Samakal:
2025-02-25@21:13:44 GMT

সেচ খরচ নিয়ে গলদঘর্ম কৃষক

Published: 25th, February 2025 GMT

সেচ খরচ নিয়ে গলদঘর্ম কৃষক

চলতি মৌসুমে জিকে খালের পানি না পেয়ে অতিরিক্ত দামে তেল কিনে বোরো ধান ও ভুট্টায় সেচ দেওয়া হচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানি কমতে থাকায় শ্যালো মেশিনেও ঠিকমতো পানি উঠছে না। এতে জ্বালানি খরচও বেশি হওয়ায় লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন তারা। কথাগুলো আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি ইউনিয়নের ঘোষবিলা গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলামের।
পদ্মা নদীতে পলি জমে ও পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের খালে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ফসলি জমিতে সেচ দিতে না পারায় আলমডাঙ্গা উপজেলায় জাহিদুলের মতো হাজারো কৃষক বিপদে পড়েছেন। বিকল্প হিসেবে শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে জমিতে পানি সরবরাহ করছেন তারা। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সেচ দিতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
কৃষকরা বলছেন, জিকে সেচ প্রকল্পের আওতায় গত কয়েক বছর ঠিকমতো পানি পাওয়া যায়নি। জানুয়ারিতে খালে পানি সরবরাহের কথা ছিল। এখনও খাল পানিশূন্য। গত বছর সেচ পাম্প বিকল থাকলেও এবার নদীতে পলি জমে ও স্তর নেমে যাওয়ায় পানি আসেনি। এতে চৈত্র-বৈশাখ মাসে বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে বেগ পেতে হবে কৃষকদের। আবাদের খরচও বেড়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেড়ামারা গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রধান পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের ভাষ্য, পদ্মায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এ ছাড়া নদীর চ্যানেলে অতিরিক্ত পলি জমে যাওয়ায় তা অপসারণের কাজ চলমান রয়েছে। এ কারণে নির্দিষ্ট সময়ে খালে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত জিকে খালে পানি সরবরাহের আশ্বাস দেন এ কর্মকর্তা। 
পাম্পহাউস কর্তৃপক্ষ জানায়, বছরের ১০ মাস (১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত) ২৪ ঘণ্টা তিনটি পাম্পের মাধ্যমে পানি তোলা হয়। বাকি দুই মাস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে। এ পানি চার জেলায় ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালে যায়। প্রকল্পের প্রধান ও শাখা খালে পানি থাকলে সেচ সুবিধাসহ আশপাশের টিউবওয়েল ও পুকুরে পানি স্বাভাবিক থাকে। পদ্মায় পানির স্তর স্বাভাবিক থাকলে প্রতি পাম্পে সেকেন্ডে গড়ে ২৮ হাজার ৩১৬ দশমিক ৮৫ লিটার পানি সরবরাহ হয়। 
সরেজমিন দেখা যায়, দীর্ঘদিন পানি না থাকায় খাল শুকিয়ে ফাটল ধরেছে। বিভিন্ন অংশে পলি জমে তা এখন দৃশ্যমান। মৌসুমে এসব খালে জেলেদের দেশি মাছ ধরতে জাল নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকতে দেখা যেত। এবার পানি সংকটে তাদের দেখা মেলেনি। হাউসপুর এলাকার কৃষক শফিকুল ইসলাম বলছিলেন, ‘গত বছর জিকে খাল থেকে পানি পাইনি। এবার সাত বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ আছে। যতটুকু বুঝতে পারছি, এ বছরও পানি আসবে না। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। গত বছর কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পাইনি, এবারও হয়তো হবে না।’
কৃষক বলছেন, সেচ খালের পানি দিয়ে চাষাবাদ করতে বিঘাপ্রতি খরচ হয় মাত্র ৩০০ টাকা। শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে অনেক জমি অনাবাদি থেকে যায়। পাম্পে জ্বালানি তেলের দাম ১০৫ টাকা নিলেও খুচরা বাজারে তা ১০৮ থেকে ১১০ টাকা লিটার কিনতে হচ্ছে। 
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা আরিফ আহমেদ বলেন, ‘পদ্মা নদীতে পানির স্তর কমে যাওয়ায় ও চ্যানেলে পলি জমায় ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে। আমরা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পাম্প হাউসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। চলতি মাসেই জিকে খালে পানি সরবরাহ করা যাবে বলে আশ্বাস তাঁর।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরবর হ

এছাড়াও পড়ুন:

কোম্পানি খুলে ব্যবসা করে ইডিসিএলের কর্মকর্তারা, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

ওষুধ প্রস্তুতকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) কর্তারাই সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নিজেরা কোম্পানি খুলে মালামাল সরবরাহ করছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট অভিযানে মিলেছে এর সত্যতা।

রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয় ঢাকা থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম বলেন, ওষুধ প্রস্তুতকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের কাঁচামাল ক্রয়ে অনিয়ম, অবৈধ আর্থিক লেনদেন ও প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

দুদক জানায়, অভিযানে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির দুই জন কর্মকর্তা সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নিজেরা কোম্পানি খুলে উক্ত প্রতিষ্ঠানে মালামাল সরবরাহ করায় এরইমধ্যে তাদের চাকরিবিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়াও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিকভাবে সত্যতা রয়েছে বলে অভিযানে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। টিম প্রাথমিক তথ্য পর্যালোচনায় জানতে পারে, বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে শুধু মৌখিক পরীক্ষা নিয়েই চাকরি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিধিবহির্ভূতভাবে বাইরের কোম্পানি থেকেও ওষুধ উৎপাদন করা হয় মর্মে অভিযানকালে তথ্য পায় টিম।

অভিযানে সংগৃহীত তথ্য বিস্তারিতভাবে যাচাইপূর্বক প্রাপ্ত অনিয়মের বিষয়ে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে স্বাস্থ্যখাত ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। ওষুধ প্রস্তুতকারী একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) এ মোটা অঙ্কের অবৈধ আর্থিক লেনদেন, স্বজনপ্রীতি, প্রয়োজনের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ ওষুধ উৎপাদন বাড়েনি, উল্টো কমেছে।

অভিযোগ ছিল, খোদ প্রতিষ্ঠানটির কর্তারাই সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নিজেরা কোম্পানি খুলে এখানে মালামাল সরবরাহ করতেন। বছরের পর বছর এভাবে চলতে চলতে পঙ্গু হয়ে গেছে ইডিসিএল। রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটির এমন দশার জন্য দায়ীদের মূলে ডা. এহসানুল কবির।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতা এহসানুল কবির। শুরুতে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলেও গত ১০ বছর টানা এই পদে ছিলেন তিনি। সরকারি চাকরির পাশাপাশি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদকের পদে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে গত ২ অক্টোবর ইস্তফা দেন তিনি। রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের প্রবণতা প্রতিষ্ঠানটিকে পঙ্গু বানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রোজার পর মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা হবে: অর্থ উপদেষ্টা 
  • বাজারে তেলের চাহিদা বাড়তি, সরবরাহ স্বাভাবিকের মতো
  • আজ ঢাকার যেসব এলাকায় ১৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
  • খুচরা বাজারে এখনো সয়াবিন তেলের সংকট
  • মঙ্গলবার ১৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
  • ঢাকায় মঙ্গলবার ১৩ ঘণ্টা গ‍্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
  • জুনে নেপালের বিদ্যুৎ আসবে বাংলাদেশে 
  • কোম্পানি খুলে ব্যবসা করে ইডিসিএলের কর্মকর্তারা, প্রমাণ পেয়েছে দুদক
  • কাদা মাটির কারণে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ইমামের মৃত্যু