্তান সরকারের মুক্তিযুদ্ধকালীন সহযোগী বাহিনীর কথা লেখা। আর নাজিম-ই আলা (প্রধান) হিসেবে মতিউর রহমান নিজামী, সেকেন্ড ইন কমান্ড আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের নাম লেখা।
ওই বোর্ড দুটির অপারেশন পরিচালনা অংশে লেখা ছিল পুরো অপারেশনে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে আলবদরের কমান্ডার এ বি এম খালেক মজুমদার, অপারেশন ইনচার্জ চৌধুরী মুঈনুদ্দীন, হাইকমান্ড সদস্য ও বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান এক্সিকিউটর আশরাফুজ্জামান খান (ইসলামী ছাত্রসংঘের কেন্দ্রীয় সদস্য এবং আলবদর বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় সদস্য), সদস্য আবদুল খালেক, মাওলানা আবদুল মান্নান ও শওকত ইমরানের নামে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।
প্রদর্শনীর বিষয়ে বাংলাপরিসরের সম্পাদক দীপান্ত রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামীকাল (রোববার) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এই প্রতীকী বধ্যভূমি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি। ১৯৭১ সালের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসরদের বর্বরতা কেমন ছিল, তা মনে করিয়ে দিতেই এ আয়োজন। যেটুকু প্রদর্শন করা হয়েছে, তার চেয়ে অনেক কঠিন এবং অনেক বর্বর ছিল সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি।’
দীপান্ত রায়হান আরও বলেন, ‘১৪ কিংবা ১৬ ডিসেম্বরসহ আমাদের জাতীয় দিবসগুলোকে কেন্দ্র করে যে ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আগে পরিচালিত হতো, সেটি অনেকাংশে কমে গেছে। শিল্পীদের মধ্যে একধরনের ভয়ের সংস্কৃতি ঢুকে গেছে। এই আয়োজনেও শিল্পীরা আসতে অনেকে ভয় পেয়েছেন। অনেকেই আজকে হামলা হতে পারে এই ভয়ে অংশগ্রহণ করেননি। এই ভয়ের সংস্কৃতিটাকেও কাটতে হবে।’