৪-৪ গোলের রোমাঞ্চ শেষে বার্সা কোচের মেজাজ খারাপ, বেজায় খুশি সিমিওনে
Published: 26th, February 2025 GMT
দিয়েগো সিমিওনে বেজায় খুশি। আতলেতিকো মাদ্রিদ কোচ খুশি কারণ তাঁর ২ গোলে পিছিয়ে পরেও বার্সেলোনার সঙ্গে ৪-৪ গোলে ড্র করেছে।
স্বাভাবিক কারণেই হান্সি ফ্লিকের মেজাজ খারাপ। ৮৩ মিনিট পর্যন্ত ৪-২ গোলে এগিয়ে থাকার পরও ম্যাচ জিততে না পারলে এমনই তো হওয়ার কথা। অথচ কাল রাতে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ড্র করেই খুশি হওয়ার কথা ছিল। ম্যাচের বয়স ৬ মিনিট হতে না হতেই যে প্রতিপক্ষ আতলেতিকো এগিয়ে গিয়েছিল ২-০ গোলে।
সেখান থেকেই দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে বার্সা উল্টো এগিয়ে যায় ৪-২ গোলে। পরের গল্পটা ম্যাচের শেষ দিকে আতলেতিকোর দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের।
৪-২ গোলে এগিয়ে গিয়েও ড্র। সেটিও ঘরের মাঠে। ফ্লিকের খ্যাপাটাই স্বাভাবিক। ম্যাচ শেষে স্প্যানিশ টেলিভিশন চ্যানেল টিভিইকে ফ্লিক বলেন, ‘এই ফলে আমি হতাশ কারণ শুরুতে ২ গোলে খেলেও কী দারুণভাবেই না আমরা ফিরে এসেছিলাম। একটা সময় তো ৪-২ গোলে এগিয়েও গেলাম। আমরা কত সুযোগ তৈরি করলাম। কিন্তু সবকিছুই বৃথা গেল। শেষ কয়েক মিনিটে আমরা ওদের (আতলেতিকো) ফেরার সুযোগ করে দিলাম।’
প্রতিপক্ষ আতলেতিকোর প্রশংসাও করেছেন ফ্লিক, ‘আতলেতিকো খুব ভালো খেলেছে। আমার খুব ভালো ও শক্তিশালী এক দলের বিপক্ষে খেলেছি। তবে ৮০ মিনিট পর্যন্ত আমাদের আধিপত্য ছিল, শেষ কয়েক মিনিট রক্ষণকাজটা ভালোভাবে করতে পারিনি। চতুর্থ গোলটা তো বিশ্বাসই করতে পারছি না। ’
ম্যাচ শুরুর পর ১ মিনিট না হতেই হুলিয়ান আলভারাজের গোলে এগিয়ে যায় আতলেতিকো। ৫ মিনিট পর ব্যবধানটা দ্বিগুণ করেন আঁতোয়ান গ্রিজমান। পেদ্রি (১৯ মিনিট), পাউ কুবরাসি (২১) ও ইনিওগো মার্তিনেজের (৪১) গোলে ৩-২ ব্যবধানে প্রথমার্ধ শেষ করে বার্সা। ৭৪ মিনিটে বার্সার চতুর্থ গোলটি আসে রবার্ট লেভানডফস্কির কাছ থেকে। ৮৪ মিনিটে মার্কোস ইয়োরেন্তের গোলে ব্যবধান কমানো আতলেতিকো সমতা আনে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে। আলেকসান্দার সরলথ করেন ৪-৪।
এমন নাটকীয়ভাবে শেষ পর্যন্ত ড্র করতে পারায় খেলোয়াড়দের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন আতলেতিকো কোচ সিমিওনে, ‘এই দলটার টিম স্পিরিটই আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে। গ্লাডিয়েটরসূলভ মানসিকতা আমাদের খেলোয়াড়দের। অবিশ্বাস্য। বার্সেলোনা দলটা অনন্যসাধারণ, তবে আমরাও কম নই, আমরা কী সেটি তো দেখালামই।’
সরলথের করা চতুর্থ গোলটির পর বিশ্বজয়ের উদ্যাপনের মেতে ছিল আতলেতিকো। সেটি নিয়েও বলেছেন সিমিওনে, ‘ওটা ছিল আনন্দে ফেটে পড়া। ৪-২ থেকে ফেরাটা কঠিন মনে হচ্ছিল। তবে আমাদের খেলোয়াড়েরা প্রচণ্ড সাহসী। ওরা সমতা ফিরিয়েছে। এখন অপেক্ষা ২ এপ্রিলের দ্বিতীয় লেগের।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আতল ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়কে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে: আলী রীয়াজ
গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিজয়কে বিভিন্নভাবে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, এ দেশের ইতিহাসে গণতন্ত্রের আকাঙ্খা বারবার পর্যদুস্ত হয়ে একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক শাসনে পরিণত হয়। গণতন্ত্রের সংগ্রামের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে বিভিন্নভাবে সে বিজয়কে ভূলন্ঠিত করা হয়েছে।
শনিবার ঢাকায় সংসদ ভবনের এল ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ শাসনকে পরাভূত করে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করতে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছে দাবি করে দলটির উদ্দেশে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দীর্ঘদিনের যে ফ্যাসিবাদী শাসন জগদ্দল পাথরের মতো আমাদের বুকের উপর বসে ছিল, তার বিরুদ্ধে জীবনবাজি রেখে লড়াই, অকুতোভয় সংগ্রাম এবং আপনাদের সাথীদের প্রাণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সে শাসনকে পরাস্ত করতে পেরেছেন। একটি ফ্যাসিবাদী শাসনকে পলায়ন করতে বাধ্য করেছেন যা বাংলাদেশকে রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে অগ্রসর করেছে। তিনি বলেন, এখন সকলে মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় এসেছে। ফ্যাসিবাদ যেন আর কখনও এ দেশে ফিরে না আসে, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন স্থায়ী রূপ নেয়, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং সব রকমের নিপীড়ন যেন আমরা প্রতিহত করতে পারি।
আলোচনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ছাড়াও ছিলেন সামান্তা শারমিন, হাসনাত আব্দুল্লাহ, নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সারোয়ার তুষার, জাভেদ রাসিন ও নাহিদা সারোয়ার নিভা।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। ২৩ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টি কমিশন বরাবর তাদের মতামত জমা দেয়। সে প্রেক্ষিতে দলটির সঙ্গে আজ আলোচনায় বসে কমিশন। দিনব্যাপী এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।