বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, শেখ হাসিনা তো পনেরো বছর ক্ষমতায় ছিল ভোট ছাড়া। আপনারাও থাকুন, আমরা না করবো না। কিন্তু মানুষ আপনাদের ছাড় দিবে না। আমরা গণতন্ত্র চাই, আমরা কথা বলতে চাই।  দরকার হলে বলে দেন বাংলাদেশে আর নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের মেট্রোহল মোড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি। 

তিনি বলেন,বিএনপিতে অসৎ লোকের কোন জায়গা নেই। ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক নেতা মামুনকে হত্যা করা হয়েছে গুলি করে কয়েকদিন আগে। আমি এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি। 

তিনি আরো বলেন,আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না। 

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা হচ্ছে। অনেকে বলে ওমুক ভাইকে সেখানে দেখতে চাই, ওখানে দেখতে চাই৷ বিএনপির কোন নেতাকর্মী যেন এসকল কথা না বলে। আমরা জেল খেটেছি, মামলা খেয়েছি এ নির্বাচনের জন্য নয়, জাতীয় নির্বাচনের জন্য। আমরা লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্য। আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য লড়াই করিনি।

তিনি বলেন, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছে এর পেছনে বিশাল ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তার একটাই কারণ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এটা হয়ে গেলে তাদের অনেক সুবিধা হয়। কারণ গ্রামে গঞ্জে অনেকের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে পায়ের তলায় মাটি আনতে চান।

আমরা জেনেছি বিডিআর হত্যা হয়েছিল বাইরের একদল প্রশিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক লোকদের দিয়ে। তারা এদেশে থাকে না। তারা বিদেশ থেকে এসে আমার দেশের ৫৭ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। তাদের বিচার হয়নি। যাদের বিচার হয়েছে তারা আসলে নির্দোষ। জেলে তাদের দেখে আমরা আমাদের অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। আমি তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই।

যারা জেলে আছে তাদের ব্যাপারে কোন কথা শুনতে চাই না। তারা বিগত পনেরো বছর ধরে জেলে পঁচে মরছে। তাদের কেন ছাড়া হচ্ছে না আমরা জানি না। আমরা চাই তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক। 

 

আমাদের দেশের অবস্থা খুব খারাপ। ডাকাতি, ছিনতাই বেড়ে গেছে৷ কারা করছে আপনারা জানেন। যারা বলে দিনের বেলা আমরা হাঁটতে না পারলে রাতে ওদের ঘুমোতে দিবো না। কারা বলে এ কথা দিল্লী বসে। যারা এদেশের সর্বনাশ করে ভারতে বসে আছে তারাই চক্রান্ত করছে কীভাবে এ দেশকে অশান্ত করা যায়।

এদেশের মানুষের ঐক্যকে আপনারা ভাঙতে পারবেন না। এদেশের মানুষ শান্তি চায়। মানুষ বাঁচতে চায়। আপনারা আমাদের রাতে শান্তিতে ঘুমোতে দিবেন না, লুটপাট করবেন, আগুন দিবেন বলেছেন আপনারা। চেষ্টা করে দেখুন, মানুষ আপনাদের এত সহজে ছেড়ে দিবে না।

এদেশের মানুষ এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা সবাই তাদের সমর্থন দিয়েছি। আমরা বলেছি এ সরকার ব্যার্থ হলে দেশ ব্যার্থ হয়ে যাবে। সুতরাং এ সরকারকে ব্যার্থ হতে দেয়া যাবে না। আমরা বলেছিলাম নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করবো, কিন্তু আজীবন তো অপেক্ষা করবো না।

একজন বলে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবেনা। আরেকজন বলে নির্বাচন যারা চায় তারা দেশের মঙ্গল চায় না। আরে সতেরো বছর কোথায় ছিলেন আপনি। সতেরো বছর আন্দোলন করেছি এই নির্বাচনের জন্য। জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই সরকার গঠন করবে। তারা ধরেই নিয়েছে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। কারণ বিএনপি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দল। এ জনপ্রিয়তাকে ধ্বংস করতে একশ্রেনীর লোক মাঠে নেমেছে।

বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে কতিপয় ব্যাক্তি বিএনপি আওয়ামী লীগের মত হয়ে গেছে বলে। বিএনপিকে ভারতের দালাল বলে। বিএনপি কখনও ভারতের তাঁবেদারি করেনি। ভারতের তাঁবেদারি করলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আজ জীবিত থাকতেন।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে নারায়ণগঞ্জে এসেছিলাম একটা মিটিংয়ে। সেদিন ভয়ে ভয়ে এসেছিলাম। তখন তো কারও জীবনের নিরাপত্তা ছিল না। আজ আমাকে সার্কিট হাউজে রেস্ট নিতে দিয়েছে। গত সতেরো বছর হোটেলে থাকতাম, ভয়ে ভয়ে থাকতাম। সেবার শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করেছিলাম। আজ মুক্ত অবস্থায় লাখো লোকের সামনে মিটিং করে গেলাম।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র ক ষমত য় আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিবিসির সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠাল তুরস্ক

যুক্তরাজ্যের সরকারি সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) সাংবাদিক মার্ক লোয়েনকে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্ক। তিনি দেশটিতে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করছিলেন। লোয়েনকে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে বিবিসি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে।

বিবিসি বলেছে, লোয়েনকে বুধবার ইস্তাম্বুলে গ্রেপ্তার করা হয়। চলমান বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে কয়েক দিন তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন। গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এক বিবৃতিতে বিবিসি বলেছে, ‘আজ (বুধবার) সকালে বিবিসি নিউজের প্রতিবেদক মার্ক লোয়েনকে ইস্তাম্বুল থেকে ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ। যে হোটেলে তিনি অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে আগের দিন তুলে এনে তাঁকে ১৭ ঘণ্টা আটক রাখা হয়। সাম্প্রতিক বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে মার্ক লোয়েন তুরস্কে অবস্থান করছিলেন। আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হওয়ায় তাঁকে তুরস্ক ছাড়তে বলা হয়।’

দেশজুড়ে চলা সাম্প্রতিক বিক্ষোভে ১ হাজার ৮৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তুরস্কের ১১ জন সাংবাদিকও রয়েছেন।

আরও পড়ুনতুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কে এই একরেম ইমামোগলু২৬ মার্চ ২০২৫

রোববার রাতে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ব্যাপকতা বাড়ে। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারীকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এর আগে ২০ মার্চ বিক্ষোভ দমনে পিপার স্প্রে ও জলকামান ব্যবহার করা হয়।

ইমামোগলুকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়। তাঁকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। গ্রেপ্তারের পর ইমামোগলুকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ