দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষক নিহত: সালথায় মাহিন্দ্রা বন্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 26th, February 2025 GMT
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক নিহত হওয়ার ঘটনায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় তিন চাকার যান মাহিন্দ্রা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সালথা-ফরিদপুর সড়কের মেম্বার গট্টি এলাকায় এ বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় সড়কের দুই পাশে গাছের গুড়ি ও বাঁশ ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য দেয় শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান, শাহিন খাঁ, সাকিবুল ইসলাম, সজিব শেখ, তুহিন হাসান, মাইমুনা সুলতানা, মারজিয়া ও রাদিয়া আক্তার।
তারা বলে, শনিবার স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে মাহিন্দ্রা গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে রাঙ্গারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমা বেগম নিহত হন। এর আগে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এসকেন্দার আলী মারা যান। এ ছাড়া সম্প্রতি মাহিন্দ্রা দুর্ঘটনায় খারদিয়া মিয়া মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিয়া আক্তার গুরুতর আহত হন। পরে তার পা কেটে ফেলতে হয়। একইভাবে ভাওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা বলে, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সালথা-ফরিদপুর সড়ক মাহিন্দ্রা গাড়ি দখল করে নিয়েছে। এই গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। অদক্ষ ও নেশাগ্রস্ত ড্রাইভাররা মাহিন্দ্রা গাড়ি চালাচ্ছেন। এমনকি শিশুদের হাতে মাহিন্দ্রা গাড়ি তুলে দিচ্ছে পরিবার। যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এমন অবস্থায় আমরা এই সড়কে আর মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল করতে দেব না। আগামী তিন দিনের মধ্যে যদি মাহিন্দ্রা বন্ধ করে দিয়ে বাস চালু না করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
ইউএনও মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, শিক্ষার্থীরা মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে বাস চালুর দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল। বাস চালু করার বিষয়ে মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আশা করি, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণ হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ঘটন য় দ র ঘটন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতাল চালুর দাবিতে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের আবারও সড়ক অবরোধ
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত ও অবিলম্বে কলেজ হাসপাতাল চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে সড়ক অবরোধ করেছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে মেডিকেল কলেজের সামনে সুনামগঞ্জ–সিলেট সড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। একই দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
আজ সকাল ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে বের হয়ে সুনামগঞ্জ–সিলেট সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। এতে সড়কের দুই দিকে যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
ইউএনও সুকান্ত সাহা বলেন, তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। যাত্রীদের যাতে ভোগান্তি না হয়, সে জন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে হয়। কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল চালু না থাকায় এই ক্লাসগুলো জেলা সদর হাসপাতালে সপ্তাহে দুই দিন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কলেজ থেকে হাসপাতালটির দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার। যাতায়াতের জন্য কলেজের কোনো বাস নেই। ফলে নিয়মিত ক্লাসে যেতে সমস্যা হয়।
কর্মসূচি থেকে সপ্তাহে ছয় দিন ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত করা, ওয়ার্ড পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ, ক্লিনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ, সার্জারি, মেডিসিনসহ সব ক্লিনিক্যাল বিষয়ের যথাযথ ওয়ার্ডের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, পরিবহনব্যবস্থার ঘাটতি দূর করা এবং ডিসেম্বরের মধ্যে হাসপাতাল চালুর দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুনহাসপাতাল চালুর দাবিতে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন১৯ ঘণ্টা আগেএ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে তিনি মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছেন। শিক্ষার্থীরা চাচ্ছেন, সপ্তাহে ছয় দিন ব্যবহারিক ক্লাস করতে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটির ব্যবস্থা করা হবে। চলতি বছরের জুলাইয়ে চালু হওয়ার কথা ছিল। এই প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বেড়েছে। ভবন বুঝে নেওয়াসহ কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এটা করতে হবে। হাসপাতাল চালু হলে শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাসের অসুবিধা কেটে যাবে।
২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর শান্তিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্থায়ীভাবে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর এটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়। মদনপুর এলাকায় সুনামগঞ্জ–সিলেট সড়কের পাশে অবস্থিত এই মেডিকেল কলেজ শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে। বর্তমানে এখানে পাঁচটি ব্যাচে ২৮০ শিক্ষার্থী রয়েছেন।