কর্ণফুলী পেপার মিলে বসছে নতুন ৭ প্লান্ট
Published: 25th, February 2025 GMT
বয়সের ভারে ন্যুজ কর্ণফুলী পেপার মিল (কেপিএম) এলাকায় একটি ইন্টিগ্রেটেড পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলসহ আরও ছয়টি কেমিক্যাল প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কারখানাটি নতুন করে নির্মিত হলে বর্তমান বার্ষিক উৎপাদন ৪ হাজার টন থেকে ১ লাখ টনে উন্নীত হবে। এতে প্রতিষ্ঠানটির হারানো গৌরব ফিরে আসবে বলে ধারণা করছেন কেপিএম কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, কেপিএমে নতুন প্লান্ট স্থাপনে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনটি শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। চলতি বছর এডিপিতে ওই প্রস্তাব উত্থাপন হতে পারে বলে আশা করছে কেপিএম কর্তৃপক্ষ। সাতটি প্লান্ট স্থাপনে ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে।
জানা গেছে, ১৯৫৩ সালে মোট ৫০১ একর জমির ওপর তৎকালীন পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন করপোরেশন কর্তৃপক্ষ (পিআইডিসি) কারখানা গড়ে তোলে। বার্ষিক ৩০ হাজার টন উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেয়। সে সময় দেশের সরকারি চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ কাগজ সরবরাহ করত কেপিএম। কালক্রমে ৭২ বছরের প্রতিষ্ঠানটি জরাজীর্ণ ও রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হয়। একসময় শ্রমিক-কর্মচারীদের পদচারণায় মুখর থাকা প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।
কেপিএম কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, শুরু থেকেই কেপিএমে বাঁশ ও পাল্পউডের (নরম কাঠ) মাধ্যমে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মণ্ড তৈরি করে কাগজ উৎপাদন করা হতো। বিগত আট বছর ধরে মণ্ড তৈরির পাল্প মিলটি বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকে বিদেশ থেকে আমদানি করা পাল্প ও দেশীয় অকেজো কাগজ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন চালু রাখা হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিকে বছরে ২৮-৩০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে কেপিএমে ক্রিমলেইড, সাদা রাইটিং কাগজ, ব্রাউন, অফসেট, টাইপ রাইটিং, অ্যাজুরলেইড ও অন্যান্যসহ ৩৩ রকমের কাগজ এবং ১০ প্রকারের কাগজজাত প্যাকেজিং প্রোডাক্ট তৈরি করা হতো। বর্তমানে মিলে হোয়াইট রাইটিং, ব্রাউন, কালারসহ চার-পাঁচ প্রকারের কাগজ তৈরি করা হচ্ছে। বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতাও নেমে এসেছে মাত্র ৩-৪ হাজার টনে।
কারখানা আধুনিকীকরণ প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে কেপিএমে ইন্টিগ্রেডেট পেপার তৈরির মেশিনসহ বনায়ন, পেপারভিত্তিক কেমিক্যাল
প্ল্যান্ট এবং সিনথেটিক পলিয়েস্টার ফাইবার প্লান্ট স্থাপন করা হবে।
কর্ণফুলী পেপার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়ালে কাগজের বাজারের মূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক প এম
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষিপণ্য আমদানিতে বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
অত্যাবশকীয় কৃষি ও শিল্পকারখানার ব্যবহৃত যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশের সব পর্যায়ে আরোপিত বর্ধিত মূল্যসংযোজন কর প্রত্যাহারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এই সময়ের মধ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার করা না হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে ২ ঘণ্টার মানববন্ধন শেষে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘বৈষম্যমূলক ভ্যাট ও কর বৃদ্ধি প্রতিরোধ কমিটি’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আড়াই শতাংশ বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক সহিদুল হক মোল্লা বলেন, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশক্রমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত ডিজেল ইঞ্জিন মোটরপাম্প, অগভীর ও গভীর পাম্প (সাবমারসিবল পাম্প) শিল্প-কলকারখানার ব্যবহৃত মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশের ওপর কর ও ভ্যাট বৃদ্ধি করেছে। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা এবং কৃষক সমাজ হতাশ ও উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা ছাড়াই গত ৯ জানুয়ারি এই কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত গেজেট নোটিফিকেশন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার কর ও ভ্যাট ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করায় ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। ক্রেতা সাধারণও পণ্য কিনতে আগ্রহ হারিয়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে হলে কর-ভ্যাট সহনীয় পর্যায়ে রাখা একান্ত জরুরি। কর হার বৃদ্ধি হলে কর ফাঁকির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এর সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করে আমলাতন্ত্র। সাধারণ জনগণের কোনো উপকার হয় না।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় সুনাগরিক ও সুশিক্ষিত জনসম্পদ গড়ে তোলা না গেলে শুধু করের হার বৃদ্ধি করলেই রাষ্ট্র তার সুফল পাবে না।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্য সচিব শহীদুল হক শহীদ, যুগ্ম সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম স্বপন, ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল মেশিনারী মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পিভিসি পাইপ ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মটর পার্টস অ্যান্ড টায়ার টিউব মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনসহ ৩৫টি সংগঠনের সদস্যরা।