প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি শক্ত হাতে সরকার পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সারাবিশ্বে আপনার সুনাম আছে। আশা করব, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দ্রুত ন্যূনতম সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবেন। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে স্থিতিশীলতা, শান্তি এবং ভবিষ্যতের জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবেন, এটাই প্রত্যাশা করি। 

বিএনপির উদ্যোগে মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে পিলখানায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নাকি শুধু নির্বাচন, নির্বাচন করছি, আমরা সংস্কার করতে চাই না– এত বড় মিথ্যা প্রচারণা তারা বিভিন্নভাবে চালাচ্ছে। কয়েকজন মানুষ, কয়েকটি গোষ্ঠী বিএনপিকে টার্গেট করেছে। মিথ্যা ও অপপ্রচার দিয়ে তারা বিএনপিকে হেয় করতে চায়। এসব কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। যাতে একটা গণতান্ত্রিক জায়গায় পৌঁছাতে পারি।’ 

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেটাকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। শেখ হাসিনা ভারতে বসে পরিকল্পনা ও চক্রান্ত করছেন, কী করে এই গণঅভ্যুত্থানের বিজয়কে নস্যাৎ করে দেওয়া যায়। সেই চক্রান্তে একটা অস্থির অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে।   

২৫ ফেব্রুয়ারিকে কালো দিন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০০৯ সালের এই দিনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে দূর্বল করে দেয়ার জন্য দেশের শক্ররা পরিকল্পিতভাবে বিদ্রোহ ঘটিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পরই অত্যন্ত পরিকল্পনার সঙ্গে বাংলাদেশের শক্রদের সঙ্গে যোগসাজস করে এই বিদ্রোহ ঘটানো হয়েছে। এই দিনে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর প্রায় ৫৭ জন কর্মকর্তাকে তারা হত্যা করেছে। সেদিন রাষ্ট্রের দায়িত্বে থেকে শেখ হাসিনা কি ভূমিকা পালন করেছেন, সেদিন সেনা বাহিনী প্রধান কি ভূমিকা পালন করেছেন? জাতির দুঃসময়ে সেনা বাহিনীর এগিয়ে আসা এবং তাদের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ সেনা বাহিনী আমাদের শক্তি। জাতির দুঃসময়ে তারা এগিয়ে আসেন। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে সেনা বাহিনী দেশপ্রেমিক ভূমিকা পালন করেছে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.

) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। 

এর আগে সকালে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষ্যে বনানীতে সামরিক কবরস্থানে  পিলখানায় শহীদ সামরিক কর্মকর্তা ও সদস্যদের উদ্দেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মির্জা ফখরুল। 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুইদিন ধরে পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ঘটনাগুলো ঘটতে সহায়তা করেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

কারাগারে অসুস্থ সিএমপির সাবেক কমিশনার, চমেকে ভর্তি

কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলামকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে। রোববার সাইফুল কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

মঙ্গলবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান জুয়েল।

তিনি বলেন, হত্যা মামলার আসামি সিএমপির সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলাম কারাগারে শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, সাইফুলের হার্ট ও শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাকে সিসিইউতে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সিএমপির সাবেক কমিশনারকে এনজিওগ্রাম করতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার এক সপ্তাহ আগে হার্টে রিং পরিয়েছেন এমন মেডিকেল রেকর্ড আদালতে উপস্থাপন করেছেন। আদালত তাকে যথাযথ চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি চান্দগাঁও থানায় করা একটি হত্যা মামলায় সাইফুলকে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হলে জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত। পরে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে সাইফুলকে ডিভিশন সুবিধা দেওয়া হয়। গত বছরের ৪ জুলাই সিএমপির ৩২তম কমিশনার হিসেবে যোগ দেন সাইফুল ইসলাম। 

এর আগে তিনি এমআরটি পুলিশের ডিআইজি, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর পুলিশে রদবদলের মধ্যে সাইফুল ইসলামকেও চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামে সংঘাতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়। এসব ঘটনায় থানা ও আদালতে অর্ধশতাধিক মামলা হয়। এসব মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ