ফেনীর সোনাগাজীতে আপত্তিকর ছবি তোলার পর তা ছড়ানোর হুমকি দিয়ে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে একাধিবার ধর্ষণ করেন কয়েকজন যুবক। পরে চক্রটি ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে ৫৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ নিয়ে থানায় ওই গৃহবধূ মামলা করার পর পুলিশ অভিযুক্তদের একজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম হারুনুর রশিদ ওরফে হারুন মিয়াজী। তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে পালানোর সময় ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।

গ্রেপ্তার হারুনুর রশিদ সোনাগাজী উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তারের পর তল্লাশি করে একটি মুঠোফোন ও একটি মেমোরি কার্ড উদ্ধার করে পুলিশ। যাতে গৃহবধূর আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে।

পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসামি হারুনুর রশিদ ওই গৃহবধূর স্বামীর পরিচিত। মুঠোফোন ঠিক করার কথা বলে তিনি ওই গৃহবধূর বাড়ি যান। তাঁর সঙ্গে জড়িত অপরাধী চক্রটি ওই গৃহবধূর কাছ থেকে ৮ ভরি স্বর্ণালংকারসহ মোট ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সম্প্রতি অভিযুক্তরা গৃহবধূকে আরও ১৫ লাখ টাকার জন্য চাপ দিলে গৃহবধূ এলাকা ছেড়ে অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে যান। পরে ওই গৃহবধূ তিনজনকে আসামি করে ১১ ফেব্রুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি হারুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

বায়েজীদ আকন বলেন, চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার আসামি হারুনুর রশিদকে আজ বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ৷

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভোলায় আটকে রাখা ৮টি গ্যাসভর্তি গাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা

ভোলায় পাওয়া গ্যাস দিয়ে জেলার উন্নয়নসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আটক ইনট্রাকো কোম্পানির এলপিজি গ্যাসভর্তি আরও আটটি গাড়ি (কাভার্ড ভ্যান) ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বদ্বীপ ছাত্রকল্যাণ সংসদের নেতারা।

এ সময় আন্দোলনের নতুন কর্মসূচিও দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ভোলার সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড কার্যালয়ের সামনে ছাত্র-জনতা লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটে বসবে।

ভোলাবাসী গত তিন বছর পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। দাবিগুলো হলো, ভোলার গ্যাস ভোলায় ব্যবহার করতে হবে, ঘরে ঘরে গ্যাস–সংযোগ দিতে হবে, ইন্ট্রাকোর সঙ্গে করা অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে, ভোলায় একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে, ভোলার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের শূন্য পদ পূরণ ও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বদ্বীপ ছাত্রকল্যাণ সংসদের আহ্বায়ক রাহিম ইসলাম বলেন, ‘ইন্ট্রাকো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে। শুক্রবার সকাল থেকে রোববার রাত পর্যন্ত আমাদের ডাকে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ, মানববন্ধন, মশাল মিছিল করে এবং ইন্ট্রাকোর আটটি গ্যাসবাহী গাড়ি আটক করে। পরে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় এনে গাড়িগুলো ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ওপর মহলের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত গ্যাস ভোলার বাইরে যাবে না।’

আরও পড়ুনভোলার গ্যাস নিজেরা ব্যবহার করতে চান ভোলাবাসী, পাঁচ দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৩ ঘণ্টা আগে

রাহিম ইসলাম আরও বলেন, ‘ফেসবুকে কিছু মানুষ আমাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করছে, আমরা নাকি টাকার বিনিময়ে গাড়ি ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে চাই, গাড়িগুলো কেবল নিরাপত্তার স্বার্থে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাস করি।’

‘আগামীর ভোলা’ সংগঠনের মুখ্য সংগঠক মীর মোশাররফ বলেন, ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ রয়েছে একটি বিশেষ আইনের কারণে, যা সরকারের স্বার্থে প্রণীত। অথচ অন্যান্য এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিতে গ্যাস–সংযোগ বন্ধ থাকলেও ভোলায় তা চলছে। এখন যেহেতু সংসদ বন্ধ, তাই রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করে ঘরে ঘরে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া সম্ভব।

এ সম্পর্কে ইন্ট্রাকোর ভোলা ডিপোর উপমহাব্যবস্থাপক নুরুন্নবী বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তাঁরা আমাদের গাড়িগুলো ছেড়ে দিয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমরা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখছি।’

আরও পড়ুনভোলায় গ্যাসভর্তি আরও তিনটি গাড়ি আটকে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ, উত্তেজনা১৯ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ