চটপটি খাওয়ার কথা বলে শিশুকে অপহরণ, এক দিন পর লাশ উদ্ধার
Published: 26th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির এক দিন পর বাইজিদ আকন (৯) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার দাপা ইদ্রাকপুর শৈলকুইড়ের সাহাবুদ্দিন হাজির ইটভাটার ঝোঁপের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত বাইজিদের বাবার নাম সাইফুল আকন। তিনি পরিবার নিয়ে ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে পুলিশ বাইজিদ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ফেরদৌস আলী (২৯) নামের এক যুবককে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থেকে আটক করে। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ফেরদৌস আলী করিমগঞ্জের খাকশ্রীর মানিক মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, নিহত বাইজিদ ও আটক ফেরদৌস একই বাড়িতে ভাড়ায় থাকত। গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে চটপটি খাওয়ানোর কথা বলে শিশুটিকে নিয়ে ফেরদৌস বাসা থেকে বের হয়। রাত ১২টার দিকে ফেরদৌস মুঠোফোনে বাইজিদের বাবাকে জানায়, ছেলেকে জীবিত পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে; অন্যথায় তাকে হত্যা করা হবে। বাইজিদের বাবা টাকা দিতে চাইলেও পরে সেই মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পান। গতকাল সকালে বাইজিদের বাবা সাইফুল আকন ফতুল্লা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ফেরদৌসকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ইটভাটার ঝোঁপ থেকে বাইজিদের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজন আটক রয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ইজ দ র ব ব মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
জুয়েলার্স ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা চাইলেন বাজুস নেতারা
সরকারের কাছে জুয়েলার্স ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা চেয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নেতারা।
জুয়েলার্স সমিতির নেতারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও ব্যবসায়ীদের ওপর সরাসরি আক্রমণের ঘটনা বাড়ছে। পাশাপাশি জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও অপহরণ চেষ্টা তাঁদের জানমালের নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমনকি বাসাবাড়িতেও জুয়েলারি ব্যবসায়ী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ বোধ করছে না। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়তে পারে—এমন আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
রাজধানীর মগবাজারে জুয়েলার্স সমিতির কার্যালয়ে আজ শুক্রবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের নেতারা। তাঁরা জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে সরকারের আরও সহযোগিতা চান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জুয়েলার্স সমিতির সহসভাপতি মো. নিপনুল হাসান। আরও উপস্থিত ছিলেন জুয়েলার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ, সহসভাপতি এম এ হান্নান আজাদ, সহসভাপতি মাসুদুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, সমিত ঘোষ প্রমুখ। সমিতির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানা যায়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত বুধবার (২৬ মার্চ) ভোর ৫টায় জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অলংকার নিকেতনের কর্ণধার ও জুয়েলার্স সমিতির সহসভাপতি এমএ হান্নান আজাদের বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় ও ছদ্মবেশী ২৫-৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল হামলা চালায়। এ সময় তাঁর বাসা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এমনকি এম এ হান্নান আজাদকে অপহরণের চেষ্টা করে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাজুসের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. ওয়াহিদুজ্জামান সুজনের ওপর ও তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার চেষ্টা হয়, যা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২৬ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ১১টি, আশুলিয়া সাভারে ১টি, মুন্সিগঞ্জে ১টি, খুলনায় ৪টি, কুমিল্লায় ১টি, পটুয়াখালীতে ২টি, ময়মনসিংহে ১টি, সিলেটে ১টি ও হবিগঞ্জে ১টি প্রতিষ্ঠানে চুরি ও ডাকাতি হয়। আশুলিয়া-সাভারে ডাকাতির সময় ডাকাতদের গুলিতে একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী নিহত হয়। বনশ্রীতে সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হয়েছেন। বিগত এক বছরে এই চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় দেশের ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে রিপনুল হাসান বলেন, ‘জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। এ জন্য জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে সরকারের আলাদা দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সশস্ত্র প্রহরার পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের সব জেলার জুয়েলারি মার্কেটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা দাবি জানাচ্ছি।’ এ ছাড়া জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই হওয়া অলংকার উদ্ধার এবং অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জুয়েলার্স সমিতির নেতারা অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা রোধে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নিশ্চিত, নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠান বন্ধ, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সোনা পরিবহনে প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন।