গাজীপুরের শ্রীপুরে পৃথক দুটি সড়কে দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল চালক জিহাদ হোসেন (২৫) ও মো. সিফাত হোসেন (৩০) নামে দুই যুবক নিহত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের লতিফপুর গ্ৰামে ও বিকেলে টেংরা-শ্রীপুর আঞ্চলিক সড়কের ওয়াদ্দারদিঘি দক্ষিণ পাশে এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জয়নাল আবেদীন মন্ডল।

নিহত জিহাদ হোসেন ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি গ্ৰামের মানিক মিয়ার ছেলে। সিফাত হোসেন একই জেলার গফরগাঁও উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম জানা সম্ভব হয়নি।

ওসি বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুটি ঘটনাস্থলেই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতদের স্বজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিজ মোটরসাইকেলে করে প্রেমিকাকে পেছনে বসিয়ে ঘুরতে যান জিহাদ হোসেন (২৫)। শ্রীপুর-কাপাসিয়া আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের লতিফপুর এলাকায় নাজিমুদ্দিন মেম্বারের বাড়ির সামনে মোটরসাইকেলসহ রাস্তায় ছিটকে পড়েন।

এসময় মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা মোসা. সোহানা নামের এ কিশোরী গুরুতরভাবে আহত হয়। তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

অপরদিকে মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫ টার দিকে উপজেলার টেংরা-শ্রীপুর আঞ্চলিক সড়কের ওয়াদ্দার দিঘি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মো. সিফাত হোসেন নামের এক যুবক নিহত হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোটরসাইকেলে চড়ে টেংরা অভিমুখে যাচ্ছিলেন সিফাত হোসেন। পথে ওয়াদ্দার দিঘী এলাকায় বিপরীতমুখী একটি পিকআপের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই সিফাত নিহত হয়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুটি ঘটনাস্থলেই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতদের স্বজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রফিক/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

শেষ সময়েও নতুন দলের নেতৃত্বে টানাপোড়েন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নেতাদের রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ ছেড়েছেন নাহিদ ইসলাম। আগামী শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে আত্মপ্রকাশ হতে যাওয়া দলটির আহ্বায়ক পদে তাঁর দায়িত্ব নেওয়া নিশ্চিত হলেও অন্য শীর্ষস্থানীয় পদ ও কমিটিতে কারা থাকছেন– তা নিয়ে শেষ সময়েও চলছে টানাপোড়েন। সব পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে কমিটির আকার বড় হতে পারে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলামটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের আত্মপ্রকাশের প্রস্তুতি সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বড় জমায়েতের মাধ্যমে রাজপথের শক্তি দেখানো হবে। সদ্য পদত্যাগ করা উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এ সভায় আসবেন বলে গুঞ্জন থাকলেও তা সত্যি হয়নি। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো এক দফার ঘোষণা করা এই ছাত্রনেতা প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে শিগগির দলে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। 
গতকাল প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগপত্র দেওয়ার পর নাহিদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ছাত্র-জনতার শক্তিকে সংহত করতে সরকারে থাকার চেয়ে রাজপথে আমার ভূমিকা বেশি হবে।’

শেষ সময়েও স্বস্তি নেই
জানাক সূত্র জানিয়েছে, আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব পক্ষকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তবে সরকারের কেউ থাকবে না। আপাতত কমিটির আকার হতে পারে ১৫০ সদস্যের। পরে তা বাড়িয়ে ৩০০ করা হতে পারে। এসব তথ্য জানিয়ে জানাক সূত্র সমকালকে বলেছে, কমিটিতে সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনের দায়িত্ব পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। 

দলের নাম কী হবে– তা গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত গোপন রাখা হয়েছে। তবে জানাক নেতাদের ভাষ্য, এখনও নাম চূড়ান্ত হয়নি। একটি সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, নামের সঙ্গে নাগরিক শব্দটি থাকতে পারে। জনতা কিংবা বিপ্লবী শব্দটিও রাখার প্রস্তাব রয়েছে। প্রতীক হিসেবে মুষ্টিবদ্ধ হাত, কলম, শাপলা ফুল প্রাথমিক তালিকায় রয়েছে। 
জানাক সূত্র আরও জানিয়েছ, দলের পরবর্তী সম্মেলন হতে সময় লাগতে পারে দু’বছর। ফলে আহ্বায়ক কমিটিই দলকে আগামী সংসদ নির্বাচনে নিয়ে যাবে। তাই আহ্বায়ক কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পেতে চেষ্টা করছে সব পক্ষই।

মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন– এমন কথা ক’দিন ধরে শোনা গেলেও তা এখনও শতভাগ নিশ্চিত নয়। জানাক আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদকে শীর্ষ চার পদের যে কোনো একটিতে চাইছেন তাদের অনুসারীরা। 

জুনায়েদকে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাসীরুদ্দীনকে জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিবের দায়িত্ব দিয়ে সমঝোতার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে নাসীরুদ্দীন এই সমীকরণ নাকচ করেছেন। তিনি সমকালকে বলেন, এখনও কিছুই চূড়ান্ত নয়, দল আত্মপ্রকাশের আগে ঠিক হবে।

দলের সম্ভাব্য শীর্ষ নেতাদের সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা নেতাদের আধিক্য নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উঠে আসা এক নেতা সমকালকে বলেন, ‘গ্রাম গুরুত্ব পাচ্ছে না।’ 
শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে নারী এবং সংখ্যালঘু ‘মুখ’ রাখা-না রাখা নিয়েও টানাপোড়েন রয়েছে। জানাকের নির্বাহী কমিটির এক সদস্য সমকালকে বলেন, অভ্যুত্থানে নারীর অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। যে রাজনৈতিক দল গঠিত হতে যাচ্ছে, এর শীর্ষ ১০ নেতার মধ্যে থাকতে পারেন– এমন দক্ষ নারী নেতার অভাব রয়েছে। আবার ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য। তাদের জায়গা দিতে গেলে যোগ্য কাউকে বাদ দিতে হবে। 

আদর্শিক টানাপোড়েন এখনও
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে প্ল্যাটফর্ম গড়ে গত ১ জুলাই আন্দোলনে নামেন। হাসিনা সরকারের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও রাজপথে নামেন। আন্দোলন রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। এক পর্যায়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্বাবাদী শাসনের অভাবনীয় পতন ঘটে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্রশক্তির নেতারা সামনের সারিতে থাকলেও ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতাও ছিলেন। রাজনৈতিক দল গড়তে ৮ সেপ্টেম্বর গঠন করা জানাকেও বিভিন্ন মতধারার সাবেক নেতারা রয়েছেন। ছাত্রশক্তি, ছাত্রশিবির, অধিকার পরিষদ এবং কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও বাম সংগঠন থেকে আসা নেতারা দলের আত্মপ্রকাশের শেষ সময়েও নিজ বলয় থেকে শীর্ষ নেতৃত্বে জায়গা করার চেষ্টা করছেন। গত সপ্তাহের মতো বিরোধ না থাকলেও, তা অব্যাহত রয়েছে। এ বিরোধ মীমাংসায় দলের আত্মপ্রকাশ চার দিন পিছিয়েছে। 

সব পক্ষই আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলামকে সমর্থন করেছে। ছাত্রশক্তি এবং অধিকার পরিষদের নেতাদের বড় অংশ সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনকে সমর্থন দিয়েছে। তিনি ছাত্রশক্তির প্রতিষ্ঠাতা। এই সংগঠনের এবং অধিকার পরিষদের সাবেক নেতাদের একাংশ এখনও নাসীরুদ্দীনকে সমর্থন করছেন। জানাক সূত্র বলছে, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম অন্তত শীর্ষ চার পদের যে কোনো একটিতে চাইছেন নাসীরকে। 

শিবিরের সাবেক নেতারাও চেষ্টা করছেন নিজ বলয়ের কাউকে শীর্ষ নেতৃত্বে রাখতে। শুধু অতীতে শিবিরসংশ্লিষ্টতার কারণেই শীর্ষ নেতৃত্বে সাবেক শিবির নেতাদের কাউকে রাখা হচ্ছে না– অভিযোগ তুলে ইতোমধ্যে জানাকের সহমুখপাত্র পদ ছেড়েছেন আরেফিন মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক দুই সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ জানাকের যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাফে সালমান রিফাত যুগ্ম সদস্য সচিব। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে চীন সফরে থাকায় দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তাদের থাকা হচ্ছে না। জানাক সূত্র জানিয়েছে, এর মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে গেছে, শীর্ষ পদগুলোতে শিবিরের কেউ থাকছে না। 

গত সোমবার মধ্যরাতে জানাক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে নয়, ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রিত হয়ে চীন গেছেন এই দুই নেতা। যদিও রাফে সালমান আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে নিশ্চিত করেন, জানাকের প্রতিনিধি নয়, অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতা হিসেবে চীন গেছেন। জানাক সূত্র জানায়, এর পরও এই দু’জনের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন স্পষ্ট হয়েছে। 
কোটাবিরোধী আন্দোলনের আগে ছাত্রলীগের পদে ছিলেন সারজিস আলম। হাসনাত আবদুল্লাহর পদ না থাকলেও আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। এ দু’জনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে অভ্যুত্থানের সামনের সারিতে ছিলেন। হাসনাত আবদুল্লাহ এখনও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। সারজিস জানাকের মুখ্য সংগঠক। অতীতে শিবিরসংশ্লিষ্টতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া না হলেও, ছাত্রলীগ ছেড়ে অভ্যুত্থানে যোগ দেওয়াদের মূল্যায়ন করা হবে বলে জানাক সূত্রের ভাষ্য। দল গঠিত হলেও প্ল্যাটফর্ম হিসেবে থেকে যাবে জানাক।

নতুন ছাত্র সংগঠন আসছে আজ 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে রেখে দিয়ে নতুন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন করতে যাচ্ছেন অভ্যুত্থানের নেতারা। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতোই ছাত্র সংগঠনে আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখ্য সংগঠক, মুখপাত্র চারটি শীর্ষ পদ থাকবে। যুগ্ম আহ্বায়ক, যুগ্ম সদস্য সচিব, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, সদস্যসহ বিভিন্ন পদ মিলে দেড় থেকে দুইশ জনের কমিটি ঘোষণা করা হবে। আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ হবে ছয় মাস।

ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হচ্ছেন আবু বাকের মজুমদার। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। আন্দোলনে যে ছয়জন সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল, তাঁর মধ্যে বাকের একজন। তিনি ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব ছিলেন, সেই কমিটির আহ্বায়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। 
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব হচ্ছেন জাহিদ আহসান। তিনি বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সেলের সম্পাদক। তিনি ২০২২ সালে আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে আসিফ মাহমুদসহ ২৪ জনের সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। 

কেন্দ্রীয় কমিটিতে মুখ্য সংগঠক পদে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর চৌধুরী। মুখপাত্রের দায়িত্ব পাচ্ছেন রাশিদুল ইসলাম রিফাত ওরফে রিফাত রশীদ। তিনিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ চার পদে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে রাখা হচ্ছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির আহ্বায়ক হবেন আবদুল কাদের। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং ৯ দফার ঘোষক। তিনিও ছাত্রশক্তির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। সদস্য সচিব পদে আসছেন ছাত্র মুহির আলম। অমর একুশের হলের এ আবাসিক ছাত্র গত ১৭ জুলাই ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। মুখ্য সংগঠক হচ্ছেন আল ইসলাম এবং মুখপাত্র হচ্ছেন রাফিয়া রেহনুমা হৃদি। ছাত্র সংগঠনটির স্লোগান ঠিক হয়েছে ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট। তবে ছাত্র সংগঠনের নাম প্রকাশ করা হয়নি। 
আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমাদের ছাত্র সংগঠন লেজুড়বৃত্তিক হবে না। নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক থাকবে না। সংগঠনের আর্থিক বিষয় অভ্যন্তরীণ চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

আবদুল কাদের বলেন, ২৮ বছরের বেশি কেউ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্যপদ পাবেন না। আবার বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটগুলোর ক্ষেত্রে সদস্য হতে পারবেন স্নাতকে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত। ফলে এখানে অছাত্ররা থাকতে পারবে না। 

জনতার কাতারে থাকতে পদত্যাগ
গতকাল দুপুরে শেষবারের মতো জাতীয় পতাকাবাহী গাড়িতে করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন যমুনায় যান নাহিদ ইসলাম। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, পদত্যাগপত্র দেওয়ার পর সরকারপ্রধানের সঙ্গে আলিঙ্গন করেন তিনি। 

যমুনা থেকে হেঁটে বেরিয়ে সাংবাদিকদের নাহিদ বলেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাকে ছাত্র-জনতার কাতারে থাকা উচিত। গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার জন্য এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার শক্তিকে সংহত করতে সরকারে থাকার চেয়ে রাজপথে আমার ভূমিকা বেশি হবে। সে জন্য আমি পদত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দলে অংশ নিতে আগ্রহী।
নাহিদ ইসলাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ৮ আগস্ট তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। পদত্যাগের পর পতাকাবিহীন গাড়িতে যমুনা ছাড়েন। 

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নাহিদের সাড়ে ছয় মাসের দায়িত্ব পালনের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফেসবুকে লেখেন, নাহিদ একদিন প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ