বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কু‌ষ্টিয়ার কুমারখালী উপ‌জেলা শাখার সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আলীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন এবং তার লোকজনদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আফজাল। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে কুমারখালী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের এলেঙ্গিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। 

সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আলী বলেন, “মঙ্গলবার সকালের দিকে থানার একটি বিষয় নিয়ে কুমারখালী উপজেলা জামায়াতের আমির আফজাল হোসাইনের সাথে ফোনে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর ১২টার দিকে আফজাল হোসাইনের নেতৃত্বে ২০০ থেকে ৩০০ মানুষ আমার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। আমি এবং আমার বাবা সেসময় বাসায় ছিলাম না। হামলাকারিরা টিভি, ফ্রিজ, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে। এসময় তারা নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে গেছে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এই তাণ্ডব চালিয়েছে তারা। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।”

এদিকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে কুমারখালী উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, “আলী ও তার বাবার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। কুমারখালীতে তারা বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সাথে যুক্ত। তারা চাঁদাবাজি করে, মানুষকে মারপিট করে ও হুমকিধামকি দেন। এতে বিক্ষিপ্ত জনতা তার বাড়ি হামলা ভাঙচুর করেছে। এর সাথে কোনো সংগঠন জড়িত না। আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বিক্ষুব্ধ জনতাকে আমরা কীভাবে ঠেকাব? তারা অতিষ্ঠ হয়ে তার বাড়ি ভাঙচুর করেছে। এর সাথে জামায়াতের নেতা বা জামায়াত কোনভাবেই সম্পৃক্ত না। ঘটনার সময় আমি আমার অফিসে ছিলাম।” 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখার সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আলীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দেখা হোক। একই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।”

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

সোলাইমান শেখ বলেন, “হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম গেছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র কর ছ এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

সড়ক অবরোধমুক্ত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে সেনাবাহিনী

সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করলে দেশের অর্থনীতিসহ সব সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সড়ক অবরোধমুক্ত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে থাকে সেনাবাহিনী। যত কম সময়ের মধ্যে মুক্ত করা যায়– এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিগত সময়ে শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। ৩১ বার বিভিন্ন মূল সড়ককে অবরোধ থেকে অবমুক্ত করেছে।  

কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৮২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। গত দুই মাসে নিয়ন্ত্রণ করেছে ২৩২টি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ৩৭টি, সরকারি সংস্থা ও অফিস-সংক্রান্ত ২৪টি, রাজনৈতিক কোন্দল ৭৬টি এবং অন্য ঘটনা ৯৫টি। 

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ বিদেশি কূটনীতিক ও দূতাবাসগুলোর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্বও সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগে সেনাবাহিনী কোনো বাধা পাচ্ছে না। এই ক্ষমতা যেখানে যতটুকু ব্যবহারের দরকার, সেটা করা হচ্ছে। অপরাধী গ্রেপ্তারের পর অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের পর বিচারকার্যে সেনাবাহিনীর কিছু করার থাকে না। 

গুজবে সেনাবাহিনী বিচলিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী একতাবদ্ধ হয়ে সরকারের নির্দেশে দেশ-জাতির পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সততা, ন্যায়নীতি, প্রত্যয় ও সহনশীলতার সঙ্গে এটি করা হচ্ছে। 

শফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগেও দেখেছেন মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে দীর্ঘ মিছিলে কালো পতাকাধারীদের রহিত করেছে সেনাবাহিনী। কালো পতাকাধারী হলেই জঙ্গি, এর প্রমাণ পাইনি। তবে এ ব্যাপারে সেনাবাহিনী সোচ্চার আছে।  

সেনাপ্রধানের রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশে সেনাবাহিনী প্রধানের সফর একটি ‘রুটিন অ্যাফেয়ার’। সেখানে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে। বেশ কিছু মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রি পরিদর্শন করেছেন। এতে আমাদের সামরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রগাঢ় হবে বলে বিশ্বাস করি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ