বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব হত্যাকাণ্ডের বদলা নেওয়া হবে: নিতাই রায়
Published: 25th, February 2025 GMT
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, ‘‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব হত্যাকাণ্ডের বদলা নেওয়া হবে। যে সমস্ত নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে, ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে, সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘জাতিকে মুক্ত করতেই বিএনপি নির্বাচন চাচ্ছে। বিএনপি দীর্ঘ সময় ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। বিএনপি কোনোভাবেই আগে স্থানীয় নির্বাচন চায় না। আগে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।’’
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা এবং রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলার দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। এমপিরা পালিয়েছে। মেয়ররা পালিয়েছে। ১৯৭১ সালে পালিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমান। আর একবার পালিয়েছিল ১৯৭৫ সালে, যখন সেনা অভ্যুত্থানে শেখ মুজিব মারা যায়। আ.
শেখ হাসিনা ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক, বিচার বিভাগ, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছে উল্লেখ করে নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘৭৫-এ ও শেখ মুজিব পালিয়ে গিয়েছিল, শেখ হাসিনাও ২৪-এ পালিয়েছে।’’
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলুর সঞ্চালনায় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির কাজী আলাউদ্দীন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী, জেলা বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, তারিকুল হাসান, আব্দুল আলীম, মৃনাল কান্তি রায়, আবুল হাসান হাদী, তাসকীন আহমেদ চিশতি, ড. মনিরুজ্জামান, আক্তারুল ইসলাম, ডা. শহিদুর রহমান, কামরুজ্জামান ভুট্ট প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বর্তমান সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে একটি দল নির্বাচন প্রলম্বিত করতে চাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র এদেশের জনগণ মেনে নেবে না। বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কারও ফাঁদে পা দেবেন না। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকারের হাতে দেশ তুলে দিন। যত কিছু সংস্কার করেন না কেন তা বাস্তবায়ন করতে হলে সংসদ লাগবে। তাই কোনো তালবাহানা না করে আগে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। বিএনপি ৩১ দফা মানলে আর কোনো সংস্কারের দরকার নেই বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।
সমাবেশে জেলার বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুনসহ বিভিন্ন স্লোগান নিয়ে মিছিল সহকারে জনসভা স্থলে যোগ দিচ্ছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের জনসভাস্থল কানায় কানায় ভরে ওঠে।
ঢাকা/শাহীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এ বছরই নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে: শামসুজ্জামান দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এ বছরই নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে। বিএনপির খেলা এখনও দেখে নাই। শুধু কয়টা জনসভা শুরু হয়েছে।
শনিবার বিকেলে পঞ্চগড় জেলা শহরের সড়ক জনপদের মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন তিনি। নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি, নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ নানা দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ভাই আপনি ভালো লোক, জ্ঞানীগুণী মানুষ, দেশে-বিদেশে আপনার সুনাম আছে, এদের পাল্লায় পড়িয়েন না, বিএনপিকে রাস্তায় নামায়েন না, যদি একবার রাস্তায় নামে....। ফুলের মালা দিয়ে আপনাকে বরণ করেছি, ফুলের মালা দিয়েই বিদায় করতে চাই।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ১৭ বছরে ৬০ লাখ মামলার আসামি হয়েছে। বাড়িতে ঘুমাতে পারে নাই। পঞ্চগড়ের ছেলেটাই বাঁচার জন্য ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালিয়েছে। সে ছাত্রদলের, যুবদলের, শ্রমিক দলের, কৃষক দলের বা বিএনপির। আমার বোনটা, একা তার সন্তানকে রেখে গিয়েছিল, স্বামীর দেখা পায়নি, কখনো বকে নাই। কয়টা ছেলে নামলো, কয়টা, এতই যদি শক্তি, এতই যদি ক্ষমতা, তাহলে ইলেকশন করেন না কেন, বিরোধিতা করেন কেন? পার্টি বানাবেন, ঘোষণা করবেন, সরকার সমর্থন দেবে, তারপর বুঝে দেখবেন ইলেকশন করবেন কিনা, বিএনপিকে চিনেন নাই এখনও।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন দলটির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, পঞ্চগড় সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রিনা পারভিন ও রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস শেখ, মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল, আদম সূফি, এম এ মজিদসহ আরও অনেকে।