গর্ভাবস্থায় কি ব্যায়াম করা যাবে
Published: 25th, February 2025 GMT
অনেকে মনে করেন, অন্তঃসত্ত্বা নারীর ব্যায়াম করা উচিত নয়। কিন্তু বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এটি মায়ের সুস্থতা বজায় রাখতে ও গর্ভাবস্থায় নানা জটিলতা কমাতে সাহায্য করে। তবে ব্যায়াম করতে হবে সঠিকভাবে ও সাবধানে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।
কোনো দিন যাঁরা ব্যায়াম করেননি, তাঁদের গর্ভধারণের আগে থেকেই ব্যায়াম শুরু করা উচিত, যেন সন্তানধারণ ও প্রসবে সুবিধা হয়।
নির্দেশিকা
প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৫ দিন সকালে বা বিকেলে, যখন নিজেকে বেশি সক্রিয় মনে হয়, ব্যায়াম করা ভালো।
সাধারণত প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম করা নিরাপদ ও কার্যকর। প্রথমে ১৫ মিনিট থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো যেতে পারে।
ব্যায়াম করার সময় শরীরের ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রথম তিন মাস অতিরিক্ত চাপ এড়িয়ে চলা উচিত। এ সময় হালকা হাঁটাহাঁটি বা যোগ করা ভালো।
আরও পড়ুনযেভাবে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পাশে থাকার চেষ্টা করছি০৮ নভেম্বর ২০২২নিরাপদ ও সহজ ব্যায়াম
হালকা হাঁটাহাঁটি পেশি শক্তিশালী করে ও হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। হাঁটার সময় চড়াই-উতরাই রাস্তা বা গর্তযুক্ত স্থান খেয়াল রাখতে হবে।
সাঁতার, অ্যাকোয়া অ্যারোবিকস, পুলওয়াক শরীরকে রিলাক্স করে ও কোমরের ওপর চাপ কমায়।
লেবার প্রস্তুতিতে স্কোয়াটসের চেয়ে ভালো ব্যায়াম নেই। এটি পেলভিসকে নমনীয় রাখে, মাংসপেশি মজবুত করে, কোমর, হাঁটু ও গোড়ালি শক্তিশালী রাখে।
হালকা অ্যারোবিকস হার্ট ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
ক্যার্ট-কাউ স্ট্রেচ পিঠের ব্যথা ও কোমরের চাপ কমায়।
ব্রিদিং এক্সারসাইজ লেবার পেইনের সহ্যক্ষমতা বাড়ায়।
আরও পড়ুনঅন্তঃসত্ত্বা নারীর দাঁতের চিকিৎসা২২ আগস্ট ২০২৩উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ব্যায়ামে শরীর মজবুত ও নমনীয় হয়, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, লেবার সহজ হয়, নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, ডেলিভারির পর তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে, মনোরোগের ঝুঁকি কমে, প্রসব–পরবর্তী ডিপ্রেশন কম হয়, ঘুমের গুণগত মান বাড়ে ও অনিদ্রার সমস্যা কম হয়।
সতর্কতা
উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগ, গর্ভপাতের ইতিহাস বা ঝুঁকি থাকলে গর্ভফুল যোনিপথে বা নিচে থাকলে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ইতিহাস থাকলে, অব্যাহত পেটব্যথা, অতীতে প্রসবের সমস্যা (প্রিটার্ম লেবার), শ্বাসকষ্ট, গর্ভে একাধিক সন্তান থাকলে ব্যায়াম করা যাবে না।
ব্যায়াম শুরুর আগে ওয়ার্মআপ, অন্তত পাঁচ মিনিট স্ট্রেচিং করা উচিত। অতিরিক্ত গরমে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ভারী ব্যায়াম, ওজন ওঠানো যাবে না। ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিতে হবে।
ডা.
সারাবান তহুরা, কনসালট্যান্ট, গাইনি অ্যান্ড অবস, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব য য় ম কর
এছাড়াও পড়ুন:
করাচি-চট্টগ্রাম সরাসরি নৌযান চলাচলকে স্বাগত জানিয়েছে দুই পক্ষ: পাকিস্তান
বাংলাদেশের সঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার অভিন্ন অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সংযোগকে অগ্রাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ওই বৈঠকে দুই পক্ষ করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি নৌযান চলাচল শুরুর বিষয়টিকে স্বাগত জানায়। দুই পক্ষ সরাসরি আবার আকাশপথে যোগাযোগ চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করে। ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণে অগ্রগতির প্রতিও উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের বিষয়ে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব কথা বলেছে। আজ শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তান বলেছে, ‘১৫ বছর পর আবারও অনুষ্ঠিত হলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বৈঠকটি ঢাকায় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন বৈঠকে নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন।’
বৈঠকে উভয় দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়।
নিউইয়র্ক, কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দায় সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সব যোগাযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো দ্রুত চূড়ান্তকরণ, নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও সংযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। পাকিস্তান তাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে। পাকিস্তানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির প্রস্তাবে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছে এবং শিক্ষা খাতে আরও গভীর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
ক্রীড়া, গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিতে বড় পরিসরে সহায়তায় বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে উভয় দেশ সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দিয়েছে। এ সময় কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুসারে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে পাকিস্তান। এ ছাড়া বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানানো হয়েছে।