কারাগারে অসুস্থ সিএমপির সাবেক কমিশনার, চমেকে ভর্তি
Published: 25th, February 2025 GMT
কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলামকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে। রোববার সাইফুল কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান জুয়েল।
তিনি বলেন, হত্যা মামলার আসামি সিএমপির সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলাম কারাগারে শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, সাইফুলের হার্ট ও শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাকে সিসিইউতে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সিএমপির সাবেক কমিশনারকে এনজিওগ্রাম করতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার এক সপ্তাহ আগে হার্টে রিং পরিয়েছেন এমন মেডিকেল রেকর্ড আদালতে উপস্থাপন করেছেন। আদালত তাকে যথাযথ চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি চান্দগাঁও থানায় করা একটি হত্যা মামলায় সাইফুলকে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হলে জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত। পরে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে সাইফুলকে ডিভিশন সুবিধা দেওয়া হয়। গত বছরের ৪ জুলাই সিএমপির ৩২তম কমিশনার হিসেবে যোগ দেন সাইফুল ইসলাম।
এর আগে তিনি এমআরটি পুলিশের ডিআইজি, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর পুলিশে রদবদলের মধ্যে সাইফুল ইসলামকেও চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামে সংঘাতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়। এসব ঘটনায় থানা ও আদালতে অর্ধশতাধিক মামলা হয়। এসব মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স এমপ র
এছাড়াও পড়ুন:
খুমেক হাসপাতালে পাঁচ দফা দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা পাঁচ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে এই কর্মবিরতি চলছে। এতে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) সভাপতি ডা. আরাফাত হোসেন বলেন, “শেখ হাসিনা সরকার ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করেছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যখাতের বিপ্লব সাধনের জন্য ৫ দফা দাবি পেশ করেছি। দাবি না মানা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করব আমরা।”
আরো পড়ুন:
বাগেরহাটে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষে আহত নেতার মৃত্যু
হেলিকপ্টারে এসে পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে ব্যতিক্রমী বিদায়
পাঁচ দফা দাবি হলো:
১. এমবিবিএস ও বিডিএস ব্যতীত কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না। বিএমডিসি এর উক্ত আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন শুধুমাত্র এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সালে হাসিনা সরকার ম্যাটসদেরকে বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করেছিল, এই ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট এর বাইরে ড্রাগ প্রেসকিবেল করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্ট এর বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে:
ক. দ্রুত ১০ হাজার জন ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সকল শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে পূর্বের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে।
খ. প্রতিবছর ৪/৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
৪. সকল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ সমূহ বন্ধ করে দিতে হবে। ইতোমধ্যে এসএসসি পাশ করা (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, এই ৫ দফা দাবিতে দেশের বিভিন্ন মেডিকেলে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চললেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছে। তারা দাবি পূরণের কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না। তাদের এই উদাসীনতায় সবাই ক্ষুব্ধ। ইন্টান চিকিৎসকরা মনে করে, তারা আমাদের দাবিগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশের অন্যান্য সকল মেডিকেল কলেজের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জাতীয় একটি ইস্যুতে কর্মবিরতি পালন করছে। তাদের এই দাবির যৌক্তিকতা রয়েছে। কর্মবিরতিতে যাতে রোগীদের কোনো ধরণের ক্ষতি না হয় এবং প্রত্যেক রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত হয়, সে জন্য আমরা মিড লেভেলের চিকিৎসক যেমন সহকারী রেজিস্ট্রার, অনরারি মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অফিসারকে আরো একটিভ হয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়েছি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ