Samakal:
2025-03-27@23:23:47 GMT

রমজানে সুস্থ থাকুন

Published: 25th, February 2025 GMT

রমজানে সুস্থ থাকুন

রমজান মাসে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা উচিত। কারণ, এ সময় আপনার শরীর দীর্ঘসময় ধরে ক্ষুধার্ত থাকে। তাই রমজান মাসে আপনি কী খেতে পারেন আর কী খেতে পারেন না– তার দিকে নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আসুন জেনে নেওয়া যাক রোজায় কীভাবে সুস্থ থাকা যায়।
প্রথমত, রমজান মাসে বাংলাদেশে প্রচলিত খাবারগুলো বেশির ভাগ তেলে ভাজা ও গুরুপাক হয়। যেমন– পিঁয়াজু, বড়া, বেগুনি, ডিমের বড়া ইত্যাদি। এ ছাড়া অনেক জায়গায় ইফতারে বিরিয়ানির মতো খাবারের প্রচলন রয়েছে। এগুলো নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। ফলে শরীর ডিহাইড্রেট হওয়ার পাশাপাশি মুখ শুকিয়ে যাবে, তৃষ্ণা অনুভূতি হবে এবং মাথাব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ইফতার থেকে শুরু করে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি ও পানিযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে ভুলবেন না। এছাড়া ইফতারের শুরুতে সহজ ও নরম খাবার গ্রহণ করুন। এতে সারাদিন রোজা রাখার পর পরিপাকতন্ত্রে কোনো গোলযোগ সৃষ্টি করবে না।
দ্বিতীয়ত, সারাদিন রোজা রাখার পর অনেকেই খাবার পেয়ে সব খাবার একসঙ্গে খেতে শুরু করেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। খুব তাড়াতাড়ি খাবার হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ধীরে ধীরে পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করুন।
তৃতীয়ত, রমজানে আমরা খাবার সময় পাই দিনরাতে তিনবার। অল্প সময়ে অধিক খাবার গ্রহণ করলে, খাবার হজম করতে যেমন কষ্টকর হয়, তেমনি এটি স্বাস্থ্যের ওপর বিশাল প্রভাব পড়বে। এটি হরমোনের ভারসাম্য, ওজন বৃদ্ধি ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
চতুর্থত, অনেকেরই বিভিন্ন রোগ থাকে। রমজানে রোজা রাখার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে রোজা রাখবেন এবং খাবার নিয়ে সচেতন থাকবেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগী, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা, অন্তঃসত্ত্বা নারী, আর্থ্রাইটিসজনিত সমস্যা, আইবিএস ইত্যাদি। ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন এবং মেডিসিন এবং ইনসুলিন ডোজ ঠিক রেখে রোজা রাখবেন। 
উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগীরা অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, লবণাক্ত খাবার, সসজাতীয় খাবার গ্রহণ করবেন না। সুষম সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন। খাবারের তালিকায় মাছ, ডাল, শাকসবজি, ফল, বাদামকে গুরুত্ব দিন। এ ছাড়া খাবারের সালাদকে গুরুত্ব দিন।
অন্তঃসত্ত্বা নারী
রমজানে অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা চিকিৎসকের পরামর্শে রোজা রাখুন।
কিডনি রোগী
কিডনিতে আক্রান্ত ব্যক্তি ডাল ও ডালের তৈরি খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে রোজায় বেসন দিয়ে বড়া, হালিম, ডালের বড়া ইত্যাদি। লবণাক্ত খাবার, শাকসবজি, ফল ও পানির ব্যাপারে সতর্ক হোন। 
বয়স্ক রোগী
পরিবারে অনেক বয়স্ক ব্যক্তি আছেন। তাদের খাদ্যতালিকায় নরম, পাতলা, সহজপাচ্য খাবার যেমন স্যুপ, হালিম, দুধ দিয়ে সুজি, সেমাই খাবার দিন। ভাজাপোড়া খাবার পরিমিত খাবেন। আইবিএস ব্যক্তিরাও এ ধরনের খাবার খেতে পারেন। দুধজাতীয় খাবারে সমস্যা হলে দুধের পরিবর্তে পানি দিয়ে সুজি, সেমাই খেতে পারেন কিংবা ল্যাকটোজমুক্ত দুধ হাতের কাছে থাকলে তা দিয়ে খেতে পারেন। প্রতিদিন একটি ডিম সেদ্ধ, কলা, পাকা পেঁপে, খেজুর দিয়ে ইফতার করবেন।
সতর্কতা 
১.

কৃত্রিম শরবত এড়িয়ে চলুন। কারণ এতে কৃত্রিম স্বাদ এবং প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। এর পরিবর্তে স্কিমড মিল্ক, তুলসী বা চিয়া বীজ দিয়ে একটি পানীয় তৈরি করে খান। শরবতে বিটরুট রস দিতে পারেন গোলাপি রং ধারণ করবে। এ ছাড়া চিয়া বীজ পানি ধরে রাখে; যার ফলে হাইড্রেশন উন্নত হয়। এটি হজমে সহায়তা করবে।
২. অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার গ্রহণ করবেন না।
৩. অতিরিক্ত চা বা কফি পান করবেন না। বিশেষ করে সেহরিতে। এটি প্রস্রাবের উৎপাদন বৃদ্ধি করে; যার ফলে খনিজ পদার্থের ক্ষয় হবে। 
৪. মাসজুড়ে সুষম বৈচিত্র্যময় খাবার গ্রহণ করুন। ফলমূল, শাকসবজি গ্রহণ করুন। লাল মাংস, মাছ, মুরগি, ডাল পরিমিত গ্রহণ করুন। চর্বিহীন দুধ বা টকদই গ্রহণ করুন। জটিল কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার যেমন গোটা শস্য, বাদামি স্টার্চযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। বাদাম, কিশমিশ, খেজুরের মতো শুকনো খাবার গ্রহণ করুন পরিমাণমতো।
৫. কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমান। তারাবির পর একটু বিশ্রাম নিন। এতে শরীরের ক্লান্তি দূর হবে। 
৬. যারা নিয়মিত নামাজ, তারাবির নামাজ আদায় করেন, তাদের ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই।  যারা তারাবির নামাজ পড়তে পারেন না কিংবা শারীরিক সমস্যা তারা ইফতার, সেহরিতে খাবারের পর একটু হাঁটুন। v
লেখক: পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রমজ ন র পর ম পর ম ণ করব ন রমজ ন ইফত র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

বিবিসির সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠাল তুরস্ক

যুক্তরাজ্যের সরকারি সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) সাংবাদিক মার্ক লোয়েনকে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্ক। তিনি দেশটিতে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করছিলেন। লোয়েনকে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে বিবিসি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে।

বিবিসি বলেছে, লোয়েনকে বুধবার ইস্তাম্বুলে গ্রেপ্তার করা হয়। চলমান বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে কয়েক দিন তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন। গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এক বিবৃতিতে বিবিসি বলেছে, ‘আজ (বুধবার) সকালে বিবিসি নিউজের প্রতিবেদক মার্ক লোয়েনকে ইস্তাম্বুল থেকে ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ। যে হোটেলে তিনি অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে আগের দিন তুলে এনে তাঁকে ১৭ ঘণ্টা আটক রাখা হয়। সাম্প্রতিক বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে মার্ক লোয়েন তুরস্কে অবস্থান করছিলেন। আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হওয়ায় তাঁকে তুরস্ক ছাড়তে বলা হয়।’

দেশজুড়ে চলা সাম্প্রতিক বিক্ষোভে ১ হাজার ৮৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তুরস্কের ১১ জন সাংবাদিকও রয়েছেন।

আরও পড়ুনতুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কে এই একরেম ইমামোগলু২৬ মার্চ ২০২৫

রোববার রাতে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ব্যাপকতা বাড়ে। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারীকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এর আগে ২০ মার্চ বিক্ষোভ দমনে পিপার স্প্রে ও জলকামান ব্যবহার করা হয়।

ইমামোগলুকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়। তাঁকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। গ্রেপ্তারের পর ইমামোগলুকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ