কেরানীগঞ্জে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা, তরুণকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ
Published: 25th, February 2025 GMT
ঢাকার কেরানীগঞ্জে এক গৃহবধূকে ধারালো অস্ত্র গিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক তরুণকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আমবাগিচা বউবাজার এলাকায় নাজিম হোসেনের ছয়তলা ভাড়াবাড়ির নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম সীমা আক্তার (৪০)। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার বড়কান্দি গ্রামের জলিল বেপারীর মেয়ে। তাঁর স্বামী আক্তার হোসেন ফল ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে এই দম্পতি কেরানীগঞ্জের আগানগর আমবাগিচা বউবাজার এলাকায় বসবাস করতেন। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক তরুণের নাম ইমাম হোসেন (২৫)। তিনি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ এলাকার বাসিন্দা।
এ ঘটনার পর রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সূত্র ধরে সীমা আক্তার ইমাম হোসেনের ভাড়া বাসায় দেখা করতে এলে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইমাম হোসেন সীমা আক্তারকে ঘরে থাকা বঁটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এলাকাবাসীর সহায়তায় ইমাম হোসেনকে আটক করে।
ভবনের মালিক নাজিম হোসেনের ছেলে রাকিব হেসেন বলেন, দুই বছর আগে ইমাম হোসেনের মামা শাহাবুদ্দিন বাসার নিচতলায় ভাড়া নেন। ইমাম ওই ঘরে থাকতেন। বিকেলে এক নারী তাঁর বাচ্চাকে নিয়ে ওই ঘরে আসেন বলে শুনেছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে যখন ইমাম হোসেন ওই ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এলাকাবাসী তাঁকে আটক করেন। পরে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ওই ঘরে গিয়ে এলাকাবাসী দেখতে পান, এক নারী রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন। পরে এলাকাবাসী বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ইমামকে আটক করে নিয়ে যায়।
ভবনের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে লোকজনের চিৎকার শুনে তিনি ঘর থেকে বের হন। এ সময় ইমাম হোসেনের মামার ঘরে গিয়ে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় এক নারীকে দেখতে পান। একপর্যায়ে এলাকাবাসী ইমামকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।
নিহত নারীর স্বামী আকতার হোসেন আগানগর মসজিদের সামনে ফুটপাতে ফল বিক্রি করেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যার দিকে কয়েকজন লোক তাঁর স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় ধরাধরি করে দোকানের সামনে নিয়ে আসেন। এ সময় তিনি সীমাকে প্রথমে পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার স্ত্রীর হত্যাকারীর বিচার চাই।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিবাহবহির্ভূত প্রেমের জের ধরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটতে পারে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক ব স স পর দ অবস থ গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
হবিগঞ্জে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে চারজন নিহত, আহত ৫
হবিগঞ্জের মাধবপুরে ট্রাকের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে চারজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাখরনখর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকাগামী একটি ট্রাক মাধবপুর উপজেলার বাখরনখর নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে চারজন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও দুজন নারী। গুরুতর আহত পাঁচজনকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠনো হয়েছে।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুলাহ আল মামুন আজ সকালে বলেন, পিকআপ ভ্যানে বাসাবাড়ির মালামালসহ ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁরাই হতাহত হয়েছেন। চারটি লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। দুর্ঘটনাকবলিত পিকআপ ভ্যানটি হাইওয়ে পুলিশের হেফাজতে আছে। আর দুর্ঘটনার পর ট্রাক নিয়ে পালিয়ে গেছেন চালক।