অনেকে মনে করেন, অন্তঃসত্ত্বা নারীর ব্যায়াম করা উচিত নয়। কিন্তু বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এটি মায়ের সুস্থতা বজায় রাখতে ও গর্ভাবস্থায় নানা জটিলতা কমাতে সাহায্য করে। তবে ব্যায়াম করতে হবে সঠিকভাবে ও সাবধানে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।

কোনো দিন যাঁরা ব্যায়াম করেননি, তাঁদের গর্ভধারণের আগে থেকেই ব্যায়াম শুরু করা উচিত, যেন সন্তানধারণ ও প্রসবে সুবিধা হয়।

নির্দেশিকা

প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৫ দিন সকালে বা বিকেলে, যখন নিজেকে বেশি সক্রিয় মনে হয়, ব্যায়াম করা ভালো।

সাধারণত প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম করা নিরাপদ ও কার্যকর। প্রথমে ১৫ মিনিট থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো যেতে পারে।

ব্যায়াম করার সময় শরীরের ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে তা লক্ষ্য রাখতে হবে।

প্রথম তিন মাস অতিরিক্ত চাপ এড়িয়ে চলা উচিত। এ সময় হালকা হাঁটাহাঁটি বা যোগ করা ভালো।

আরও পড়ুনযেভাবে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পাশে থাকার চেষ্টা করছি০৮ নভেম্বর ২০২২

নিরাপদ ও সহজ ব্যায়াম

হালকা হাঁটাহাঁটি পেশি শক্তিশালী করে ও হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। হাঁটার সময় চড়াই-উতরাই রাস্তা বা গর্তযুক্ত স্থান খেয়াল রাখতে হবে।

সাঁতার, অ্যাকোয়া অ্যারোবিকস, পুলওয়াক শরীরকে রিলাক্স করে ও কোমরের ওপর চাপ কমায়।

লেবার প্রস্তুতিতে স্কোয়াটসের চেয়ে ভালো ব্যায়াম নেই। এটি পেলভিসকে নমনীয় রাখে, মাংসপেশি মজবুত করে, কোমর, হাঁটু ও গোড়ালি শক্তিশালী রাখে।

হালকা অ্যারোবিকস হার্ট ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

ক্যার্ট-কাউ স্ট্রেচ পিঠের ব্যথা ও কোমরের চাপ কমায়।

ব্রিদিং এক্সারসাইজ লেবার পেইনের সহ্যক্ষমতা বাড়ায়।

আরও পড়ুনঅন্তঃসত্ত্বা নারীর দাঁতের চিকিৎসা২২ আগস্ট ২০২৩

উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় ব্যায়ামে শরীর মজবুত ও নমনীয় হয়, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, লেবার সহজ হয়, নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, ডেলিভারির পর তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে, মনোরোগের ঝুঁকি কমে, প্রসব–পরবর্তী ডিপ্রেশন কম হয়, ঘুমের গুণগত মান বাড়ে ও অনিদ্রার সমস্যা কম হয়।

সতর্কতা

উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগ, গর্ভপাতের ইতিহাস বা ঝুঁকি থাকলে গর্ভফুল যোনিপথে বা নিচে থাকলে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ইতিহাস থাকলে, অব্যাহত পেটব্যথা, অতীতে প্রসবের সমস্যা (প্রিটার্ম লেবার), শ্বাসকষ্ট, গর্ভে একাধিক সন্তান থাকলে ব্যায়াম করা যাবে না।

ব্যায়াম শুরুর আগে ওয়ার্মআপ, অন্তত পাঁচ মিনিট স্ট্রেচিং করা উচিত। অতিরিক্ত গরমে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ভারী ব্যায়াম, ওজন ওঠানো যাবে না। ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিতে হবে।

ডা.

সারাবান তহুরা, কনসালট্যান্ট, গাইনি অ্যান্ড অবস, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

আরও পড়ুনঅন্তঃসত্ত্বা নারী দীর্ঘ ভ্রমণে যেসব সতর্কতা মেনে চলবেন০৮ এপ্রিল ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব য য় ম কর

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় মধ্যরাতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর গোলাগুলি, গ্রেপ্তার ১১

খুলনায় সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পুলিশ ও যৌথবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১টার দিকে নগরীর বানরগাতী আরামবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩ পুলিশ ও নৌবাহিনীর এক সদস্যসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হন।

ঘটনাস্থল থেকে খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী শেখ পলাশসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৩টি পিস্তল, একটি কাটা বন্ধুকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার আজম খান জানান, আরামবাগ এলাকায় সন্ত্রাসীরা বৈঠক করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকার আবদুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ ও যৌথবাহিনী। যৌথবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এতে ৩ পুলিশ ও নৌবাহিনীর এক সদস্যও আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের খুলনা পুলিশ হাসপাতালে এবং আহত নৌবাহিনীর সদস্য খুলনা নেভি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী শেখ পলাশ, কালা লাভলু ওরফে রুবেল ইসলাম, আরিফুল, ফজলে রাব্বি রাজন, লিয়ন শরীফ,  ইমরানুজ্জামান, ইমরান, রিপন, সৈকত রহমান, মহিদুল ইসলাম ও গোলাম রব্বানীকে গ্রেপ্তার করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে ৩টি পিস্তল, একটি একনলা শর্টগান, একটি কাটা বন্ধুক, একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি চাপাতি, কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ৭টি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ।

নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অপারেশন অফিসার এস আই আবদুল হাই বলেন, সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির পেছনে এবং পাশের পুকুরে অনেকগুলো অস্ত্র ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা। যেগুলো উদ্ধারে সকালে পুকুরে তল্লাশি চালানো হবে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে অভিযান সমাপ্ত করা হয়। বাড়িটি ডিবি পুলিশের একটি দল ঘিরে রেখেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ