নোয়াখালী সদর উপজেলায় চুরি করতে গেলে চোরকে ‘চিনে ফেলায়’ তাসলিমা বেগম রোজি (৬০) নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এ কথা স্বীকার করেছেন ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার মো. ওবায়দুল হক তারেক (৩৮)।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এক প্রেস কনফারেন্সে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো.

ইব্রাহীম। 

এর আগে, সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নে ৯নম্বর ওয়ার্ডের জালিয়াল গ্রামের আলী আহমেদ চাপরাশির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।    

নিহত রোজি ওই বাড়ির আমিন আলীর মেয়ে। তিনি স্বামী পরিত্যক্তা ও এক সন্তানের জননী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে বিনোদপুর ইউনিয়নের জালিয়াল গ্রামে রোজির ঘরে চুরি করতে ঢুকে একই গ্রামের তারেক। এ সময় রোজি দেখে ফেলায়, একা ঘরে তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ফেলে চলে যায় তারেক। শব্দ শুনে বাড়ির লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রোজিকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা চাপাতি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের ভাই আহসান উল্যাহ জসিম বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সুধারাম মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইব্রাহীম আরো বলেন, ‘‘মামলার একমাত্র আসামি জালিয়াল গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে তারেককে জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে আসামি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।’’ 
 

ঢাকা/সুজন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের বন্ধের পর টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু রোববার

ঈদ উপলক্ষে ৯ দিন বন্ধ থাকার পর ৬ এপ্রিল আবার শুরু হচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ও খাদ্য অধিদপ্তরের সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম।

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী দামে তেল, ডাল ও চিনি বিক্রি করে সরকারি সংস্থা টিসিবি। সংস্থাটি স্মার্ট পরিবার কার্ডের মাধ্যমে পরিবেশক বা সরবরাহকারীর দোকানের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রি করে। আবার স্মার্ট কার্ড ছাড়া সর্বসাধারণের জন্য ট্রাকে করেও তেল, ডাল, চিনি বিক্রি করে সংস্থাটি।

অন্যদিকে খোলাবাজারে বিক্রি বা ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ট্রাকে করে সাশ্রয়ী দামে চাল ও আটা বিক্রি করে খাদ্য অধিদপ্তর। ট্রাকের পাশাপাশি নির্ধারিত পরিবেশকের দোকানের মাধ্যমেও চাল-আটা বিক্রি করে সংস্থাটি।

সরকারি এই দুটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, ঈদের আগে সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ পর্যন্ত সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চালিয়েছিলেন তাঁরা। সরকারি ছুটি শেষে ৬ এপ্রিল আবার এ কার্যক্রম শুরু হবে।

বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ৬০ লাখ পরিবারের মধ্যে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে পণ্য বিক্রি করে টিসিবি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোট এক কোটি পরিবার কার্ডের বিপরীতে এ পণ্য বিক্রি করা হতো। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে এসব কার্ডের মধ্যে একটি বড় অংশ অযোগ্য বা ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত করে। এ কারণে সরকার প্রায় ৪৩ লাখ পরিবার কার্ড বাতিল করে। পাশাপাশি নতুন করে উপকারভোগী চিহ্নিত করে নতুন স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রমও চলছে।

অন্যদিকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ট্রাকে করেও পণ্য বিক্রি করে টিসিবি। প্রতিদিন রাজধানীর ৫০টি স্থানে, চট্টগ্রাম নগরীর ২০টি স্থানে এবং বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি কিছু শ্রমঘন জেলায় ট্রাকে পণ্য বিক্রির এ কার্যক্রম পরিচালনা করে সংস্থাটি। টিসিবির প্রতিটি ট্রাকে ২০০ জনের পণ্য থাকে। যদিও টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ভিড় করেন প্রতিদিন।

সংস্থাটি জানায়, টিসিবির ট্রাক থেকে যেকোনো ভোক্তা লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে পারেন। টিসিবির ট্রাক থেকে একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি কিনতে পারেন। এর মধ্যে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা ও চিনি ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। আর রমজান উপলক্ষে গত মাসে ছোলা ও খেজুরও বিক্রি করা হয়েছিল টিসিবির ট্রাকে।

টিসিবির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ৬ এপ্রিল থেকে স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে টিসিবির বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হবে। তবে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি চালু হবে আরও কয়েক দিন পর। কারণ, এ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে পরে জানানো হবে।

এদিকে খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ওএমএস ট্রাকের মাধ্যমে চাল ও আটা বিক্রি করা হয়। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগরে ৭০টি স্থানে ট্রাক সেলের মাধ্যমে এবং প্রায় দেড় শ পরিবেশকের দোকানের মাধ্যমে চাল-আটা বিক্রি করা হয়। ট্রাক ও পরিবেশকের দোকান থেকে একজন ভোক্তা পাঁচ কেজি চাল ও দুই কেজি আটা কেনার সুযোগ পান।

রাজধানীতে ওএমএসের পণ্য বিক্রির কাজটি করে থাকে খাদ্য অধিদপ্তরের সংস্থা ঢাকা রেশনিং। ঢাকা রেশনিংয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক শাব্বীর আহমেদ মুরাদ বলেন, ‘৬ এপ্রিল আমাদের সব ধরনের পণ্য বিক্রি কার্যক্রম আবার শুরু হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ