ছোট্ট রিমের বয়স সবে আট। একদিন তার মা তাকে একটা ছোট চারাগাছ দিলেন, বললেন, এটির যত্ন নেওয়া আজ থেকে তোমার দায়িত্ব।
প্রথম কয়েকদিন সে গাছের খুব যত্ন নিল। নিয়ম করে পানি দিল, আলোতে রাখল। ধীরে ধীরে স্কুল, কার্টুন, খেলা– এসবের ভিড়ে গাছটির কথা ভুলে গেল। এক সপ্তাহ পর সে একদিন খেয়াল করল গাছটি একেবারে শুকিয়ে গেছে।
মা এটি দেখে রাগলেন না, বরং রিমকে বললেন, দায়িত্ব মানে শুধু শুরু করা নয়, বরং প্রতিদিন যত্ন নেওয়া। এখন এই গাছ নিয়ে কী করা যায়?
রিম নিজেই বলল, মা, আমি এবার নিয়ম মেনে এই গাছের যত্ন নেব!
এরপর সে অ্যালার্ম সেট করল, নিয়মিত গাছে পানি দিল। কয়েক দিন পর চারাটি সতেজ হয়ে উঠল। রিম খুশিতে মাকে দেখিয়ে বলল, মা গাছটা সতেজ হয়ে গেছে!
মা তখন বললেন, এটাই দায়িত্বশীলতা– কারও ওপর ভরসা রাখা আর নিজের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করা।
রিমের গাছের মতোই সন্তানের দায়িত্ববোধও যত্ন আর ধৈর্যের মধ্য দিয়েই গড়ে ওঠে।
কীভাবে আপনার সন্তানদের দায়িত্ববান করে তুলবেন? আসুন, দেখে নিই কিছু সহজ উপায়।
ছোট থেকেই দায়িত্ব দিন
শিশুদের বয়স অনুযায়ী ছোট ছোট দায়িত্ব দিন। ৩-৪ বছর বয়সে খেলনা গোছানো, ৬-৭ বছর বয়সে নিজের জামা-জুতা ঠিক জায়গায় রাখা, আর ১০-১২ বছর বয়সে নিজের বইপত্র সাজানো বা ঘর গোছানোর দায়িত্ব দিন। এতে তারা বুঝতে শিখবে নিজের কাজ নিজে করা মানেই দায়িত্বশীল হওয়া।
নিয়ম তৈরি করুন, কিন্তু চাপ দেবেন না
একটি সহজ রুটিন বানিয়ে দিন– যেমন, স্কুল থেকে ফিরেই ব্যাগ গুছিয়ে রাখা বা পড়ার টেবিলে বসা। ভুল করলে শাস্তি দেবেন না, বরং বুঝতে দিন ভুল করলে তার প্রভাব কী হয়। যেমন– হোমওয়ার্ক না করলে পরদিন ক্লাসে শিক্ষককে জবাবদিহি করতে হবে। এটিই তার শিখে নেওয়ার সুযোগ।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিন
ছোটখাটো ব্যাপারে তার মতামত নিন। কোন রঙের জামা পরবে বা সন্ধ্যায় কী খাবে– এসব সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে দিন। এতে তারা শেখে, নিজের কাজ নিজেকেই করতে হয়।
টাকার মূল্য বোঝান
অল্প বয়স থেকে টাকা ব্যবহারের অভ্যাস করান। মাসিক পকেটমানি দিয়ে পছন্দমতো জিনিস কিনতে দিন। যদি নতুন খেলনা চায়, তাহলে তাকে বলুন নিজের সঞ্চয় থেকে কিনতে। এতে সে বুঝবে ধৈর্য ধরে পরিকল্পনা করলে ইচ্ছেপূরণ হয়।
শুধু নিজের না, সমাজের দায়িত্বও শেখান
বয়স্ক আত্মীয়দের খোঁজ নেওয়া, প্রতিবেশীর বিপদে পাশে দাঁড়ানো বা ছোটখাটো সামাজিক কাজে অংশ নেওয়া– এসব শেখালে তারা বুঝবে, দায়িত্ব শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজের জন্যও।
যা বলবেন, তা নিজেও মানুন
সন্তানের সামনে দায়িত্বশীল আচরণ করুন। সময়মতো বিল পরিশোধ, প্রতিশ্রুতি রক্ষা, কাজের প্রতি আন্তরিকতা– এসব তারা আপনাকে দেখেই শিখবে। আপনি যদি দায়িত্ব এড়িয়ে যান, তাহলে তারাও শিখবে দায়িত্ব ফাঁকি দিতে।
ভুল থেকে শিখতে দিন
ভুল করলেই বকাঝকা করবেন না। বরং তাকে ভাবতে দিন, ভুলটা কীভাবে নির্ভুল করা যায়। যেমন– গাছের যত্ন না নিয়ে মেরে ফেললে তাকে বলুন নতুন চারা লাগাতে। এতে সে বুঝবে ভুল করা দোষের কিছু নয়, বরং শোধরানোর সুযোগ।
প্রচেষ্টা ও অগ্রগতির প্রশংসা করুন।
শুধু সফল হলে নয়, চেষ্টার জন্যও প্রশংসা করুন। বলুন, ‘তোমার চেষ্টা দেখে আমি গর্বিত!’ এতে আত্মবিশ্বাস বাড়বে, দায়িত্ব নিতে আরও উৎসাহিত হবে।
ধৈর্য ধরুন
দায়িত্বশীলতা রাতারাতি আসে না। ধাপে ধাপে শেখে। মাঝেমধ্যে আপনার সন্তান ভুল করতে পারে। ধৈর্য হারাবেন না, বরং পাশে থেকে উৎসাহ দিন। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ ল কর যত ন ন ল করল র বয়স
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটির দিনে ওটিটিতে দেখতে পারেন যে সিনেমা ও সিরিজ
দেশের ওটিটিতে কনটেন্ট ছাড়াও চলতি সপ্তাহে ওটিটিতে এসেছে ও আসছে কিছু কাঙ্ক্ষিত সিনেমা-সিরিজ। এর মধ্যে বঙ্গতে মুক্তি পেয়েছে তাসনিয়া ফারিণ অভিনেত্রীর প্রথম চলচ্চিত্র ফাতিমা। এ ছাড়াও অ্যামাজন প্রাইমে খাউফ ও নেটফ্লিক্সে আসছে আই হোস্টেজসহ দারুণ কিছু কনটেন্ট। ওটিটি দুনিয়ার খবরাখবর নিয়েই এই আয়োজন
ফাতিমা
অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের প্রথম দেশীয় সিনেমা ‘ফাতিমা’। গত বছর ২৪ মে এটি মুক্তি পায় প্রেক্ষাগৃহে। তারও আগে ইরানের ৪২তম ফজর চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয়েছিল সিনেমাটির। এমনকি এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ফারিণ সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারও অর্জন করেন সেখান থেকে। দর্শক-সমালোচকদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয় সেটি। উৎসব ও প্রেক্ষাগৃহ ঘুরে সেই সিনেমাটি এবার মুক্তি পাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। ১৭ এপ্রিল বঙ্গতে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। ছুটির দিনে তাই সিনেমাটি দেখে নেওয়া যেতে পারে। এতে তাসনিয়া ফারিণ ছাড়াও এখানে অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান, তারিক আনাম খান, পান্থ কানাই, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অনেকে।
খাউফ
সাসপেন্স ও ভৌতিক গল্পের সিরিজ ‘খাউফ’। ট্রেলারে দেখা যায় একজন তরুণী যিনি অতীতের দানবদের হাত থেকে বাঁচতে একটি নতুন শহরে আশ্রয় খুঁজছে। তিনি যে ঘরে আশ্রয় নেন সেই ঘরটি আসলে স্বাভাবিক ঘর নয়। যাতে লুকিয়ে আছে ভয়াবহতা, আছে মৃত্যুর গন্ধ ও অশুভ শক্তি। পঙ্কজ কুমার ও সূর্য বালাকৃষ্ণান যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন সিরিজটি। এতে অভিনয় করেছেন মনিকা পানওয়ার, রজত কাপুর, গীতাঞ্জলি কুলকার্নি, শিল্পা শুক্লাসহ অনেকেই। আজ অ্যামাজন প্রাইমে মুক্তি পাচ্ছে সিরিজটি।
ডেভিড
একজন সাবেক বক্সার ও নিরাপত্তারক্ষীর জীবনের গল্প উঠে এসেছে ডেভিড সিরিজটিতে। যাতে দেখা যায় আশিক আবু একজন প্রাক্তন বক্সার। যাঁর স্ত্রী বাড়ির বেশির ভাগ দায়িত্ব পালন করেন। আর্থিক অভাব সত্ত্বেও তিন সদস্যের পরিবার নিয়ে সুখেই জীবনযাপন করেন। আবু জীবিকা নির্বাহের জন্য নিরাপত্তার চাকরি নেয়। আন্তর্জাতিক বক্সিং চ্যাম্পিয়ন, সাইনুল আখমাদভকে পাহারা দেওয়ার জন্য নিয়োগ করা হয়, যিনি বক্সিং রিংয়ে কুখ্যাত। একদিন দুর্ঘটনা ঘটে এবং তুর্কি তারকার সঙ্গে একটি উত্তপ্ত মুখোমুখি তাঁকে রিংয়ে ফিরিয়ে আনে। গোবিন্দ বিষ্ণু পরিচালিত সিরিজটিতে অভিনয় করেছেন সাইজু কুরুপ, অ্যান্টনি ভার্গিস, লিজোমল, বিজয় রাঘবন, মো. ইসমাইলসহ অনেকেই। সিরিজটি আজ থেকে জি ফাইভে দেখা যাবে।
আই হোস্টেজ ও ইস্তাম্বুল এনসাইক্লোপিডিয়া
আমস্টারডামের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি অ্যাপল স্টোরে প্রবেশ করে একজন বন্দুকধারী। হুলস্থুল কাণ্ড ঘটে সেখানে। সেখানকার পুলিশ বিষয়টি সমাধানের জন্য আসে এবং বন্দুকধারীর সঙ্গে সূক্ষ্ম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। এ ঘটনাকে নিয়েই নির্মিত হয়েছে আই হোস্টেজ। মূলত সত্য ঘটনা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই সিরিজটি নির্মিত। এতে অভিনয় করেছেন সোফিয়ান মুসুলি, অ্যাডমির সেহোভিচ, ইমানুয়েল ওহেন বোয়াফোসহ অনেকেই। আজ থেকে সিনেমাটি দেখা যাবে নেটফ্লিক্সে।
আজ থেকে ‘ইস্তাম্বুল এনসাইক্লোপিডিয়া’ সিরিজটি দেখা যাবে নেটফ্লিক্সে। যার গল্পে দেখা যাবে, একজন তরুণী ছাত্রী ইস্তাম্বুল শহরের পরিবার থেকে আলাদা এক বন্ধুর সঙ্গে বসবাস করেন। যে বন্ধুর সঙ্গে তাঁর শহরের নানা বিষয় অভিজ্ঞতা নেয়। এবং নিজের বিশ্বাসের পরীক্ষায় নামে। বিভিন্ন চরিত্রে এতে অভিনয় করেছেন কানান এরগুডার, হেলিন কান্দেমির, কান মিরাক সেজেন।