সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী, ভাতিজা ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট দুজনের নামে থাকা মোট ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরণ ও তাঁরস্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে ৩১৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ১ জানুয়ারি মামলা করে দুদক।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যে ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে, তার মধ্যে আনিসুল হকের নামে রয়েছে ১৭টি ব্যাংক হিসাব। এর বাইরে আনিসুল হকের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও ভাতিজার নামে আরও পাঁচটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া আনিসুল হকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আরও দুই ব্যক্তির নামে পাঁচটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে।

আনিসুল হককে গত ২০ জানুয়ারি দুদকের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে আনিসুল হক গ্রেপ্তার হন।

আরও পড়ুনসাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও উপদেষ্টা সালমান গ্রেপ্তার১৩ আগস্ট ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সচিবালয়ে বৈঠকে সন্তুষ্ট নন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন চলবে

অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে সন্তুষ্ট নন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তাই আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে পরবর্তী কর্মসূচি আরো কঠোর করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রেহানা ইয়াসমিনের সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে এ কথা জানান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, “আজ আন্দোলন শিথিলভাবে চলছে। পরবর্তীতে কোন প্রক্রিয়ায় আন্দোলন হবে সেটা জানানো হবে।” তবে জনদুর্ভোগ করে আন্দোলন না করার কথা জানান তারা। দাবি অযৌক্তিক নয় এ কথা জানিয়ে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা বলেন, “এই দাবি দীর্ঘদিনের।”

আরো পড়ুন:

খুলনায় রেলপথ অবরোধ করে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সুনামগঞ্জ-সিলেট
মহাসড়ক অবরোধ করে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, যান চলাচল বন্ধ

তারা বলেন, “আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আজ শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের বৈঠক করার জন্য ডেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু একজন অতিরিক্ত সচিব বৈঠক করেছেন। আমাদের দাবি-দাওয়া লিখে নিয়ে সচিবের কাছে উপস্থাপন করবেন, তারপর উপদেষ্টার কাছে দেবেন। আমরা চেয়েছিলাম উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।”

তারা আরো বলেন, “আমাদের আন্দোলন বর্তমানে শিথিল আছে। কিন্তু আমরা প্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন।

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে।

অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে-কারিগরি (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু ও শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ঢাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারা দেশে জেলায় জেলায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ