শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটলেও মানের ভয়াবহ অবনতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্যও দেখা যাচ্ছে। এটি আশঙ্কাজনক। এখন প্রযুক্তির যুগ, সভ্যতার পথ ধরে এগোতে গেলে প্রযুক্তি তো লাগবেই। তবে নৈতিকতা ছাড়া সভ্য হওয়া যাবে না। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে জগদীশ চন্দ্র বসু, তাঁর মতো বিজ্ঞানীর নামে করা ভবন-স্থাপনা ছিল, সেগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও কয়েকটি স্থাপনার নামও বদলানো হয়েছে। এটি আমাকে মর্মাহত করেছে। আমি আশা করব, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীরা মিলে এর প্রতিকার করবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আর্থিক বিবেচনায় আপনারা পেশা বেছে নেবেন না। বরং যে কাজটি করতে ভালো লাগে, সেরকম পেশা বেছে নেওয়া উচিত। আমরা এমন সমাজে বাঁচতে চাই, যেখানে সৎভাবে বুক উঁচু করে বাঁচা যায়। 

গণঅভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের স্বার্থে জীবনবাজি রেখে লড়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকের ধারণা ছিল প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা শুধু নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়েই চিন্তা করে, তাদের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা কাজ করে না। তবে আমরা সাম্প্রতিক যে গণঅভ্যুত্থান দেখেছি, সেখানে ব্র্যাকসহ বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেভাবে জীবনবাজি রেখে এগিয়ে এসেছিল, তাতে সবার ভুল ভেঙেছে।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাংবাদিক শারমিন ওবায়েদ চিনয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার।

সমাবর্তনে ভেলিডিক্টোরিয়ান বক্তব্য দেন চ্যান্সেলর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী শিহাব মুহতাসিম ও সমাপনী বক্তব্য দেন সমাবর্তন কমিটির কো-চেয়ার ড.

সাদিয়া হামিদ কাজী।

এবারের সমাবর্তনে চার হাজার ৮২৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে দু’জনকে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক, ২৮ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।


 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত সুমাইয়ার বাড়িতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ

ছাত্রজনতার আন্দোলনে গত বছরের ২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান গার্মেন্টসকর্মী সুমাইয়ার আক্তার। তার পরিবার ও শিশু সুয়াইবার সঙ্গে ঈদুল ফিতরের দিন (সোমবার) দেখা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা  মাহফুজ আলম। তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুলাহ আল আমিন, তামিম আহমেদ ও দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত জামিল। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শহীদ সুমাইয়ার মায়ের হাতে ঈদ উপহার ও আর্থ সহায়তা করেন।

সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্রজনতার গণআন্দোলনে ঘরের বরান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা গার্মেন্টর্কমী সুমাইয়া আক্তার (২০) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিলেন। মারা যাওয়ার সময় সুমাইয়া আড়াই মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রেখে যান। মা হারা সেই সুয়াইবার প্রথম ঈদ কাটলো আজ। এখন সুয়াইবার বয়স প্রায় ১০ মাস।

সুয়াইবার বাবা জাহিদও তার কোনো খোঁজখবর নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সুমাইয়ার পরিবার। এজন্যই মা-বাবাহীন সুয়াইবার ঈদ কাটছে নানি-খালা-মামার স্নেহ ভালবাসায়। দেশব্যাপী ছাত্র-জনতা যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কাঁচপুর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে বাবা মায়ের কাছে বেড়াতে এসেছিলেন সুমাইয়া তার শিশু সুয়াইবাকে নিয়ে। আন্দোলনের সময় বাড়ির চার তলায় শিশু সুয়াইবাকে ঘুম পাড়িয়ে ২০ জুলাই বিকেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনের দৃশ্য দেখছিলেন সুমাইয়া। হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া একটি গুলি বারান্দার গ্রিল দিয়ে ঢুকে তার মাথায় বিদ্ধ হয়। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন সুমাইয়া। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সড়কেই মৃত্যু হয় সুমাইয়ার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরার সেই শিশুর বাড়িতে নেই ঈদ আনন্দ, কান্না করছেন মা
  • গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত সুমাইয়ার বাড়িতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সঙ্গে তথ্য উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
  • গাংনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
  • ‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারী’ পুরস্কার পাওয়ায় জুলাইকন্যাদের প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
  • যুক্তরাষ্ট্রের ‌‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারী’ পুরস্কার পাওয়ায় জুলাই কন্যাদের প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন