কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে রোজা। এখন থেকেই নিতে হবে প্রস্তুতি। সুস্থ থাকতে সেহরিতে রাখুন সহজপাচ্য খাবার। স্বাদে ভিন্নতা আনতে ইফতারের প্রথম দিন ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনির পাশাপাশি বানাতে পারেন অন্যরকম কিছু খাবার। রেসিপি দিয়েছেন আলিফ রিফাত
চিয়া সিড পুডিং
উপকরণ: চিয়া সিড ১/৪ কাপ, দুধ ১ কাপ, খেজুর কুচি ২টা, বাদাম কুচি ১ চা চামচ, ভ্যানিলা এসেন্স ১/৩ চা চামচ, ১টা কলা টুকরো করা।
প্রস্তুত প্রণালি: দুধ, চিয়া সিড, খেজুর কুচি, ভ্যানিলা এসেন্স একসঙ্গে মিক্স করে ৪-৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর কাটা কলা ও বাদাম কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
ওটস খিচুড়ি
উপকরণ: ওটস ১/২ কাপ, পছন্দমতো সবজি কাটা ১ কাপ, মুরগির মাংস ছোট করে কাটা ১ কাপ, মসুর ও মুগ ডাল ভেজে ভেজানো ১/৩ কাপ, আদা-রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১/৩ চা চামচ, তেল বা ঘি ২ টেবিল চামচ, পানি ২ কাপ, ধনিয়া পাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি: বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে মাংসের টুকরো ম্যারিনেট করে রাখতে হবে ১০-১৫ মিনিট। একটি পাত্রে তেল বা ঘি দিয়ে মাংস কষাতে হবে। মাংসের পানি শুকিয়ে গেলে সবজি ও ডাল দিয়ে আবারও কষাতে হবে। এবার দেড় কাপ পানি দিয়ে সবজি ও ডাল সেদ্ধ করতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে ওটস মিশিয়ে সাবধানে নাড়তে হবে। ১/২ কাপ গরম পানি দিয়ে অল্প আঁচে খিচুড়ি দমে রাখতে হবে। ওটস সেদ্ধ হয়ে এলে ধনিয়া পাতা কুচি দিয়ে নামাতে হবে।
ভাতুরি
উপকরণ: পোলাও চাল, বাসমতী চাল ১/২ কেজি, মাছের ফিলে ৪ পিস, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, কাঁচামরিচ কুচি ২ টেবিল চামচ, আদা কুচি ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ চা চামচ, সরিষা পেস্ট ১ টেবিল চামচ, ধনিয়া পাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২টা, লবণ স্বাদমতো, পানি ১ কাপ, নারকেল দুধ ১/২ কাপ ।
প্রস্তুত প্রণালি: চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে ৩০ মিনিট। মাছে লবণ ও লেবুর রস মাখিয়ে ৩০ মিনিট ম্যারিনেট করে ধুয়ে নিন। এবার একটা পাত্রে হলুদ, মরিচ কুচি, ধনিয়া পাতা কুচি, সরিষা পেস্ট ও লবণ মেখে নিন। মাছের ফিলের এক পাশে মসলার মিশ্রণটা মাখিয়ে রোল করে সুতা দিয়ে বেঁধে নিন। এবার যে পাত্রে ভাতুরি রান্না করা হবে সেই পাত্রে পেঁয়াজ কুচি, লবণ, তেল ও অবশিষ্ট মাছের মসলা দিয়ে ভালো মতো মেখে তার ওপর সুতায় বেঁধে রাখা মাছ বিছিয়ে দিতে হবে। এবার আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা চাল, নারকেল দুধ ও পানি দিয়ে চুলায় বসাতে হবে ফুল আঁচে। পানি ফুটে উঠলে চুলার জ্বাল কমিয়ে দমে বসিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর আঁচ বন্ধ করে আরও ৫ মিনিট দমে রেখে পরিবেশন করুন।
ফিশ কেক
উপকরণ: আলু সেদ্ধ ২-৩টা, যে কোনো মাছের ফিলে ৩-৪ টুকরো, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, পেঁয়াজ কলি কুচি ১/২ কাপ, অরিগনো ১/২ চা চামচ, চিলি ফ্লেক্স ১/২ চা চামচ, রসুন কুচি ১ টেবিল চামচ, মাখন ৩ টেবিল চামচ, ময়দা পরিমাণমতো, ফেটানো ডিম ২টা, ব্রেড ক্রাম্ব, লবণ ও তেল পরিমাণমতো ।
প্রস্তুত প্রণালি: আলু এমনভাবে সেদ্ধ করতে হবে যাতে পানি পানি ভাব না থাকে। মাছ ছোট ছোট চৌকোনা টুকরো করে লবণ ও গোলমরিচ মাখিয়ে মাখনে ভেজে নিন। ওই মাখনেই রসুন কুচি দিয়ে ভাজতে হবে। এরপর একে একে অরিগনো চিলি ফ্লেক্স পেঁয়াজকলি দিয়ে ভাজতে হবে ২ মিনিট। এরপর আলু, ভাজা মাছ ও মসলা একত্রে মাখাতে হবে আলতো করে। এবার পছন্দমতো শেপে ফিশ কেক বানিয়ে ময়দায় গড়িয়ে, ডিমে চুবিয়ে, ব্রেডক্রাম্বে মাখিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে ১০-১৪ মিনিট। এরপর ডুবো তেলে ভাজতে হবে। রুটি, ভাত কিংবা গার্লিক ব্রেডের সঙ্গে অনায়াসে সেহরিতে খাওয়া যায় এই মজাদার সহজপাচ্য ফিশ কেক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মোটরসাইকেলের জন্য ডেকে নিয়ে হত্যা, যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নড়াইলে ইয়াছিন মোল্যা হত্যা মামলায় হোসাইন মোল্যা ওরফে হামজা (২১) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে নড়াইলের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষনার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হোসাইন মোল্যা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি নড়াইল সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্যার ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে ইয়াছিন মোল্যা একটি লাল রঙের পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান না মেলায় দুই দিন পর ১৮ জানুয়ারি ইয়াছিনের বোন নড়াইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এরপর ২২ জানুয়ারি দুপুরে পুলিশ জানায়, আলোকদিয়া ঈদগাহগামী ইটের রাস্তাার পাশে ইয়াছিনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়না তদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়।
এ ঘটনার তদন্তকালে পুলিশ হোসাইন মোল্যা ও মো. হাসিব খান নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, মেলা দেখার কথা বলে কৌশলে ইয়াছিনকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। মধ্যরাতে আলোকদিয়া গ্রামে গিয়ে আগুন জ্বালিয়ে আগুন পোহায়। একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ গোপন করতে খেজুর গাছের শুকনা পাতার নিচে ঢেকে রাখা হয় এবং তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। ২৩ জানুয়ারি ইয়াছিনের বাবা বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় ৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক বুধবার বিকালে রায় ঘোষণা করেন। এতে হোসাইন মোল্যার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রামাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেন। তবে বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন।
নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ঢাকা/শরিফুল/টিপু