পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) শুরু হয়েছে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫। প্রতিযোগীর নেই কোন নির্দিষ্ট তালিকা। কোনো ইভেন্ট শুরুর আগে মাইকে সবার উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে, ‘কারা কারা অংশগ্রহণ করবেন তারা এসে স্ট্রেজে নাম দিয়ে যান।’

পর্যাপ্ত প্রতিযোগী না পাওয়া গেলে আবারো সবাইকে এভাবে ডাকা হচ্ছে নাম দেওয়ার জন্য। এরপর যারা নাম দিচ্ছেন, তাদের নিয়েই শুরু হচ্ছে প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার ঠিক আগ মুহূর্তে শেখানো হচ্ছে নিয়ম-কানুন।

এমনই হ য ব র ল অবস্থা দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়। আয়োজক কমিটির এমন অপেশাদারিত্ব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় দুই দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

এসএম আবদুল-আওয়াল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.শামীম আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শারীরিক শিক্ষা দপ্তর থেকে বিভাগগুলোতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে আগামী মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হবে জানিয়ে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার মধ্যে প্রতিযোগীদের নামের তালিকা বিভাগগুলোতে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। সময় স্বল্পতার কারণে অধিকাংশ বিভাগই শারিরীক শিক্ষা দপ্তরে প্রতিযোগীদের নামের তালিকা পাঠাতে পারেননি। এরপর বিভাগগুলোতে জানিয়ে দেওয়া হয়, খেলার মাঠে গিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য নাম দিতে।

শিক্ষার্থীরা জানান, শহীদ জাহিদ আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা গতকাল সোমবার হয়েছে। ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শেষ না হতেই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবার সময় রাখা হয়েছে একদিন। প্রতিযোগিতা নিয়ে আয়োজক কমিটির কোন প্রচার-প্রচারণাও ছিল না। আবার ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রাখা হয়নি। যাদের ক্লাস-পরীক্ষা ছিল তারা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেনি। ফলে এ প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগী ও দর্শক- কোনটাই আশানুরূপ হয়নি।

শিক্ষার্থীরা আরো জানান, খেলার সবকিছুই অগোছালো ছিল। প্রতিযোগীদের নাম দেওয়া, বাছাই করা, সময় ব্যবস্থাপনা এগুলোর মধ্যে কোন শৃঙ্খলা ছিল না। দৌড় প্রতিযোগিতায় একই সময়ে বাছাই, এরপর আবার ফাইনাল। শিক্ষার্থীদের ক্লান্তি-অক্লান্তি কথা মাথায় না রেখেই আয়োজক কমিটি সব মন মতো করে গেছে।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, “খেলায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রেজেন্টেশন দিতে গেছি। কিন্তু প্রেজেন্টেশন শেষ করে এসে দেখি ওই খেলা শেষ হয়ে গেছে।”

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন হোসেন বলেন, “বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে আগে সবার মাঝে যেমন আগ্রহ ছিল, সেটা একেবারেই দেখতে পায়নি। একটা বিভাগের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় এই প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি থাকে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খেলা কমিটিতে থাকা এক শিক্ষক বলেন, “দুইদিন আগে আমাদের কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা কতটুকু কাজ করব। যতটুকু সময় ছিল এর চেয়ে ভালো কিছু করা সম্ভবও ছিল না।”

প্রতিযোগিতার অগোছালো অবস্থার কারণ জানতে চাইলে মাঠে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, “আমাকে সকালে বলা হয়েছে মাঠে আসতে। এর আগের কোনকিছু আমি জানি না।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আবদুল-আওয়াল বলেন, “আমাদের হাতে সময় খুব কম ছিল। সামনের সপ্তাহেই রোজা। রোজার পর আবার গরম শুরু। সে কারণে আমাদের অল্প সময়ের মধ্যেই প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হয়েছে। আগামী বছর আমরা সময় নিয়ে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করব।”

ঢাকা/আতিক/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ধানমন্ডিতে র‌্যাব পরিচয় দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬

রাজধানীর ধানমন্ডিতে র‌্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি করা হয়েছে। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও নগদ টাকাসহ ডাকাতদলের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টার থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

গ্রেপ্তার ছয় জন হলো— ফরহাদ বীন মোশারফ, ইয়াছিন হাসান, মোবাশ্বের আহাম্মেদ, ওয়াকিল মাহমুদ, আবদুল্লাহ এবং সুমন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ‘RAB’ লেখাসম্বলিত কালো রঙের দুটি জ্যাকেট, তিনটি কালো রঙের ‘RAB’ লেখাসম্বলিত ক্যাপ, একটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার তৈরী ছেনি, একটি পুরাতন লাল রঙের স্লাই রেঞ্জ এবং নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা গেছে, ধানমন্ডিতে এম এ হান্নান আজাদের ‘অলংকার নিকেতন জুয়েলার্স’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ধানমন্ডি শাখার গলিতে নিজ বাড়ির নিচতলা, তৃতীয় তলা ও চতুর্থ তলায় এস এম সোর্সিং নামীয় প্রতিষ্ঠানের অফিস আছে। এছাড়া, ওই বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় একটি কনসালট্যান্সি অফিস এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলা নিয়ে এম এ হান্নান আজাদের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট আছে। বুধবার (২৬ শে মার্চ) ভোরে  তিনটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকারে করে ডাকাতরা দলবদ্ধভাবে ওই বাসার সামনে এসে ফটকে দায়িত্ব পালনরত নিরাপত্তাকর্মীদের বলে যে, তারা র‌্যাবের লোক, তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। তারা বাড়িতে অভিযান চালাবে বলে তাড়াতাড়ি গেট খুলতে বলে। তাদের কয়েকজনের গায়ে ‘RAB’ লেখাসম্বলিত কটি ছিল। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। তখন ডাকাতরা নিরাপত্তাকর্মীদের গালাগালি করতে থাকে এবং গেট না খুললে হত্যার হুমকি দেয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন গেটের ওপর দিয়ে উঠে জোর করে গেট খুলে ফেলে। এরপর তারা সবাই জোর করে বাড়ির ভেতরে ঢুকে নিরাপত্তাকর্মী, বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক ও গাড়িচালককে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর তারা নিচতলার অফিসের গেট ভেঙে পিয়নকে মারধর করে এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। 

এরপর ডাকাতরা তৃতীয় তলায় গিয়ে এস এম সোর্সিংয়ের অফিসের গেট ভেঙে ফেলে। গেট ভাঙার শব্দ পেয়ে চতুর্থ তলায় থাকা এস এম সোর্সিংয়ের তিন জন অফিস সহকারী তৃতীয় তলায় নেমে আসেন। ডাকাতরা তখন তাদের আটকে মারধর করে অফিসের চাবি ও বাসার চাবি দিতে বলে। ডাকাতরা জোর করে চাবি নিয়ে তৃতীয় তলার অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে এবং অফিসের ড্রয়ার ভেঙে নগদ ২২ লাখ টাকা লুট করে ও অফিসের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তাদের আরেকটি দল চতুর্থ তলার অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে আলমারি ভেঙে নগদ ১৩ লাখ টাকা লুট করে। এরপর তারা মালিক এম এ হান্নান আজাদের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের দুল ও চেইনসহ আনুমানিক ২.৫ ভরি স্বর্ণ (যার দাম ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা) লুট করে। এরপর তারা মালিক এম এ হান্নানকে জোর করে নিচে নিয়ে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। তখন ধানমন্ডি থানার একটি টহল টিম ওই বাড়ির সামনে হাজির হয়ে ডাকাতদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা ছেনি ও রেঞ্জ  দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। তখন আশেপাশে থাকা লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। 

এ ঘটনায় ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও মালিকের ভাগ্নে তৌহিদুল ইসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার ছয় জনসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিরতিহীন রোজা রাখা কি বৈধ
  • আশ্রয় নিয়ে খেয়ে দেয়ে ৪ শিশুসহ চম্পট, পরে ওই নারীকে আটক
  • অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন থেকে শিডিউল মেসেজ পাঠাবেন যেভাবে
  • লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া
  • উয়েফা, ফিফা ও লা লিগা কর্তৃপক্ষকে ধুয়ে দিলেন কুন্দে
  • হামজার চোট ও চেইন রিঅ্যাকশন
  • নিখোঁজের দুই দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার
  • ঈদের ছুটিতে ক্রিকেটাঙ্গন
  • রংপুর মেডিকেলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, ‘রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস’ চেয়ে শিক্ষার্থীদের বিবৃতি
  • ধানমন্ডিতে র‌্যাব পরিচয় দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬