পশ্চিম তীরে হামলা জোরদার ইসরায়েলের
Published: 25th, February 2025 GMT
গাজার পর পশ্চিম তীরে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের দক্ষিণে অবস্থিত সিলওয়ান শহরের আল-বুস্তান পাড়ায় ইসরায়েলি বাহিনী দুটি ভ্রাম্যমাণ বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
ওয়াফা সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, তিন মাস আগে একই এলাকায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের বাড়ি ভেঙে ফেলার পর দুটি পরিবারের ১০ ফিলিস্তিনি ওই ভ্রাম্যমাণ বাড়িতে বাস করতেন। হেবরন ও নাবলুসে ইসরায়েলি অভিযানের ধারাবাহিকতার মধ্যে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, যেখানে আরও সামরিক যানবাহন মোতায়েন করা হয়েছে।
গাজার মতো সেখান থেকেও ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে ভেবে আতঙ্কে আছেন সেখানকার অধিবাসীরা। বর্তমানে কার্যত ফাঁকা করে ফেলা হয়েছে জেনিন শরণার্থী শিবির। এর বড় এলাকা বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। প্রশস্ত জনাকীর্ণ ওই এলাকার মধ্য দিয়ে তারা রাস্তা তৈরি করছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সেখানে দীর্ঘ মেয়াদে থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দীর্ঘ ১৫ মাসের যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল। তবে ওই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার এক দিন পরই পশ্চিম তীরে অপারেশন পরিচালনা শুরু করে ইসরায়েল।
এদিকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার মার্কিন পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে মিসর। দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তা আল সিসি মঙ্গলবার আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করা হলে তাতে ওই অঞ্চলের দেশগুলোর জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। তিনি এই হুমকি এড়ানোর পক্ষে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাবাসীকে নিয়ে যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, তাতে আরব বিশ্ব ক্ষুব্ধ।
ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস তাদের কাছে আটক চার জিম্মির মরদেহ অবিলম্বে ফেরত দিলে ৬০২ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। সোমবার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারীদের এমনটাই জানিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েল ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে তাঁবু এবং মোবাইল হোমের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ পরিস্থিতিতে ঠান্ডা আবহাওয়া ও গরম করার ব্যবস্থার অভাবে গাজায় এক রাতে কমপক্ষে ছয় শিশুর মৃত্যু হয়েছে। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত সুমাইয়ার বাড়িতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ
ছাত্রজনতার আন্দোলনে গত বছরের ২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান গার্মেন্টসকর্মী সুমাইয়ার আক্তার। তার পরিবার ও শিশু সুয়াইবার সঙ্গে ঈদুল ফিতরের দিন (সোমবার) দেখা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুলাহ আল আমিন, তামিম আহমেদ ও দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত জামিল। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শহীদ সুমাইয়ার মায়ের হাতে ঈদ উপহার ও আর্থ সহায়তা করেন।
সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্রজনতার গণআন্দোলনে ঘরের বরান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা গার্মেন্টর্কমী সুমাইয়া আক্তার (২০) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিলেন। মারা যাওয়ার সময় সুমাইয়া আড়াই মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রেখে যান। মা হারা সেই সুয়াইবার প্রথম ঈদ কাটলো আজ। এখন সুয়াইবার বয়স প্রায় ১০ মাস।
সুয়াইবার বাবা জাহিদও তার কোনো খোঁজখবর নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সুমাইয়ার পরিবার। এজন্যই মা-বাবাহীন সুয়াইবার ঈদ কাটছে নানি-খালা-মামার স্নেহ ভালবাসায়। দেশব্যাপী ছাত্র-জনতা যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কাঁচপুর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে বাবা মায়ের কাছে বেড়াতে এসেছিলেন সুমাইয়া তার শিশু সুয়াইবাকে নিয়ে। আন্দোলনের সময় বাড়ির চার তলায় শিশু সুয়াইবাকে ঘুম পাড়িয়ে ২০ জুলাই বিকেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনের দৃশ্য দেখছিলেন সুমাইয়া। হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া একটি গুলি বারান্দার গ্রিল দিয়ে ঢুকে তার মাথায় বিদ্ধ হয়। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন সুমাইয়া। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সড়কেই মৃত্যু হয় সুমাইয়ার।