আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা বুধবার
Published: 25th, February 2025 GMT
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ও দোসর দলগুলোকে নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে বুধবার বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে যাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যে গণঅবস্থানকারী ছাত্র-জনতার প্রতিনিধি দল।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে বের হওয়া পদযাত্রা শাহবাগ মোড়ে আটকে দেয় পুলিশ। পরে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে আগামীকাল বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সময় দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ সময়সূচি জানান। এরপর আন্দোলনকারীরা পদযাত্রা শেষ করে রাজু ভাস্কর্যের গণঅবস্থানে ফিরে যান।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজু ভাস্কর্যে জুলাই গণহত্যা, পিলখানা ও শাপলা চত্বরে হত্যাযজ্ঞ চালানোর দায়ে ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ ও মিত্রদের নিষিদ্ধের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলছে। কর্মসূচি থেকে এ পর্যন্ত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীপরিষদ, উপদেষ্টা ও নবম থেকে দ্বাদশ সংসদের সদস্যদের ফ্যাসিস্ট ঘোষণা করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিদিন সর্বস্তরের নাগরিকদের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে।
কর্মসূচির ১৩তম দিন মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় রাজু ভাস্কর্য থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা বের করেন গণঅবস্থানকারীরা।
এতে নেতৃত্ব দেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান মো.
পদযাত্রাটি শাহবাগ মোড়ে পুলিশ আটকে দিলে সেখানে সমাবেশে মিলিত হন আন্দোলনকারীরা। এ সময় জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান মো. আনিছুর রহমান বলেন, “সিরিয়াতে পরিবর্তনের পর বাথ পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জার্মানিতেও পতনের পর নাৎসিবাদ ও ইতালিতেও ফ্যাসিবাদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নামক জঙ্গী সন্ত্রাসী সংগঠনকে এখন পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাযজ্ঞ দিবস। এ দিনকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ‘গ’ শ্রেণির শহীদ সেনা দিবস করা হয়েছে। আমরা বলেছি, ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘ক’ শ্রেণীর জাতীয় শোক দিবস করতে হবে। কারণ ২০০৯ সালের এই দিনে ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তার ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ফ্যাসিস্ট খুনী হাসিনা সরকার, তাদের দোসর ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্টরা। আমরা জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাই আপনারা অবিলম্বে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকারী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন।”
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান শফিউর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ সবসময়ই ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ফ্যসিবাদ প্রতিষ্ঠায় তৎপর ছিল। তারা গণতন্ত্রের নাম করে বারবার ফ্যাসিবাদের দিকেই অগ্রসর হয়। এ ফ্যাসিবাদ আবার ফিরে আসবে, আবার একটা গণহত্যা চালাবে। এটা আমরা কখনোই হতে দেব না।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ষ দ ধ কর ভ স কর য পদয ত র র রহম ন আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষরে ব্যাপক সাড়া
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও দোসর দলগুলোর নিষিদ্ধ করার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও নাগরিকগণ অংশগ্রহণ করেছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান ছাত্রজনতার গণঅবস্থান কর্মসূচির একাদশতম দিনে এ গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
গণঅবস্থানের সংগঠকরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৩ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ও নাগরিকগণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। গণঅবস্থান চলাকালে প্রতিদিনই গণস্বাক্ষর গ্রহণ করা হবে। এছাড়া মঙ্গলবার থেকে জুলাই গণহত্যাসহ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সংঘটিত নির্যাতন-নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করতে গণএজাহার কর্মসূচি শুরু হবে।
সংগঠকরা আরো জানিয়েছেন, বিগত ১৬ বছরের নির্যাতন নিপীড়নের ভয়াবহতা অনুযায়ী ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে তেমন মামলা দায়ের হয়নি। এমনকি জুলাই বিপ্লবে ২ হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতা শহীদ হলেও সব খুনীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এজন্য মূলত পুলিশের হয়রানি, অনীহা ও সহযোগিতার অভাব রয়েছে।
আর অন্তর্বর্তী সরকারের দিক থেকেও মজলুমদের মামলা করাতে কোন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। গণএজাহার কর্মসূচির মাধ্যমে অচলায়তন ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজাহারের তথ্য সরকার ও আদালতের কাছে জমা দিয়ে বিচার নিশ্চিত করা হবে।
গণঅবস্থানে অংশ নিয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পরিচালনা করেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, গালিব ইহসান, সদস্য রাজু আহমেদ সদর , হাফেজ মোহাম্মদ শাকিল আহমেদ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান।
অন্যদের মাঝে আরো ছিলেন, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব ইশতিয়াক আহমেদ ইফাত, সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, হামিম হোসাইন শুভ, ঢাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়াত, সহকারী সদস্য সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম সাকিব, সদস্য সচিব মো. ফরহাদ আহমেদ আলী প্রমুখ।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আওয়ামী লীগ ও দলটির মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গণঅবস্থান কর্মসূচি চলছে। ছাত্রদলের ঢাবি শাখার দুই নেতা মো. ওমর ফারুক ও আবু সাঈদের অনশনের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে এতে সম্পৃক্ত হয় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জুলাই বিপ্লবের শহীদ রানা তালুকদারের পরিবার এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালানোর আহ্বান জানান। তার অনুরোধে অনশন ভেঙে লাগাতার গণঅবস্থান চলছে।
গণবক্তৃতা, আবৃত্তি, জুলাই গণহত্যার তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও র্যাপ সঙ্গীত পরিবেশনসহ নানা আয়োজনে চলছে এ কর্মসূচি। গণঅবস্থানের দশম দিন শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী